ভূমিকা আমাদের রাজ্যে বড় বড় মাছের চাহিদা পূরণের জন্য অন্য রাজ্য েেথকে মাছ সরবরাহ করা হয়। তার কারণ আমাদের রাজ্যে বড় মাছের উৎপাদন অনেক কম হয়। এই বড় মাছের উৎপাদনকে কমিয়ে দেওয়ার জন্য আমাদের রাজ্যে আর্থসামাজিক অবস্থা অনেকটাই দায়ী। এছাড়াও বড় মাপের মাছের চেয়ে মাঝারী মাপের মাছের উৎপাদনের ইচ্ছেটাও মাছ চাষীদের খুব বেশী। এইসব কারণ বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করলে দেখা যাবে-ভারতবর্ষ বিশ্বের তৃতীয় উন্নয়নশীল দেশ হলেও, আমাদের রাজ্যে গরীব চাষীদের সংখ্যা খুব বেশী, প্রাকৃতিক দুর্যোগ সমূহ যেমন-খরা, বন্যা ছাড়াও বড় মাছ উৎপাদনের পথে অপর বাধাও রয়েছে। যেমন পুকুরে বিষ প্রয়োগ, চুরি ইত্যাদি, দীর্ঘদিন মূলধন আটকে থাকার কারণে বড় মাছ উৎপাদনের ক্ষেত্রে জলাশয়ের উৎপাদনশীলতা বাড়ে না। মাছ চাষ যদিও একটি লাভ জনক কার্যক্রম তবুও মাছ চাষের জন্য প্রয়োজনীয় জ্ঞান, কলা কৌশল ও দক্ষতার অভাবে অনেকেই আশানুরূপ ফললাভে ব্যর্থ হন । কেননা মাছ চাষ হল একটি প্রকৃতি নির্ভর পরিবর্তনশল উৎপাদন কৌশল যা মাটি, জল, আবহাওয়া পারিপার্শ্বিক পরিবেশ ও অবস্থাভেদে পার্থক্য হয়ে থাকে। পরিশেষে বলা যায়, মাছ বাঙালীদের জন্য শুধুমাত্র খাদ্যবস্তু নয়, এর সাথে বাঙালীদের অনেক আবেগও জড়িয়ে রড়েছে। আজকে আমাদের অনেক দেশীয় মাছ, বিদেশী মাছগুলির সাথে প্রতিযোগীতায় এঁটে উঠতে পারে না বলে বিলুপ্ত হতে চলেছে। এই প্রাকৃতিক সম্পদ আমাদের লোকাচার, সংস্কৃতি ও দৈনন্দিন জীবনের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। প্রকৃতির ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য এবং আমাদের নিজস্ব প্রয়োজনের জন্যই অতিপ্রয়োজনীয় সম্পদের রক্ষনাবেক্ষণ ও উন্নয়ন করতে হবে। আমাদের এই বইটি মৎস্যচাষীদের উপকারের জন্যই লেখা। প্রত্যেকটি বিষয় নিয়ে বিশদে আলোচনা করা হয়েছে। যাতে সাধারণ মানুষের বুঝতে সুবিধা হয়, সেই চেষ্টাই যথাসম্ভব করা হয়েছে। এবার এখন মৎসজীবীদের কাছে ও সর্বসাধারণের কাছে বইটি আদৃত হলেই শ্রম সার্থক হয়েছে বলে মনে হবে।