বাংলাদেশের রাজনীতিতে নানা কারণে ‘জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ’ একটি বহুল আলোচিত সংগঠন। প্রতিষ্ঠাকাল থেকেই এ রাজনৈতিক দলটির বিভিন্ন দিক নিয়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা চলে আসছে। জামায়াতকে নিয়ে লেখাজোখার পরিমাণও নেহাত কম নয়। কিন্তু এর অধিকাংশ রচনা জামায়াতের প্রতি বিদ্বেষ অথবা ভক্তির প্রান্তিকতায় গড়িয়েছে। সংগঠনটি সম্পর্কে এখনও পর্যন্ত অ্যাকাডেমিক দৃষ্টিকোণ থেকে মূল্যায়ন বা গবেষণা অপ্রতুল। . প্রখ্যাত রাজনীতি-বিশ্লেষক ও রাষ্ট্রচিন্তক ড. হাসান মোহাম্মদের পিএইচডি থিসিসের ওপর ভিত্তি করে রচিত এ গ্রন্থে জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের নেতৃত্ব, সংগঠন ও আদর্শ তথা জামায়াত-রাজনীতি সম্পর্কে অ্যাকাডেমিক মূল্যায়নের চেষ্টা করা হয়েছে। উল্লেখ্য যে, অধ্যাপক হাসানের এই থিসিসই ‘জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ’-এর ওপর প্রথম পিএইচডি পর্যায়ের গবেষণা। . বাংলাদেশ ও মুসলিম-বিশ্বের রাজনীতি সম্পর্কে আগ্রহী ছাত্র, শিক্ষক, গবেষক, রাজনৈতিক নেতা-কর্মী ও রাজনীতির উৎসাহী পাঠকের কাছে বইটি প্রথমবার প্রকাশের পরপরই সাড়া ফেলেছিল। ভক্তি ও বিদ্বেষের দুই প্রান্তিক চোখের মধ্যবিন্দু থেকে তৃতীয় চোখে জামায়াতকে দেখার এই অ্যাকাডেমিক গবেষণার প্রয়াসটি এখনও প্রাসঙ্গিক এবং ঐতিহাকি মূল্যমানসমৃদ্ধ।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগের প্রফেসর ও বর্তমান চেয়ারম্যান ডক্টর হাসান মােহাম্মদ ১৯৫৪ সালে সন্দ্বীপ উপজিলার সাতঘড়িয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা মাওলানা সৈয়দ আহমদ (মরহুম) একজন বিশিষ্ট আলিম, শিক্ষাবিদ ও লেখক ছিলেন। ড. হাসানের শৈশবেই তাঁর মাতা শহীদা বেগম পরলােক গমন করেন। বাংলাদেশ : ধর্ম, সমাজ ও রাজনীতি’ ছাড়াও ড. হাসান রচিত ও সম্পাদিত বেশ ক'টি গ্রন্থ ইতােমধ্যে প্রকাশিত হয়েছে। প্রকাশের অপেক্ষায় রয়েছে আরও কয়েকটি গ্রন্থ। তিনি বেশ কটি সাময়িকী সম্পাদনা করেছেন (ড. হাসানের সংক্ষিপ্ত প্রকাশনা তালিকা এ গ্রন্থেও সংযােজিত রয়েছে)। প্রফেসর হাসান মােহাম্মদ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি, বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের সহ-সভাপতি এবং এ. এফ. রহমান হলের প্রভােষ্ট হিসেবেও বর্তমানে দায়িত্ব পালন করছেন। বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয় কলেজসমূহের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিষয়ের শিক্ষকদের জাতীয় প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ রাষ্ট্রবিজ্ঞান সমিতি’র তিনি ছিলেন সাধারণ সম্পাদক। ড. হাসান মােহাম্মদ বাংলাদেশ অধ্যয়ন কেন্দ্র’-এর প্রতিষ্ঠাতা নির্বাহী পরিচালক। বাংলাদেশ সংস্কৃতি ফোরাম’-এর প্রতিষ্ঠাতা মহাসচিব। অনেকগুলাে জাতীয় আঞ্চলিক সামাজিক, সাংস্কৃতিক এবং পেশাজীবী সংগঠনের সঙ্গে ড. হাসান সক্রিয়ভাবে জড়িত রয়েছেন। তাঁর উদ্যোগে আয়ােজিত হয়েছে অনেকগুলাে সেমিনার-সিম্পােজিয়াম। বাংলাদেশের বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় তিনি নিয়মিত লিখছেন। গ্রন্থণা, উপস্থাপনা এবং আলােচক হিসেবে বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশনের বিভিন্ন অনুষ্ঠানেও তিনি অংশগ্রহণ করে থাকেন।