ভূমিকা নকশালবাদী আন্দোলনের ইতিহাসের ওপর অনেক পুস্তক প্রকাশিত হয়েছে, যার অনেকগুলিই যথেষ্ট ভালো বই অবশ্যই, কিন্তু ঘটনা পরিক্রমায় প্রচুর ভালো তথ্য, তারিখ এবং স্ববিরোধিতা বর্তমান। ইতিহাস লিখবে গেলে, তথ্য এবং তারিখ সম্পর্কে লেখক সমাজের যথেষ্ট সতর্ক থাকা দরকার; অন্যথায় পরবর্তী প্রজন্মের হাত ধরে, ভুলগুলি চলতেই থাকবে। এই কারণে বর্তমান পুস্তকে দুটি পরিচ্ছেদ : এক— “নকশালবাড়ি আন্দোলনের ইতিহাসে তথ্যপ্রমাদ” এবং দুই—“তথ্য বিকার” যুক্ত করা হয়েছে ভুলগুলি সংশোধন করে দেবার জন্য (২য় পর্বের শেষে)। নকশালবাদী আন্দোলনের সূচনা, গভীরতা এবং ব্যাপ্তি বুঝবার জন্য সমগ্র আন্দোলনের মধ্য থেকে একটি বিশেষ অঞ্চল কে (এক্ষেত্রে বীরভূম) বেছে নিয়ে শহিদ এবং কর্মী-সংগঠকদের শ্রেণি অবস্থান, জাতি-ধর্ম-বর্ণভিত্তিক অবস্থান, পড়াশোনা, বয়স এবং লিঙ্গ ভিত্তিক অংশগ্রহনের ওপর একটি সমীক্ষা চালানো হয়। বীরভূমে মোট ৫৪ জন শহিদ হয়েছেন। ৫৩ জনের ওপর এবং আন্দোলনে অংশগ্রহনকারী প্রায় দ্বিসহস্রাধিক কর্মী এবং সংগঠকদের মধ্যে থেকে ২৭০ জনের ওপর এই সমীক্ষা চালানো হয়। সকলের নাম, পিতার নাম এবং ঠিকানা নথিভুক্ত করা হয়েছে। এ ব্যাপারে ৯টি সারণী দেওয়া হয়েছে (৩য় পর্বের শেষে)। এটি একটি ক্ষুদ্র কিন্তু প্রয়োজনীয় প্রচেষ্টা ৷ আর, বীরভূমের যে শহিদদের ওপর সমীক্ষা করা হয়েছে, – তাঁদের ১৪ জনের ফটো প্রকাশ করা হয়েছে। অন্যদের ফটো পাওয়া যায়নি। বইটি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোকপাত প্রথম পর্বের ভূমিকাতেই করা হয়েছে। এখন শুধু দু-একটি খবর, যা আমাকে খুশি করেছে, তা জানিয়ে শেষ করবো। বিগত বছরগুলিতে বহুপাঠক প্রত্যক্ষভাবে যোগাযোগ করেছেন, উৎসাহিত করেছেন এবং পরবর্তী কাজ সম্পর্কে খোঁজ নিয়েছেন। বাংলাদেশ থেকে সংস্কৃতি পত্রিকা তাঁদের নিজস্ব উদ্যোগে এখানম থেকে বই নিয়ে গিয়েছেন। এ পি ডি আর মারফত জেলের ভেতরে থাকা নকশাল বন্ধুরা আরও কিছু বই চেয়ে পাঠিয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসের ছাত্রদের বইটি সম্পর্কে আগ্রহ এবং সূত্র সহায়িকা হিসাবে ব্যবহারের খবর এসেছে। আমি খুশি।