Summary:
সিজনের প্রথম বৃষ্টির পরপর ভেজামাটির ঘ্রাণ। পোড়া পোড়া। খুব জোরে, ডিপলি যখন ঘ্রাণ নেওয়া হয় ; অন্তরের সব দম্ভ ভেঙে তছনছ হয়ে যায়।নিজেকে খুব তুচ্ছ মনে হয়, দুনিয়াকে খুব ঠুনকো মনে হয়। মাটির মাঝে যেই ব্যাকটেরিয়া আর সায়ানো ব্যাকটেরিয়া বসবাস করে, তারা যখন মরে যায়, তৈরি হয় Geosmin নামের ন্যাচারাল "মাটির সুবাস" যৌগ। বহুদিন বহুদিন যখন বৃষ্টি হয়না, মাটি "শীতে গৃহিণীর পায়ের গোড়ালি"র মত ফেটে চৌচির হয়, সেই সময়ে জিওসমিন সাহেব ফাঁকে ফাঁকে আটকে থাকে। অনেক প্রতিক্ষার পরে আকাশ কালো করে মেঘ জড়ো হয় যখন, বৃষ্টির ঠিক আগ দিয়ে বাতাসে জলীয় বাষ্প বেড়ে যায় আর মাটির ফাঁকে থাকা জিওসমিনকে টেনে বের করে এনে ছড়িয়ে দেয় চারিপাশে। বিদগ্ধ কৃষক আনন্দে কেঁদে ফেলে "মনা রে, বিষ্টির ঘ্রাণ পাইতেসি লাগে..." ! মূল চমকটা আসে বৃষ্টির সময়ে। পানির বড় বড় ফোটা আছড়ে পড়ে, ঘ্রাণ-যৌগটা ফাঁকফোকড় ছেড়ে একদম উপরিভাগে চলে আসে। তখন শুধু দক্ষ চাষী নাহ, ভেজামাটির বাসনা পায় সবাই। সা রা শরীর কাদা-মাখানো ৩ বছর বয়সী নেংটুপুটু বাচ্চাটা ; মেট্রোরেলের কাজ চলতে থাকা মিরপুরের মেঠোপথ দিয়ে জোরসে সাইকেল চালায়ে যাওয়া ভাই-টা ; বৃষ্টিতে শরীরের কিছু অংশ ভেজানোর হারানোসুন্নত পালনরত গ্রামের জানালা দিয়ে কবজি বের করা মানুষটা! ঘ্রাণটা বোতলজাত করতে কাটখড় পোড়াতে হয়েছে অনেক (আক্ষরিক অর্থেই!) ... সেইযে বৃষ্টি হলো অনেক অপেক্ষার পরে, বর্ষণ শেষ হয় যখন, মাটি শুকায় আবার, কিছু মানুষ তখন কাজে লেগে যায় চুপিসারে। জিওসমিন খুব চালু (উদ্বায়ী) তো, একটুতেই উড়ে যেতে চায় বাতাসে। মানুষগুলো তাই শুকনো মাটিকে স্রেফ পুড়ে ফেলে আগুনে ! এবার সেই পোড়ামাটিকে বিশাল ডেগে (ডেকচির কথা বলছি) পানিসহ চড়িয়ে জ্বাল দাও আচ্ছাসে। মুখবন্ধ ডেকচির উপরের দিকে একটা চোংগা লাগানো থাকে, যেটার অন্য মাথা যায় খুব সুন্দর দেখতে পিতলের কলসীতে (কান্নুজে ওয়ার্কারদের দেখেছি সেটাকে ভাপকা বলে ডাকতে)। একটুখানি রসায়ন খেলা করে এবার, সিদ্ধ হতে থাকা পোড়া-মাটি থেকে ঘ্রাণযৌগ বাষ্পের সাথে মিশে উপরে উঠে, চোংগা দিয়ে যেতে যেতে ঠাণ্ডা হয় আর ভাপকার ভেতরে জমা হয়। এইযে কঠিন মাটি থেকে তরল সুবাস বের করে আনা -- এই এক্সট্রাকশান পদ্ধতিটার কেতাবি নাম হাইড্রো-ডিস্টিলেশন। তেল আর পানি যেহেতু মিলেনা, তাই মিট্টির তেলরুপী সুবাস-মলিকিউল ভেসে থাকার কথা পানির উপরে। কিন্তুউউউ, ঐযে বলেছি, জিওসমিন অনেক উদ্বায়ী, উড়ে যাওয়ার প্রবণতা খুব ; তাই তাকে কামড় দিয়ে আটকে রাখার জন্যে ভাপকা'য় আগে থেকেই স্যান্ডালউড অয়েল দেওয়া থাকে। যেন সে আসামাত্র ধরে ফেলা যায়। এত কষ্ট করলাম তোমায় উড়তে দেবো বলে? কক্ষনো না! কলসী থেকে এবার "চন্দনে-পরিবেষ্ঠিত মিট্টি আত্তার"কে নেওয়া হয় মহিষের চামড়ায় তৈরি বিশালাকৃতি বোতল 'কুপ্পি'তে ; যেন মিট্টি আত্তারের সাথে যদি অল্পটুকুও পানি থেকে থাকে, চামড়ার বোতলের সুক্ষ্ম কৈশিক-নালিকাগুলো সেগুলোকেও ঝেটিয়ে বিদায় করতে পারে। ন্যাচারাল আত্তারটা আরো ঘন, আরো গাঢ় হয় সেথায়। কুপ্পি থেকে ঢেলে এলুমিনিয়ামের বোতলে করে সেইইই উত্তরপ্রদেশের কান্নুজ থেকে নিয়ে এসেছি অল্প পরিমাণে, আপনাদের চাখাবো বলে। অল্প কিছু মানুষের সৌভাগ্য হয়েছে সোঁদামাটির ঘ্রাণকে তরল আকারে অনুভব করার, সেই তালিকায় আপনার নাম লেখাবো বলে 'মিট্টি সুপ্রীম'র এক জাদুকরী "Anti-depression" ক্ষমতা আছে, বোধকরি মাটির সাথে আমাদের অবিচ্ছেদ্য সম্পর্কের জন্যই। ন্যাচারাল ঘ্রাণটা মুহূর্তেই মন ভালো করে দেয় আর হতাশাকে দেয় ছুটি (আচ্ছা, মুমিনের আবার হতাশা কিসের?) ! এছাড়া এটাকে এরোমাথেরাপি'র অংশ হিসেবেও ব্যবহার করতে পারেন - গোসলের পর জাস্ট দুই স্টিক আত্তার নিয়ে মুখ-বুকজুড়ে বুলিয়ে নিলেন, এরপর মাটির মাঝেই নিজেকে খুঁজে ফেরা... বাহ্যিক বিচারে লংলাস্টিং মনে না হলেও, Mitti Supreme যে মনের উপরে লং লাস্টিং প্রভাব ফেলবে - এ কথা নির্দ্বিধায় বলতে পারি। Specification: |
Title: | Afdal Mitti Supreme - 3gm |
Brand: | Afdal |
Volume | 3 gm |
Scent | Geosmin |
Gender | Men |
Alcohol Free | Yes |
Gas | No Gas |