মহান মুক্তিযুদ্ধ বাঙালি জাতির এক নতুন অধ্যায় যার মধ্যদিয়ে অর্জিত হয়েছে নিজস্ব ভূখণ্ড, সার্বভৌমত্ব; স্বাধীনভাবে বাংলা ভাষা বলার ও লেখার অবাধ স্বাধীনতা। পরাধীন জাতিই কেবল উপলব্ধি করতে পারে নিজস্বতা না থাকলে কতো যাতনা নিয়ে বাঁচতে হয়। বাংলাদেশের আপামর জনগণের ওপর তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তানের শাসন, শোষণ, নিপীড়নের মাত্রা যখন চরম পর্যায়ে পৌঁছেছিলো, তখন স্বাধীনতার স্বাদ বাঙালি জাতিকে দিতে বজ্রকণ্ঠে আহ্বান তুলেছিলেন বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তাঁর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায়, ইচ্ছায়, বহু ত্যাগ-তীতিক্ষায় আজকের এই বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধুসহ তাঁর আহ্বানে সাড়া দিয়ে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়া প্রত্যেক মহান মুক্তিযোদ্ধার প্রতি আমরা চিরকৃতজ্ঞ, যাঁদের আত্মত্যাগে আজকের এই সবুজ-শ্যামল-সুজলা-সফলা বাংলাদেশ।br মহান মুক্তিযুদ্ধ এখন আমাদের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অনুষঙ্গ। স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর পার হয়েছে ইতোমধ্যে। একটা প্রজন্মর পট পরিবর্তন হতে চলেছে যাদের কাছে ‘মুক্তিযুদ্ধ’ শব্দটা খুবই নতুন ও অবিশ্বাস্য বলে মনে হতে শুরু করেছে। যুদ্ধ-বিগ্রহ, দুর্ভিক্ষ-মহামারী স্বচোখে না দেখলে, তার প্রগাঢ়তা কতোটুকু তা হয়তো অনেকেই উপলব্ধি করতে পারে না। তাই হয়তো অনেকের কাছে মুক্তিযুদ্ধ তুচ্ছ কিংবা অনাগ্রহের বিষয়। এখন প্রশ্ন হতে পারে- মুক্তিযুদ্ধকে সার্বজনীন করতে করণীয় কী হতে পারে? এটির সহজ উত্তর হচ্ছে- মুক্তিযুদ্ধের বিষয়সমূহকে চর্চা করতে হবে, ইতিহাসকে প্রাণবন্ত করতে হবে, মুক্তিযুদ্ধের সঠিক দলিল-প্রমাণ উদ্ধার ও সংরক্ষণ করতে হবে। তবেই মুক্তিযুদ্ধের গ্রহণযোগ্যতা টিকে রবে শতাব্দীর পর শতাব্দী।br স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলা শিল্প-সাহিত্যে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়টা যোগ হয়েছে। এটি বাংলা সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করেছে, যোগ করেছে ভিন্নমাত্রা। আমরা চাইও শিল্প-সাহিত্যে মুক্তিযুদ্ধপ্রসঙ্গ উঠে আসুক। সেই সুপ্রসন্ন চিন্তা থেকে মুক্তিযুদ্ধকে আশ্রয় করে লেখা একশোজন কবির কবিতা নিয়ে ‘মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক একশো কবিতা’ সম্পাদনার দায়িত্ব হাতে নিই আমি। আমার এই আগ্রহে বর্তমান সময়ের নবীন-প্রবীণ কবিগণ এগিয়ে আসেন, এগিয়ে আসে ‘প্রতিবিম্ব প্রকাশ’। মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক সাহিত্য চর্চাকে প্রসারিত করতে, সবার মাঝে মুক্তিযুদ্ধের কথাকে ছড়িয়ে দিতে এইসব মানুষের এগিয়ে আসার মনোবলকে আমি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে কিংবা ধন্যবাদ দিয়ে ছোটো করতে চাই না। শুধু এটাই বলতে চাই- আপনারা পরখ করুন, আশেপাশের মানুষ সাতিহ্যকে উপজীব্য করে কী করছে আর আমি কী করছি। নিশ্চয়ই আমার এই নির্লোভ, নিঃস্বার্থ উদ্যোগ দেশপ্রমের অংশবিশেষ।
মোহাম্মদ অংকন, বর্তমান লেখকদের মধ্যে পরিচিত মুখ। শৈশব-কৈশোরে লেখালেখির হাতেখড়ি। নিয়মিত লিখছেন দেশ-বিদেশের পত্রপত্রিকা, ম্যাগাজিন ও সাময়িকীতে। সাহিত্যের সব শাখাতেই আছে সমান দক্ষতা। দক্ষতা, আত্মপ্রত্যয়ী মনোভাব ও প্রতিশ্রুতিশীলতা ক্রমশ এই লেখককে আগামীর পথ দেখাচ্ছে। বছরব্যাপী নতুন বই প্রকাশের মাধ্যমে পাঠকমহলে চমক সৃষ্টি করে চলেছেন। বাংলা সাহিত্যে এই প্রতিভাবান লেখকের অবাধ বিচরণে মুগ্ধ সবাই। তিনি ১৯৯৭ সালের ৭ নভেম্বর নাটোরের চলনবিল অধ্যুষিত সিংড়া উপজেলায় জন্মগ্রহণ করেন। কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) বিষয়ে স্নাতক সম্পন্ন করে একই বিষয়ে স্নাতকোত্তর শ্রেণিতে পড়াশোনা করছেন। ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ছাত্র হওয়ার পরও লেখালেখির সূত্রে ঝুঁকে পড়েন সাংবাদিকতায়। দৈনিক মানবকণ্ঠে সাব-এডিটর হিসেবে কর্মজীবন শুরু করলেও সরকারি চাকরি পাওয়ায় তা আর করা সম্ভব হয় না। বর্তমানে বাংলাদেশ পুলিশের সর্ববৃহৎ ইউনিট ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)’র কম্পিউটার বিভাগে কর্মরত আছেন। পুরস্কার ও সম্মাননা: ‘পাপড়ি-করামত আলী পাণ্ডুলিপি পুরস্কার-২০১৯’, ‘রূপচাঁদা: অদেখা বাংলাদেশ সেরা গল্পকার-২০১৯’, ‘চয়েন বার্তা সম্মাননা-২০২০’, ‘লিখিয়ে পাণ্ডুলিপি পুরস্কার-২০২০’, ‘প্রিয় বাংলা পাণ্ডুলিপি পুরস্কার-২০২২’।