কেউ জানে না কার ভবিতব্য কীভাবে কতটা নিরুপদ্রবে পার হবে। কতটা দুঃখ-দুর্দশা, ব্যথা-বেদনা ও অপরিসীম মানস-যন্ত্রণা মানুষকে ভোগ করতে হবে। তবু অনিশ্চিত ভবিষ্যতের কথা একটুখানি তলিয়ে দেখে গভীরভাবে ভাবতে গেলেই গা শিউরে ওঠে। মানসজগৎ বাষ্পীভূত হয়ে যায়। যে-সকল আলোকিত মানুষ প্রিয়নবি হজরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সরাসরি সান্নিধ্য লাভ করেছেন, তার ওহিপূর্ণ জ্যোতির্ময় হাত ধরে ঈমানের আলোয় আলোকিত হয়েছেন, তাদের কিছু মানুষ তার ইন্তিকালের পর অদ্ভুতরূপে পালটে যায়। দিকে দিকে জাহিলিয়াতের যুগের মতো আবারও আরব্য গোত্রপ্রীতিবোধ, আভিজাত্য-ভাব, অহেতু অহংকার ও মিথ্যাচার মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে। যে ইসলাম মানুষকে সবচেয়ে সাচ্চা ও সত্যাশ্রয়ী রূপে গড়ে তোলে, সেই মানুষই আবার ইসলামকে লঙ্ঘন করতে কুণ্ঠাবোধ করে না। অতি তুচ্ছ প্রয়োজনে মানুষ হত্যা করতেও কসুর করে না। তা যদি হয় আবার ইসলামের তৃতীয় খলিফা, আমিরুল মুমিনিন উসমান ইবনু আফফান রাদিয়াল্লাহু আনহুর মতো ইসলামের জলিলুল কদর সাহাবি, নবিজির আদরের দুই মেয়ের জামাতা তথা কাতিবে ওহিকে হত্যা করা। এই গ্রন্থে উসমান ইবনু আফফান রাদিয়াল্লাহু আনহুর খিলাফতকাল ও তার শাসনব্যবস্থা নিয়ে নতুন করে আলোকপাত করা হয়েছে। নির্মোহভাবে মূল্যায়ন করা হয়েছে তার সময়ের পরিবেশ-প্রতিবেশ তথা চতুষ্কোণকে। প্রিয় পাঠক, তার অনুষঙ্গে এখানে এমন কিছু নতুন প্রশ্ন ও নতুন উত্তর খুঁজে পাবেন, যা হয়তো আপনি সত্যিই আগে এমনভাবে এতটা মনোনিবেশ নিয়ে অনুধাবন করেননি। এটিই এই গ্রন্থের সপ্রাণ সার্থক স্বাতন্ত্র্য।