পাবলিশার’স নোট রাধারমণ দত্ত বয়সে মাইকেল মধুসুধন দত্তের চাইতে ১০ বছরের ছোট এবং মারাও গেছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর লিটারেচারে নোবেল প্রাইজ পাওয়ার পরের বছরে। মানে, উনি ‘মধ্যযুগের’ কোন কবি না! উনি যখন গীত রচনা করতেছেন, গাইতেছেন তখন আমাদের সাহিত্যে, কালচারে কলোনিয়াল ফরম্যাটগুলার ডমিনেন্স শুরু হইছে। ওরাল থিকা লিখিত হইছে, ‘গীতি-কবিতা’ থিকা ‘আধুনিক কবিতা’ শুরু হইছে। কিন্তু রাধারমণ দত্তের গীত লিখিত-সাহিত্যের অনেক ‘আধুনিক কবিতার’ তুলনায় অনেক বেশিভাবে সমাজে আছে। এবং বড় একটা এরিয়া জুইড়াই আছে। বাংলা-ভাষায় কথা কন এবং (রাধারমণের নাম জানার দরকার নাই, কিন্তু) উনার দুই-একটা গান শুনেন নাই, এইরকম লোক খুঁইজা পাওয়া তো টাফই হবে! [কয়েকটা গরু অবশ্য হাম্বা কইরা বইলা উঠতে পারে, আমি শুনি নাই! উনাদেরকে আমি বুঝাইতে পারবো না জিনিসটা।] তারপরও উনার গীতগুলারে বলা হইতেছে ‘আঞ্চলিক’ :) হোয়াই রে ভাই! একশ বছরে ভাষা থিকা অনেক শব্দ হারায়া যায়। কিন্তু মধুসুধন দত্তের চাইতে রাধারমণ দত্তে অপরিচিত শব্দ কমই থাকার কথা। বাংলা-কবিতার শুরু তো কলোনিয়াল আমল থিকা না। এর আগে যেইসব ফরম্যাট ছিল ( পুঁথি, পালাগান*…) অইগুলারে তো কম্পিটেবল জিনিস হিসাবে নিতে হবে আমাদেরকে। তা নাইলে জিনিসটা আরো বেশি বিচ্ছিন্ন এবং ইনকমপ্লিট ঘটনা মনে হইতে থাকবে। ‘আধুনিক কবিতা’ আসার পরে অই ফরম্যাটগুলা বাতিল হয়া যায় নাই, বরং আমরা ‘সাহিত্য’ হিসাবে কন্সিডার করতে রাজি নাই আর। রাধারমণ, হাছন, জালালউদ্দিন খাঁ, উকিল মুন্সী থিকা শুরু কইরা আবদুল করিম, মাতাল রাজ্জাক দেওয়ানসহ একটা ট্রেন্ড বা ধারার লোকজন কলোনিয়াল ফরম্যাটে ঢুকেন নাই বইলা ‘আঞ্চলিক’ হয়া রইছেন। যেইটারে আমার ‘আধুনিক কবিতা’ এবং ‘আধুনিক গান’ বলি, এইটাই বরং মাইনর একটা জিনিস, সোসাইটির পারসপেক্টিভে। এই স্ট্রাগলের, কনফ্লিক্টের এবং লেনদেনের জায়গাগুলারে আমাদের খেয়াল করা দরকার।