সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে সৃষ্ট অনেক বিষয় মূলধারার গণমাধ্যমের সংবাদ হিসেবে জায়গা করে নিচ্ছে। তাই ফেসবুক, টুইটারের মতো সামাজিক মাধ্যমগুলো এখন শুধুই ব্যক্তিগত যোগাযোগের ক্ষেত্র বা নিছক সময় কাটানোর মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে শুধু সাংবাদিকতা ও গণযোগাযোগই নয় বরং অন্য অনেক ডিসিপ্লিনে এই নিউমিডিয়া বা নয়ামাধ্যম বিষয়ক পড়াশোনা ও গবেষণা হচ্ছে। তারপরেও বাংলাদেশে এই মাধ্যম সম্পর্কিত গ্রন্থ প্রকাশের উদ্যোগ কম চোখে পড়ে। তাছাড়া ইন্টারনেট বা সামাজিক মাধ্যমভিত্তিক উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বিদেশি ভাষার বই থাকলেও তা এদেশের শিক্ষার্থীদের কাছে ততটা সহজলভ্য নয়। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা প্রায়শই এ ধরনের গ্রন্থের অভাব বোধ করেন। সেই লক্ষ্যে এই অভাব কিছুটা হলেও পূরণের চেষ্টা করা হয়েছে এই বইটি অনুবাদের মাধ্যমে। যুক্তরাজ্যের ওয়েস্টমিনস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব মিডিয়া অ্যান্ড কমিউনিকেশনের অধ্যাপক ক্রিশ্চিয়ান ফুক্সের সোশ্যাল মিডিয়া : এ ক্রিটিক্যাল ইন্ট্রোডাকশন (২য় সংস্করণ) নামের এই বইটিতে বিভিন্ন ধরনের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম নিয়ে সমালোচনামূলক বিশ্লেষণ রয়েছে। এই নয়া মাধ্যমগুলোর তাত্ত্বিক ও কারিগরি আলোচনার পাশাপাশি রয়েছে বিকল্প সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম প্রতিষ্ঠার জন্য কিছু ধারণা-প্রস্তাবনা। যেমন, ক্রিটিক্যাল তত্ত্ব ও ক্রিটিক্যাল চিন্তাধারা নিয়ে আলোচনা, ডিজিটাল সংস্কৃতি, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের উদ্ভব সম্পর্কে কার্ল মার্ক্সের ভবিষ্যদ্বাণী, বিশ্বের ক্ষমতাধর সার্চ ইঞ্জিন গুগলের ইতিবাচক ও নেতিবাচক দিক, সামাজিক মাধ্যমগুলোর পুঁজিবাদী ও কর্পোরেট চরিত্রের উন্মোচন, ইন্টারনেটভিত্তিক মাধ্যমগুলোর কর ফাঁকি দেওয়ার প্রবণতা, ব্যবহারকারীদের ওপর সামাজিক মাধ্যমের নজরদারি, সমাজে উবার ও এয়ারবি-এনবির মতো অনলাইন শেয়ারিং প্ল্যাটফর্মগুলোর ভূমিকা ইত্যাদি। তাছাড়া প্রতিটি অধ্যায়ের শেষে রয়েছে ঐ বিষয়ের ওপর অনুশীলনী ও শ্রেণিকক্ষে আলোচনার জন্য নমুনা প্রশ্নব্যাংক। তাই ধারণা করা সঙ্গত যে অনুবাদ গ্রন্থটি পাঠের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা ডিজিটাল মিডিয়ার বিভিন্ন দিক সম্পর্কে বিস্তারিত জানার সুযোগ পাবে।