প্রাচ্যবাদের ইতিকথা . ইসলাম এমন এক শাশ্বত জীবনব্যবস্থা, যা সতত পরিবর্ধনশীল। ইসলামের প্রাথমিক যুগে—কী রণাঙ্গন, কী শিক্ষাঙ্গন—সবক্ষেত্রেই ছিল মুসলিমদের জয়জয়কার। তাই স্বাভাবিকভাবেই পাশ্চাত্য ‘সভ্যতার’ কাছে ইসলাম হয়ে উঠেছিল এক মূর্তিমান আতঙ্কের নাম। পাছে নিজেদের ভূমি আর মগজের অধিকার হারিয়ে বসে—এই ভয়ে তারা শুরু করেছিল সুচতুর এক ষড়যন্ত্র। সেই কূটকর্মের একাডেমিক রূপই হলো ‘ওরিয়েন্টালিজম’, যেটাকে আমরা ইদানীংকালের সহজ বাংলায় ‘প্রাচ্যবাদ’ নামে চিনি। প্রাচ্যবাদ এমন এক বিষবৃক্ষের নাম, যা প্রোথিত হয় মনের গহীনে। অতঃপর ডালপালা মেলে জন্ম দেয় নানা ইজমের। হাদীস অস্বীকারের ফিতনা থেকে শুরু করে পাঠ্যবইয়ের ইতিহাস-বিকৃতি—সবই এই অপয়া বস্তুর কালো ছায়া। মুসলিমদেরকে দ্বিধান্বিত, খণ্ডিত ও বিভ্রান্ত করতে এই প্রাচ্যবাদের জুড়ি মেলা ভার। তাই সচেতন মুসলিম মননকে এই বিষের স্বরূপ চিনিয়ে দিতেই ‘প্রাচ্যবাদের ইতিকথা’র জন্ম। প্রাচ্যবাদ এক প্রকারের উপনিবেশ, যা গড়ে উঠে ব্যক্তির মনে, মননে। এই বুদ্ধিবৃত্তিক দাসত্ব থেকে মুক্তি পেতে প্রাচ্যবাদের আগাগোড়া ভালোভাবে জেনে নেওয়া আবশ্যক। আগ্রহী পাঠকের এমন জ্ঞানতৃষ্ণাই মেটাবে ‘প্রাচ্যবাদের ইতিকথা’।
আবদুল্লাহ আল মাসউদ এই পৃথিবীতে চোখ মেলেছেন ১৯৯২ সাল ১৬ জানুয়ারি। জন্মস্থান নোয়াখালী জেলার সোনাইমুড়ি উপজেলার আমিশাপাড়া ইউনিয়নের কেশারখিল গ্রামে। মক্তব গমনের মধ্য দিয়ে তার পড়ালেখার হাতেখড়ি। এরপর ক'বছর নিজ গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়াশোনা। তারপর ঢাকার টিকাটুলি জামে মসজিদে অবস্থিত 'তাহফীজুল কুরআন মাদরাসায়' ভর্তি হন এবং সেখান থেকেই হিফজ সমাপন করেন। এরপর ভর্তি হন ঢাকার বিখ্যাত ধর্মীয় বিদ্যাপীঠ যাত্রাবাড়ি বড় মাদরাসায়। সেখান থেকেই অত্যন্ত কৃতিত্বের সঙ্গে তাকমীলে হাদীস সমাপন করেন এবং মাদরাসাসমূহের সম্মিলিত শিক্ষাবোর্ড 'আলহাইআতুল উলইয়া'- এর কেন্দ্রীয় পরীক্ষায় মেধাতালিকায় ১২তম স্থান অর্জন করেন। তারপর উক্ত প্রতিষ্ঠান থেকেই উচ্চতর হাদীস গবেষণা বিভাগ (উলূমুল হাদীস) এবং ইসলামি আইন ও গবেষণা বিভাগ (ইফতা)-এ অধ্যয়ন সমাপ্ত করেন। লেখালেখির সাথে যুক্ত আছেন অনেকদিন ধরে। অনুবাদের পাশাপাশি প্রবন্ধ ও গবেষণাধর্মী মৌলিক রচনাতেও তিনি মনোযোগী। মৌলিক, অনূদিত ও সম্পাদিত সব মিলিয়ে তাঁর প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা বিশেরও অধিক। লেখালেখির মাধ্যমে ইসলাম ও মুসলিমদের খেদমতে তিনি বদ্ধপরিকর।