ভমিকা শত সহস্র বছরের বাংলা এবং বাঙালির মুক্তি ও স্বাধীনতার আকাক্সক্ষাকে যিনি বাস্তবে রূপ দিয়েছেন এবং তার জন্য নিজের ও পরিবারের জীবন উৎসর্গ করেছেন তিনি আর কেউ নন, তিনি আমাদের আত্মার বন্ধনে আবদ্ধ মহান নেতা হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। আমাদের স্বাধীনতার স্থপতি সেই মহান নেতার জন্মশতবার্ষিকীকে স্মরণীয়-বরণীয় করে রাখতে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার ও সরকারপ্রধান বঙ্গবন্ধুকন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনের জন্য ২০২১ সালকে ‘মুজিববর্ষ’ হিসেবে ঘোষণা করেন। গোটা জাতি মুজিববর্ষ যথাযথ মর্যাদায় পালন করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হলেও মহামারি করোনা পরিস্থিতিতে সারা দুনিয়া কার্যত অচল হয়ে পড়লে বাংলাদেশেও এর প্রভাব পড়ে। এর ফলে দেশের সকল মানুষের জীবন ও জীবিকা চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তবুও বঙ্গবন্ধুকন্যার দৃঢ় মনোবল ও দক্ষ নেতৃত্বে বাংলাদেশের মানুষ নতুন আশা নিয়ে সকল পর্যায়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে কঠিন সংগ্রাম করে যাচ্ছে। তাই সকল দিক বিবেচনা করে সরকার ২০২২ সালের ১৭ মার্চ পর্যন্ত মুজিববর্ষের কর্মসূচি বৃদ্ধি করে। এমন বাস্তবতায় এবার আমাদের প্রাণের বইমেলাও ১৭ই মার্চ পর্যন্ত করা হয়। বঙ্গবন্ধু বাঙালির স্বাধীনতার অবিসংবাদিত নেতা হিসেবে আমাদের অস্তিত্বের সবটুকু জুড়ে আছেন। বঙ্গবন্ধু আমার ভালোবাসার নাম। আমি কবিতায় বঙ্গবন্ধুর কথা বলতে চাই। আর সে কারণে মহান নেতা বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে মুজিববর্ষে আমি অমর একুশে বইমেলায় আমার কাব্য গ্রন্থ ‘বঙ্গবন্ধু’ নিজের মৌলিক রচনা হিসেবে বাঙালির আবেগ ও ইতিহাস-ঘনিষ্ঠ মুজিববর্ষে অতি নগণ্য একজন কবিতার পূজারি হয়ে যুক্ত থেকে গৌরবান্বিত বোধে আপ্লুত হয়ে নিজেকে ধন্য মনে করার প্রয়াসে ঋদ্ধ হতে চাই প্রিয় বন্ধুগণ। আমার এই কাব্যগ্রন্থ প্রকাশ করতে কালবিলম্ব না করে সকল ঝুঁকি, দায়িত্ব কাঁধে নিয়েছেন প্রথিতযশা প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান ‘সাহিত্যদেশ’-এর কর্ণধার শফিক সাইফুল। আমি তার নিকট কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। ‘বঙ্গবন্ধু’ কাব্যগ্রন্থ প্রকাশের পেছনে সার্বিক শ্রম ও সহযোগিতা করে কৃতজ্ঞ করেছেন বঙ্গবন্ধু অন্তঃপ্রাণ ছাত্রলীগের সাবেক নেত্রী ও স্বাধীনতা দেশজ চিকিৎসা পরিষদের মেধাবী নেত্রী ডা. নাজমা খন্দকার। আইটি ও কম্পিউটারে সহযোগিতা করায় রাহিম সিকদার হিতুকে ধন্যবাদ ও ভালোবাসা জানাচ্ছি। সকল শুভানুধ্যায়ীকে শুভেচ্ছা ও ভালোবাসা। মুজিববর্ষ সফল হোক। রাজ্জাক সিকদার অমর একুশে বইমেলা ২০২২
রাজ্জাক সিকদার মূলত দ্রোহ, প্রেম ও প্রতিবাদের কবি। মানবজীবনের ব্যাপ্ত ক্যানভাসে তিনি প্রকৃতি, প্রেম, নিসর্গ ও মানুষের সংগ্রামমুখর যাপিত জীবন নিয়ে লিখতে ভালোবাসেন। প্রেম ও প্রতিবাদের উপজীবতায় লিখে যান সব অসাধারণ কবিতা। গণতন্ত্রের খোলসের ভেতর ঘাপটি মেরে থাকা হায়েনা শ্বাপদের মূল জ্বলে চোখ, বিষাক্ত নখদন্তের ভয়াল থাবায় ক্ষতবিক্ষত রক্তাক্ত জনপদের বিধ্বস্ত করুণ চিত্র উন্মোচিত তার কবিতার বিস্তর পটভূমিতে। সাম্যবাদ, মানবতাবাদ, মানবাধিকার রক্ষার প্রত্যয়ের পাশাপাশি নারী ও শিশু নির্যাতনের বিরুদ্ধে বজ্র কঠিন সোচ্চার তার লেখনী। বর্ণবাদবিরোধী সংগ্রামী চেতনা, বিশ্বশান্তি, বিশ্বভ্রাতৃত্ব বোধে প্রাণিত কবি সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে প্রক্ষিপ্ত শব্দ ও বাণীতে শাণিত কবিতা নির্মাণে সাহসী, সিদ্ধহস্ত, কালাতিক্রম্য আধুনিক। লেখকের স্বাধীনতা হরণকারী যেকোনো পদক্ষেপে তীব্র ক্ষোভ করে তার লেখায়। প্রতিবাদে গর্জে ওঠেন বারবার ফ্যাসিবাদ, আধিপত্যবাদ, ধর্মান্ধতা, মৌলবাদ, জঙ্গিবাদ, সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে আজীবন সংগ্রামী কবির হৃদয়ে মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা, ধর্মনিরপেক্ষ চেতনা অহর্নিশ প্রজ্বলিত। নারী স্বাধীনতা তথা নর-নারীর ব্যক্তিসত্তার পূর্ণ স্বাধীনতায় বিশ্বাসী তিনি। সেক্সকে দেখেন নর-নারীর একান্ত সরল সুসমাময় মানবীয় বৃত্তিতে। মানবপ্রেমে হৃদয়ের রক্ত চুয়ানো কষ্টের মসি ঝরা কিছু অজর কবিতা স্থান পেয়েছে তার ‘কিংবদন্তির রাজকীয় প্রেম’ কাব্যগ্রন্থে। অনিবার্য মানবমুক্তির প্রশ্নে লেখনীতে পূর্ণ বাকস্বাধীনতায় নান্দনিক সৌন্দর্যের বহুমাত্রিক রূপকল্প সৃষ্টির মাধ্যমে পাঠককে তিনি সহজেই টেনে নিয়ে যান। দ্রোহ, প্রেম, নস্টালজিকতায় প্রবীভ‚ত এক স্বতন্ত্র কাব্যবোধের অতল গভীরে। তার কবিতার শব্দের শরীর জুড়ে থাকে সুন্দর ও সত্যের নির্মম মৃত্যুর কঠিন উচ্চারণের বিদীর্ণতা, হা-হা-কার...।