ভূমিকা ইংরেজ মুক্ত ভারতবর্ষের স্বপ্নদ্রষ্টা তিতুমির এমন এক সমাজ গঠনের কথা ভেবেছিলেন, যেখানে থাকবে না কোনো শোষণ, পীড়ন-লাঞ্ছনা । এইরকম এক সমাজ গঠনে তিতুমিরের সামনে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল, সেইকালের জমিদার-মহাজন-নীলকর আর তাদের প্রধান পৃষ্ঠপোষক ইংরেজ সরকার। এই বাধা চূর্ণ করার জন্য তিতুমির আঘাত হানলেন গ্রাম-বাংলায় জমিদার-মহাজন-নীলকরের সযত্নে গড়ে তোলা কৃষক- শোষণের মধুচক্রে। এই লড়াই-এ তিনি পাশে পেলেন অত্যাচারে জর্জরিত, ক্ষুধা ও দারিদ্র্যক্লিষ্ট নদিয়া আর ২৪ পরগনার কয়েক হাজার কৃষককে। অত্যাচারী জমিদার-মহাজন-নীলকরদের শায়েস্তা করতে বেশি বেগ পেতে হল না তিতুমিরকে। কিন্তু জমিদার নীলকরের পৃষ্ঠপোষক রাষ্ট্রশক্তির নির্মম আঘাতে বাস্তবায়িত হল না তিতুমিরের স্বপ্ন। কামান- বন্দুকে সুসজ্জিত ইংরেজ বাহিনীর আক্রমণে নারকেলবেড়িয়ার বাঁশের কেল্লায় ১৮৩১-এর ১৯ নভেম্বর সম্মুখ যুদ্ধে প্রাণ হারালেন অসমসাহসী এই মানুষটি। বারাসতের জয়েন্ট ম্যাজিস্ট্রেট আলেকজান্ডার আঁচ পেয়েছিলেন তিতুমিরের জনপ্রিয়তার। তাঁর আশঙ্কা ছিল সুযোগ পেলেই গ্রামবাসীরা তাঁদের প্রিয় নেতা তিতুমিরের মৃতদেহটি বাঁশের কেল্লা থেকে বাইরে নিয়ে গিয়ে শহীদের মর্যাদায় তাঁকে সমাধিস্থ করবেন। শেষ শ্রদ্ধা জানানোর এই সুযোগটুকুও মানুষকে না দেবার জন্য আলেক- জান্ডার তিতুমিরের দেহটি আগুনে পুড়িয়ে ফেলার নির্দেশ দেন। বাঁশের কেল্লাটিও তিনি আগুন লাগিয়ে ধ্বংস করে দেন।