ভূমিকা মক্কা। পৃথিবী সৃষ্টি ও মানব জাতির যাত্রা শুরুর ঘটনাক্রমে মহিমান্বিত এক স্থান। আল্লাহ তা’য়ালা মক্কার ভূস্তরকে সর্বপ্রথম সৃষ্টি করেন। অতপর এর থেকে ভূস্তর সম্প্রসারিত করেন। আর এই আদি ভূস্তরের উপরেই নির্মিত হয় পৃথিবীর প্রথম ঘর। প্রথম উপাসনাগৃহ ‘কাবা’ অথবা ‘বাইতুল্লাহ’ (আল্লাহর ঘর)। বেহেশতের ‘বাইতুল মামুর’-এর আদলে এই উপাসনাগৃহ নির্মিত। এটি হলো- মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জন্মভূমি। ইসলাম প্রবর্তনের পীঠস্থান। হজ্ব পালনের স্থান। কিন্তু মক্কার অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ই আমাদের অজানা। প্রকৃতপক্ষে মক্কা পৃথিবীর এক অনন্য নগরী- যার সাথে অন্য কোনো শহর, নগরী বা স্থানের তুলনা হয় না। মক্কা যেন পৃথিবীতে রব্বে কারীমের জীবন্ত জাদুঘর। সৃষ্টির প্রথম থেকে তীর্থকেন্দ্র হিসেবে আরব অঞ্চলের মানুষের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলেও ইসলাম প্রবর্তনের পর মক্কা সারা বিশ্বের মুসলমানদের পবিত্র ভূমিতে পরিণত হয়েছে। বিশ্বের কোটি কোটি মুসলমান ¯স্রষ্টার অমোঘ আকর্ষণে মক্কার পুণ্যভূমিতে ছুটে যান। মক্কাকে নিয়ে অমুসলিমদেরও রয়েছে প্রচুর আগ্রহ। মক্কার এই অতুলনীয় মর্যাদা স্বয়ং আল্লাহ কর্তৃক প্রদত্ত। গ্রন্থটিতে সামগ্রিক ভাবে মক্কাকে পাঠকের কাছে উপস্থাপনের চেষ্টা করা হয়েছে। এ কারণেই হারাম শরীফের ফজিলত ও তার বিশেষ বিশেষ আহকাম সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। কুরআন ও রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দিক নির্দেশনার ভিত্তিতে সংক্ষিপ্ত আকারে সহজ-সরল ভাষায় এ শহরের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের শরিয়ত সম্মত পদ্ধতি সুস্পষ্ট ভাবে বর্ণনা করা হয়েছে। অধমের এই সামান্য লেখাটুকু যদি কারো কোনো উপকারে আসে; তবেই সকলের পরিশ্রম সার্থক হবে। প্রিয়তমা স্ত্রী উম্মে হাবিবা সবসময় কাজে উৎসাহ জোগান। নিজের হক ছেড়ে দেন। কাজের সুযোগ করে দেন। আল্লাহ তাকে উত্তম প্রতিদান দান করুন। গ্রন্থটি রচনায় এর প্রকাশক (রাহে জান্নাতের) কর্ণধার রিদওয়ান আল মাহমুদ ভাইয়ের অব্যাহত অনুপ্রেরণা প্রণিধানযোগ্য। তাদের সকলের কাছে আমি সমভাবে ঋণী। সর্বোপরি গ্রন্থটি প্রকাশ করতে পেরে আমি পরম করুণাময় আল্লাহর শোকর আদায় করছি। আল্লাহ সকলকে কবুল করুন। আমিন!