প্রাচীন মেসোপটেমীয়তে খ্রিস্টপূর্ব ৪০০০ অব্দে নগর সভ্যতা বিকাশ লাভ করে। নবোপলীয় যুগে কৃষি আবিষ্কারের ফলে গ্রামভিত্তিক স্থায়ী সমাজ গড়ে উঠলে মানুষ নদীর তীরবর্তী অঞ্চলে পলল ভূমিতে কৃষিকাজ শুরু করে গ্রামীণ জীবন গড়ে তোলে। কৃষির বিকাশের অব্যবহিত পরে কারিগরি শিল্প এবং বাণিজ্য বিকশিত হলে নদীর তীরবর্তী অঞ্চলে নগর গড়ে ওঠে। এভাবে মেসোপটেমীয় অঞ্চলে অনেকগুলো নগররাষ্ট্র গড়ে ওঠে। প্রত্যেকটি নগররাষ্ট্রের কেন্দ্রে ছিল ধর্মীয় উপাসনালয় জিগুরাত এবং প্রত্যেকটি নগররাষ্ট্রে নিজস্ব দেবতা ছিল। নগররাষ্ট্রের প্রধান প্যাথেজী দেবতার প্রতিনিধি হিসেবে নগর শাসন করতেন। এভাবেই মেসোপটেমীয়তে ধর্ম প্রভাবিত প্রশাসন ও সমাজ ব্যবস্থা গড়ে ওঠে। কৃষির উন্নয়নের জন্য জলসেচ ব্যবস্থা গড়ে ওঠে। পরিবহনের জন্য চাকা বাণিজ্য ও প্রশাসনের প্রয়োজনে লিপির আবিষ্কার হয়। ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য বিনিময় মাধ্যম প্রচলিত হয়। সমাজ ও রাষ্ট্র শাসনের জন্য আইন ব্যবস্থা প্রবর্তিত হয়। মেসোপটেমীয়তে যে সভ্যতা গড়ে ওঠে তার ধারাবাহিকতায় পরবর্তীকালে ব্যাবিলিয়ন, এ্যাশেরীয় সভ্যতা ও ক্যালডীয় সভ্যতা গড়ে ওঠে। আধুনিক সভ্যতার অনেককিছুই মেসোপটেমীয় সভ্যতার ঐতিহ্য থেকেই গড়ে উঠেছে। এই গ্রন্থটিতে মেসোপটেমীয় সভ্যতার রাষ্ট্র, সমাজ, অর্থনীতি ও ধর্মীয় ব্যবস্থা আলোচনা করা হয়েছে।