হরিনারায়ণ চট্টোপাধ্যায়ের ৩৫ টি ভয়ের গল্পের সংকলন হরিনারায়ণ চট্টোপাধ্যায়ের জন্ম ২৩ মার্চ ১৯১৬, কলকাতার ভবানীপুরে। জন্মের কয়েক বছর পরে চলে আসেন বার্মায়। সে দেশেই তাঁর শিক্ষা ও কর্মজীবনের সূচনা। রেঙ্গুন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএ পাশ করে রেঙ্গুন কোর্টে আইনজীবীর কর্মজীবন শুরু করেছিলেন। বার্মায় কাটে দীর্ঘ পঁচিশ বছর। ১৯৪০ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হলে বার্মা থেকে ফিরে আসতে হয় কলকাতায় ভবানীপুরের পৈতৃক বাড়িতে। তাঁর লেখা প্রথম উপন্যাস 'ইরাবতী', ১৯৪৮ সালে ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হয় ‘দেশ’ পত্রিকায়। ছোটোদের জন্য লেখা বইয়ের মধ্যে অন্যতম ভয়ের মুখোশ ও পাথরের চোখ । তাঁর কাহিনি থেকে অনেক সিনেমা হয়েছে। বাংলায় 'অভিসারিকা', 'অশান্ত ঘূর্ণি', 'জি টি রোড' আর হিন্দিতে 'মুঠঠি ভর চাউল' সিনেমাগুলি তৈরি হয়। নাটকে অভিনয় করতে ভালোবাসতেন, তাঁর চারু অ্যাভিনিউ-এর বাড়িতে নাটকের নিয়মিত মহড়া হত। বহু বেতার নাটকেও অংশগ্রহণ করেছিলেন। ১৯৪৯ সালের ছবি 'চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুন্ঠন'-এ তিনি দেশপ্রিয় যতীন্দ্রমোহন সেনগুপ্তর ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন। ছোটোগল্প, রহস্য কাহিনি, ভৌতিক গল্প, রম্যরচনা এবং উপন্যাসে তিনি যথেষ্ট খ্যাতি অর্জন করেন। প্রখ্যাত কমিক শিল্পী ভানু বন্দোপাধ্যায়ের অসংখ্য জনপ্রিয় রম্য নাটক হরিনারায়ণবাবু্র লেখা। বহুমুখী প্রতিভাধর মানুষটি লিখেছেন শ্যামাসংগীত, আবৃত্তিতে পেয়েছেন অনেক মেডেল। কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯৭২ সালে 'মতিলাল পুরস্কার' এবং ১৯৭৬ সালে 'তারাশঙ্কর পুরস্কার' লাভ করেন। ১৯৮১ সালের ২০ জানুয়ারি তিনি চিরকালের মতন অমৃতলোকের উদ্দেশে যাত্রা করেন।