ফ্ল্যাপের লেখা: জামদানি শাড়ি মানে বারো হাত বছরের শাড়িই শুধু নয়, এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে বাংলাদেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য, অহংকার ও তাঁতের শিল্পিত ক্যানভাস। মুঘল রাজপরিবারের প্রিয়তম জামদানি আজও তার মহিমা বজায় রেখে সগৌরবে বিরাজমান। জামদানি একটি ফারসি শব্দ এবং এর অর্থ বুটিদার কাপড় (কোন কোন ইতিহাসবিদ মনে করেন)। প্রমাণ পাওয়া যায়, জামদানির বুনন পৃথিবীর অন্য কোনো তাঁতিদের পক্ষে সম্ভব নয়। এমন কি এক সময় ঢাকার কয়েকটি উপজেলা ছাড়া বাংলাদেশের অন্যান্য জায়গায়ও বোনা সম্ভব হত না এই শাড়ি। আদিকাল থেকে ঢাকার কয়েকটি উপজেলায় এই শাড়ির গুণী তাঁতিদের বংশানুক্রমিক বসবাস। তাই জামদানি একান্তই ঢাকার, একান্তই বাংলাদেশের। ঐতিহ্যবাহী নকশা ও বুননের কারণে ২০১৬ সালে জামদানিকে বাংলাদেশের ভৌগোলিক নির্দেশক জিআই (geographical indication) পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি দেয় ইউনেস্কো। এই স্বীকৃতিতে অবশ্য বাংলাদেশের মহিমান্বিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনার উদ্যোগ প্রশংসনীয়। তিনি জামদানি শাড়িকে আন্তর্জাতিক মহলে নতুন করে পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন। জামদানি শাড়ি তিনি শুধু অঙ্গে ধারণ করেন তাই-ই নয়। তিনি এই শাড়িকে নিয়ে গেছেন এক অনন্য উচ্চতায়।
মিনার মাসুদ পড়াশোনা করেছেন মাল্টিমিডিয়া সিস্টেমস এন্ড এ্যাপ্লিকেশন নিয়ে। ছাত্র জীবন থেকেই যুক্ত আছেন লেখালেখি আর সংবাদ মাধ্যমের সাথে, গবেষণা করছেন মুক্তিযুদ্ধের বিষয় ‘গণকবর, বধ্যভূমি ও প্রতিরোধ যুদ্ধ নিয়ে কাজ করেন ভিজুয়্যাল মিডিয়া ও মিডিয়া ম্যাটেরিয়াল ডেভলপমেন্টে। ভার্চুয়াল রিয়ালিটি এবং প্রত্নতত্ত্ব নিয়ে গবেষণার পাশাপাশি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে খন্ডকালীন শিক্ষকতা করছেন। আর্কিওলজিতে টেকনোলজি হচ্ছে তার বর্তমান প্রকল্প। ভিআর প্রযুক্তি ব্যবহার করে প্রত্নতাত্ত্বিক প্রদর্শণীকে তিনি প্রাধান্য দিয়েছেন পর্যটক ও শিক্ষার্থীদের জন্য। তার প্রত্নতাত্ত্বিক থ্রি-ডি কাজের মধ্যে রয়েছে খলিফাতাবাদ, সোমপুরা মহাবিহারা, কান্তজিউর মন্দির, লালবাগের কেল্লা, পানাম নগরী, মহাস্থান গড়, উয়ারি বটেশ্বর, নাটেশ্বর, বড় কাটারা, ছোট কাটারা, ভিতর গড় ইত্যাদি। প্রত্নতত্ত্ব বিষয়ে ইতোমধ্যে তার দুটি রচনা বিদেশের জার্নালে প্রকাশ ও ব্যপক প্রশংসিত হয়েছে। ইতোমধ্যে তার প্রকাশিত বই সমূহের মধ্যে- মুক্তিযুদ্ধ কেন অনিবার্য ছিল, মহানায়কের মহাকাব্য, কেন তিনি জাতির পিতা, মমতাময়ী, ঝালকাঠিতে বঙ্গবন্ধু, শ্যামনগরের জয়ীতা, প্রত্নতত্ত্বের শিশুপাঠ, পতিতা চেনা যায়-পতিত চেনা দায়, ব্র্যাক মোহনায় কিছুটা সময়, এক পুলিশের রাত-দিন, প্রসবিনী-১, ও বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ বাংলাদেশের জামদানি উল্লেখযোগ্য।