রাষ্ট্র-মেশিনের কোলে পাতা তুলতুলে লিবেরেল মাথা বইটি পাঠকের চিন্তাপ্রণালির অনেকগুলো আরামকে বিঘ্নিত করতে পারে। কারণ, যেসব ধারণার ওপর সমাজ-রাজনীতির প্রচলিত বিশ্লেষণগুলো প্রায়শই দাঁড়ানো থাকে, এ বইটি সেসব অনুমানকেই দুর্বল সাব্যস্ত করে এগিয়েছে। বরং, বইটি সেসব অনুমান-অনুসিদ্ধান্তগুলোর প্রতি মারাত্মক চ্যালেঞ্জ। বইটিতে ছয়টি খন্ড আছে। প্রথম খণ্ডে ‘শিক্ষায়তন ও শিক্ষাশাসন’ মুখ্যত উচ্চশিক্ষায় রাষ্ট্রীয় অভিঘাতগুলোর দিকে মনোযোগ দেওয়া হয়েছে। দ্বিতীয় খণ্ডে ‘সংবাদ-নিয়ন্ত্রণ ও প্রপাগান্ডাচর্চা’তে সংবাদ-পরিবেশনপ্রণালি আর সংবাদসংস্থাগুলোর সাথে রাষ্ট্রের সম্পর্ক বিশ্লেষিত হয়েছে। ‘শ্রেণিবিদ্বেষের রাষ্ট্রকৃত্য’ খণ্ডে আলোকপাত করেছে কীভাবে বিধিবদ্ধ সব শ্রেণি-আচরণ সংগঠিত হচ্ছে সেদিকে। চতুর্থ খণ্ডে ‘সংস্কৃতি-সত্তার সংঘাত আর স্বার্থ’ এমন কিছু রচনাকে একত্রিত করেছে, যেখানে পরিচয়-নির্মাণের প্রবণতাগুলো আর সেখানকার লড়াইকে পাঠ করা হয়েছে। পঞ্চম খণ্ডে ‘প্রহরীর শাসনব্যবস্থা আর ভীতির কারিগরি’ বর্তমান সময়ের পদ্ধতিগত ভীতিমূলক পরিচালন-ব্যবস্থার দিকে আঙুল তুলেছে। শেষ খন্ডটিতে জাতীয়তাবাদকে কঠোরভাবে শ্লেষ করা হয়েছে 'জাতীয়তাবাদী জজবা' নামে ।
সমকালীন রাজনৈতিক পরিস্থিতি, রাষ্ট্রকাঠামো আর এর বাসিন্দাদের বিষয়ে এ বইটি পাঠকদের নতুনভাবে ভাবাতে সক্ষম।
জন্ম: বরগুনা, ২৮ মার্চ ১৯৬৯। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে নৃবিজ্ঞানের শিক্ষক। কথাশিল্পী, সংকলক, অনুবাদক, কলামিস্ট ইত্যাদি। শিল্পকলার পত্রিকা Depart-এর নির্বাহী সম্পাদক। প্রকাশিত গ্রন্থ : নৃবিজ্ঞানের প্রথম পাঠ (রেহনুমা আহমেদ-এর সঙ্গে যৌথ বিরচিত), কর্তার সংসার: নারীবাদী রচনা সংকলন (সায়দিয়া গুলরুখ-এর সঙ্গে যৌথ সম্পাদিত), এইডস ও যৌনতা নিয়ে ডিসকোর্স (সায়দিয়া গুলরুখ-এর সঙ্গে যৌথ বিরচিত), নৃবিজ্ঞান পরিচিতি (প্রশান্ত ত্রিপুরা ও রেহনুমা আহমেদ-এর সঙ্গে যৌথ বিরচিত), মুক্ত আলোচনা (আইনুন নাহার-এর সঙ্গে যৌথ সম্পাদিত), সাম্প্রতিক নৃবিজ্ঞান (নুরুল আলম এবং আইনুন নাহার-এর সঙ্গে যৌথ সম্পাদিত), চর্চা (জহির আহমেদ-এর সঙ্গে যৌথ সম্পাদিত), কাকগৃহ(ছোটগল্প), আয়ানাতে নিজের মুখটা(ছোটগল্প), ময়নাতদন্তহীন একটি মৃত্যু,(ছোটগল্প)।