পাবনা শহরে জন্ম নিয়ে নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারে বেড়ে ওঠা অতি সাধারণ একজন মানুষ আমি। পারিবারিকভাবে যেটা পেয়েছি, সেটা হলো পাঠ্যাভাস। পরিবারের আর সবার মতোই পাঠ করার আনন্দ নিয়েই কাটে আমার জীবন। কখনও কোনো কিছু লেখার চেষ্টা তো দূরের কথা, মাথাতেও আসে নাই। মুলত আমি বইয়ের পাঠক, গান-বাজনার শ্রোতা আর সিনেমা-নাটকের দর্শক। বাবার প্রয়ানের পর নিজেকে ধরে রাখতে না পেরে ফেসবুকে একটা লেখা প্রকাশ করি। সেটা লিখতে যেয়ে উপলব্ধি করি, আমি লিখতে চাই। একটা যাতনা অনুভব করি অনুভুতিগুলি প্রকাশের। সেই যাতনা থেকে বের হয়ে আসার জন্যই এই লেখার চেষ্টা। জানি না, এইগুলি আদৌ পাঠযোগ্য কি না। নিজেকে অভিমানি ভাবতে ভালোবাসি। একা একা অভিমান নিয়ে থাকাটা আমার সবচেয়ে প্রিয়। আর সমাজ-সভ্যতা ছেড়ে দূরে কোথাও চলে যাওয়া আমার এক ধরণের নেশা। সেই নেশার কিছু অংশের বর্ণনা করার চেষ্টা করেছি এই বইটাতে।
হাইকিং এর সাধারণ নিয়মগুলি, প্রয়োজনীয় পোশাকাদি, শারীরিক যোগ্যতা, প্রস্তুতি, মানষিক শক্তি ইত্যাদি সবকিছুর দিকে নজর দিয়ে হাইকিং এ উদ্বুদ্ধ এবং সহায়তা করাই এই বইয়ের মুল উদ্দেশ্য। সাথে থাকছে আমার সেরা কিছু হাইকিং এর অভিজ্ঞতা, পথের বর্ণনা, আমার নিজের তোলা ছবি ও আমার দেখা মানুষের বিচিত্র জীবনযাপন, বিশেষ করে হিমালয়ের এবং কিলিমান্জারোর। তথ্যগুলি সবই আমার জীবনে ঘটে যাওয়া ঘটনা থেকে। তাই সেখানে ভুল হবার কোনো সম্ভাবনা নেই। প্রকৃতি এবং পথের বর্ননাও সবটা আমার দেখা।
১৯৬০ সালে পাবনা শহরের দিলালপুরে জন্মগ্রহণ করেন সাইফুল ইসলাম রিপন। পড়াশোনা করেছেন পাবনা জিলা স্কুল, সরকারি এডওয়ার্ড কলেজ, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় ও মিশিগানের ওয়েন স্টেট ইউনিভার্সিটিতে। পেশায় মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার। তবে প্রকৌশলী হলেও কল-কারখানার চাকা অথবা সংসারের ঘানি কোনোটিই তাকে আটকে রাখতে পারেনি নির্দিষ্ট গন্ডির ভেতরে। প্রকৃতি দেখার নেশায় ঘুড়ে বেড়িয়েছেন ৮৬টি দেশে। স্কুবা করেও সমুদ্রের তলাটাকেও দেখার চেষ্টা করেছেন। বৃষ্টির শব্দ শোনার জন্য আমাজন জঙ্গলেও থেকেছেন। তিনি হাইকিং করেছেন অজস্র পাহাড়ে।