হালী মোস্তফার স্থাপত্য ভাবনা তাঁর পঞ্চম বই। এই বইটি ও সাজ্জাদ ইমরানুল ইসলামের সম্পাদনায় সম্ভবত আগামী একুশে বই মেলায় জাহাঙ্গীর আলম সুজনের প্রকাশনা সংস্থা “ছায়াবীথি” থেকে প্রকাশিত হবে। হালী মোস্তফা যদিও সাহিত্যের বিভিন্ন শাখায় অবলীলায় বিচরণ করেছেন তবুও তিনি মূলত ছিলেন একজন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত পেশাদার স্থপতি। বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে তাঁর উল্লেখ্যযোগ্য পরিমান স্থাপত্য কর্ম ছড়িয়ে আছে। তাঁর স্থাপত্য সহজ,সরল, বাহুল্যহীন এবং প্রকৃতির মেলবন্ধনে সৃষ্ট। নির্মাণ সামগ্রীর যথাযথ ব্যবহার ও নান্দনিক বহি:প্রকাশ ছিল তাঁর স্থাপত্যরীতির মৌলিক বৈশিষ্ট। বাংলাদেশের নৈস্বর্গ ও জলবায়ু অনুধাবন করে আর্থ-সামাজিক বাস্তবতার প্রেক্ষিতে একটি আধুনিক ও রুচিশীল স্থাপত্য রচনাই ছিল তাঁর আরাধ্য। বিশিষ্ট রবীন্দ্র সংগীত শিল্পী ও শিক্ষাগুরু কলিম শরাফীর শান্তিনগরে অবস্থিত আবাসিক বাড়িটি হালী মোস্তফা ডিজাইন করেন। কলিম শরাফী স্থপতি হালী মোস্তফার প্রশংসা করতেন এই কারণে যে, বাড়িটিতে যেমন ছিল আলো-বাতাসের প্রাচূর্য্য তেমিন ছিল প্রকৃতির সাথে মেলবন্ধন। প্রকৌশলী আবু মোহাম্মদ নূর সোবহানের কলাবাগানস্থ বাড়িটির নক্সা ও তৈরী করেন হালী মোস্তফা। লাল ইটের তৈরী বাড়িটির স্থাপত্য আধুনিক বাঙ্গালীয়ানার একটি উৎকৃষ্ট উদাহরণ। “হালী মোস্তফার স্থাপত্য ভাবনা” বইটিতে স্থাপত্য সম্পর্কিত নানা বিষয়ে হালী মোস্তফা তাঁর নিজস্ব অভিজ্ঞতা প্রসূত চিন্তা- ভাবনা ও ধ্যান-ধারনা উপস্থাপন করেছেন। এই বইটিতে প্রায় ৪০টি প্রবন্ধ সংকলিত হয়েছে। প্রবন্ধগুলির বেশীর ভাগই অদ্যাবধি অপ্রকাশিত। প্রবন্ধগুলিতে তিনি বাংলাদেশের স্থাপত্য নিয়ে যে সদাজাগ্রত প্রহরীর মত পর্যবেক্ষণে রত ছিলেন তা সহজেই বোধগম্য হয়। তাঁর পর্যবেক্ষণে উঠে এসেছে ঢাকা শহরের আবাসন, বস্তিসমস্যা ও নগরায়ন প্রক্রিয়া। তাঁর লেখায় উদ্ভাসিত হয়েছে মানুষের জন্য স্থাপত্য, সমকালীন স্থপাত্য চিন্তা, উচূঁ ভবনের ভবিষ্যত, দেশজ স্থাপত্য ভাবনা, স্থাপত্য শিল্পের আন্তর্জাতিকতা, ভার্ষ্কয্যশিল্পের সমস্যা, বাংলার মুসলিম স্থাপত্য, জাতীয় যাদুঘরের স্থাপত্য নিয়ে আক্ষেপ ইত্যাদি। এছাড়াও আছে স্থাপত্য নিয়ে লেখা বিভিন্ন পুস্তকের সমালোচনা। সামগ্রীক ভাবে বইটিতে রয়েছে বাংলাদেশে ১৯৬০ এর দশক থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত স্থাপত্যশিল্প ও পেশার বিকাশের আদ্যপান্ত। আশাকরি বইটি পেশাদার স্থপতি, স্থাপত্যের ছাত্র-ছাত্রী ও আপামর জনসাধরণের কাছে গুরুত্ব বহন করবে। br সামসুল ওয়ারেসbr স্থপতি হালী মোস্তফার স্থাপত্য ভাবনা তাঁর পঞ্চম বই। এই বইটি ও সাজ্জাদ ইমরানুল ইসলামের সম্পাদনায় সম্ভবত আগামী একুশে বই মেলায় জাহাঙ্গীর আলম সুজনের প্রকাশনা সংস্থা “ছায়াবীথি” থেকে প্রকাশিত হবে। হালী মোস্তফা যদিও সাহিত্যের বিভিন্ন শাখায় অবলীলায় বিচরণ করেছেন তবুও তিনি মূলত ছিলেন একজন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত পেশাদার স্থপতি। বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে তাঁর উল্লেখ্যযোগ্য পরিমান স্থাপত্য কর্ম ছড়িয়ে আছে। তাঁর স্থাপত্য সহজ,সরল, বাহুল্যহীন এবং প্রকৃতির মেলবন্ধনে সৃষ্ট। নির্মাণ সামগ্রীর যথাযথ ব্যবহার ও নান্দনিক বহি:প্রকাশ ছিল তাঁর স্থাপত্যরীতির মৌলিক বৈশিষ্ট। বাংলাদেশের নৈস্বর্গ ও জলবায়ু অনুধাবন করে আর্থ-সামাজিক বাস্তবতার প্রেক্ষিতে একটি আধুনিক ও রুচিশীল স্থাপত্য রচনাই ছিল তাঁর আরাধ্য। বিশিষ্ট রবীন্দ্র সংগীত শিল্পী ও শিক্ষাগুরু কলিম শরাফীর শান্তিনগরে অবস্থিত আবাসিক বাড়িটি হালী মোস্তফা ডিজাইন করেন। কলিম শরাফী স্থপতি হালী মোস্তফার প্রশংসা করতেন এই কারণে যে, বাড়িটিতে যেমন ছিল আলো-বাতাসের প্রাচূর্য্য তেমিন ছিল প্রকৃতির সাথে মেলবন্ধন। প্রকৌশলী আবু মোহাম্মদ নূর সোবহানের কলাবাগানস্থ বাড়িটির নক্সা ও তৈরী করেন হালী মোস্তফা। লাল ইটের তৈরী বাড়িটির স্থাপত্য আধুনিক বাঙ্গালীয়ানার একটি উৎকৃষ্ট উদাহরণ। “হালী মোস্তফার স্থাপত্য ভাবনা” বইটিতে স্থাপত্য সম্পর্কিত নানা বিষয়ে হালী মোস্তফা তাঁর নিজস্ব অভিজ্ঞতা প্রসূত চিন্তা- ভাবনা ও ধ্যান-ধারনা উপস্থাপন করেছেন। এই বইটিতে প্রায় ৪০টি প্রবন্ধ সংকলিত হয়েছে। প্রবন্ধগুলির বেশীর ভাগই অদ্যাবধি অপ্রকাশিত। প্রবন্ধগুলিতে তিনি বাংলাদেশের স্থাপত্য নিয়ে যে সদাজাগ্রত প্রহরীর মত পর্যবেক্ষণে রত ছিলেন তা সহজেই বোধগম্য হয়। তাঁর পর্যবেক্ষণে উঠে এসেছে ঢাকা শহরের আবাসন, বস্তিসমস্যা ও নগরায়ন প্রক্রিয়া। তাঁর লেখায় উদ্ভাসিত হয়েছে মানুষের জন্য স্থাপত্য, সমকালীন স্থপাত্য চিন্তা, উচূঁ ভবনের ভবিষ্যত, দেশজ স্থাপত্য ভাবনা, স্থাপত্য শিল্পের আন্তর্জাতিকতা, ভার্ষ্কয্যশিল্পের সমস্যা, বাংলার মুসলিম স্থাপত্য, জাতীয় যাদুঘরের স্থাপত্য নিয়ে আক্ষেপ ইত্যাদি। এছাড়াও আছে স্থাপত্য নিয়ে লেখা বিভিন্ন পুস্তকের সমালোচনা। সামগ্রীক ভাবে বইটিতে রয়েছে বাংলাদেশে ১৯৬০ এর দশক থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত স্থাপত্যশিল্প ও পেশার বিকাশের আদ্যপান্ত। আশাকরি বইটি পেশাদার স্থপতি, স্থাপত্যের ছাত্র-ছাত্রী ও আপামর জনসাধরণের কাছে গুরুত্ব বহন করবে। br সামসুল ওয়ারেসbr স্থপতি
মোস্তফা হারুন কুদ্দুস সংক্ষেপে হালী মোস্তফা ছিলেন মোহহীন, প্রাণবন্ত, বাস্তববাদী অথচ রোমান্টিক এক সৃজনশীল মানুষ। প্রাণবন্ত : কারণ তিনি ছিলেন আড্ডাপ্রিয় এবং বন্ধু-বৎসল। তার কর্মস্থলের (১৩৭ জাহানারা গার্ডেন, গ্রীন রোড, ঢাকা) কক্ষে সন্ধ্যার পর প্রায়ই আড্ডা বসতো। সেসব আড্ডায় আমি, স্থপতি রবিউল হুসাইন, স্থপতি মোঃ আবদুর রশীদ ও স্থপতি বদরুল হায়দার উপস্থিত থেকেছি। এ ছাড়া ও আড্ডায় থাকতেন শিল্পী কাইয়ুম চৌধুরী, কবি হাবিবুল্লাহ সিরাজী, নাট্যশিল্পী পিযুষ বন্দ্যোপাধ্যায়, কবি শিহাব সরকার, সম্পাদক-সাহিত্যিক আবুল হাসনাত, প্রমুখ। আড্ডার ফাঁকে ফাঁকে থাকতো হালী মোস্তফার সামাজিক ও রাজনৈতিক বুদ্ধিদীপ্ত আলোচনা। সৃষ্টিশীল : কারণ হালী মোস্তফা ছিলেন একাধারে স্থপতি, কবি, গল্পকার, বিদেশী সাহিত্যের অনুবাদক, ভ্রমণ কাহিনী লেখক ও প্রবন্ধাকার। জীবনকে হালী মোস্তফা ভালোবেসেছিলেন। তবে জীবনকে টেনে-হেঁচড়ে বুড়ো বয়স পর্যন্ত নিয়ে যেতে তাঁর অনীহা ছিল। জীবন তাঁর কাছে অর্থহীন মনে হয়েছে। তাঁর কবিতায় মৃত্যু বারবার অনুরণিত হয়েছে। হালী মোস্তফা তাঁর স্ত্রী হাসিনা বানুকে প্রায়ই বলতেন যে, তিনি ২০০০ সালের পরে আর বাঁচতে চাননা। তিনি তাঁর কথা রেখেছিলেন। ২০০০ সালের ২৬ অক্টোবর তিনি বিদেশের এক হাসপাতালে মাত্র ৫৩ বছর বয়সে মারা যান। তাঁর লিভার শিরোসিস জনিত সমস্যা ছিল। হালী মোস্তফা আমার চেয়ে বছর খানেক ছোট ছিলেন। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আমি স্থাপত্যবিদ্যায় স্নাতক ডিগ্রী লাভ করি ১৯৬৮ সালে আর হালী ১৯৭০-এ। হালী আমাদের খুব কাছের লোক ছিলেন। তাঁর অকাল মৃত্যু আমার হৃদয়ে যে ক্ষত সৃষ্টি করেছিল তা সারাবার নয়। হালী মোস্তফা ছিলেন নিভৃতচারী ও প্রচার বিমুখ। তিনি লিখেছেন প্রচুর কবিতা, গল্প ও স্থাপত্য বিষয়ক প্রবন্ধ কিন্তু তার খুব কমই পত্র-পত্রিকায় ছাপিয়েছেন। তাঁর লেখা পা-ুলিপির বেশীর ভাগই অপ্রকাশিত অবস্থায় বাক্সবন্দী ছিল। তিনি ছাত্রাবস্থা থেকেই পত্র-পত্রিকায় প্রবন্ধ ও কলাম লিখতেন। তাঁর পিতা মোঃ আবদুল কুদ্দুস ছিলেন শিক্ষাবিদ ও গবেষক। একুশে পদকপ্রাপ্ত পিতার পরোক্ষ ও প্রত্যক্ষ অনুপ্রেরণাতেই সাহিত্যচর্চায় তাঁর আসক্তি জন্মে। হালীর মৃত্যুর বহু বছর পর তাঁর অপ্রকাশিত লেখার ভান্ডার থেকে তাঁর স্ত্রী হাসিনা বানু ও পুত্র তা’সিন মুহ্তাদি দিব্যর সার্বিক ব্যবস্থাপনায় নিম্নে উল্লেখিত চারটি বই প্রকাশিত হয় : ১। বাংলাদেশের স্থাপত্য জগৎ (ফেব্রুয়ারি ২০১৮) ২। হালী মোস্তফার কবিতা সমগ্র (ফেব্রুয়ারি ২০১৯) ৩। হালী মোস্তফার গল্প সমগ্র (ফেব্রুয়ারি ২০২০) ৪। ভূস্বর্গের স্বর্ণসাহিত্য ( মার্চ ২০২১) প্রথম বইটির সম্পাদনায় ছিলেন মামুন সিদ্দিকী এবং শেষ তিনটি বই সম্পাদনা করেন হালী মোস্তফার ভাগ্নে বিশিষ্ট সাহিত্যিক মোঃ সাজ্জাদ ইমরানুল ইসলাম প্রধান।