এদেশের কিছু ক্ষমতালোভী মানুষের শঠতা, মোনাফেকী, গাদ্দারী আর জালজুয়াচুরির ফলে পলাশীর প্রান্তরে বাংলাদেশ তথা সমগ্র ভারতবর্ষের স্বাধীনতার সূর্য অস্তমিত হয়েছিলো দুই শতাব্দীর জন্য। কিন্তু এদেশের সাধারণ মানুষ ইংরেজ ও তার অনুগত শ্রেণির শাসন-শোষণকে কোনোদিন সহজভাবে, নির্বিরোধে গ্রহণ করেনি। ঔপনিবেশিক শাসনের সূচনাকাল থেকেই এদেশের সাধারণ মানুষের বিদ্রোহ ও সংগ্রাম বারবার মাথা তোলার চেষ্টা করেছে। সেগুলোর মধ্যে আবার এমন কিছু বিদ্রোহের উত্থান ঘটেছে যাদের মৃত্যুভেরীতে নির্ঘোষে ইংরেজ রাজশক্তি বারবার থরথর করে কেঁপে উঠেছে, যাদের ভয়াবহ রোষের প্রচণ্ডতায় ব্রিটিশের মসনদ হয়ে উঠেছে টলটলায়মান। অসংখ্য কামান, বন্দুকের সামনে বর্শা, কুঠার আর তরবারীর পরাভব ঘটেছে ঠিকই, কিন্তু সেই পরাভব অকুণ্ঠ আত্মোৎসর্গের গরীমায় উজ্জ্বল। ফরায়েজী আন্দোলন, ওয়াহাবী আন্দোলন, ফকীর সন্যাসীদের বিদ্রোহ সেই গৌরবোজ্জল ইতিহাসের সড়কে এক একটা মাইলস্টোন। অথচ এদেশের ইতিহাস আমরা যখন পড়ি তাতে এইসব গৌরবের ইতিহাস প্রায় অনুল্লেখিতই থাকে। এর কারণ সাম্রাজ্যবাদের দোসর ঐতিহাসিক ও তাদের দেশীয় অনুচরদের লেখায় এ সকল ইতিহাসকে কালিমালিপ্ত করা হয়েছে এবং ঔপনিবেশিক ইতিহাসকারদের তথাকথিত ইতিবৃত্ত পাঠ করে এই অসম সাহসী আজাদীর যোদ্ধাদের আমরা দস্যু, ডাকাত, বর্বর, ফ্যানাটিক, ম্যাড মোল্লা আখ্যায়িত করতে কুণ্ঠা বোধ করি না। ফলে আমাদের ইতিহাসের এই দিগন্তের পরিচয় এখনও সাধারণ মানুষের কাছে রয়েছে অস্পষ্ট ও অজ্ঞাত। ফরায়েজী আন্দোলন আমাদের ইতিহাসের এক গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায়। বর্তমান গ্রন্থে মুখ্যত ঊনবিংশ শতাব্দীর সেই বিপ্লবের ইতিহাসের একটি পূর্ণাঙ্গ পরিচয় দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। সেই আন্দোলনের ধর্মীয় ও আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপট এবং আজকের দিনে এর প্রাসঙ্গিকতা নিয়েও করা হয়েছে যথেষ্ট আলোকসম্পাত। ইতিহাস অন্বিষ্ঠ, শিকড় সন্ধানী পাঠক এই বইয়ের মধ্যে পাবেন এক অপূর্ব সুস্বাদ।অথচ এদেশের ইতিহাস আমরা যখন পড়ি তাতে এইসব গৌরবের ইতিহাস প্রায় অনুল্লেখিতই থাকে। এর কারণ সাম্রাজ্যবাদের দোসর ঐতিহাসিক ও তাদের দেশীয় অনুচরদের লেখায় এ সকল ইতিহাসকে কালিমালিপ্ত করা হয়েছে এবং ঔপনিবেশিক ইতিহাসকারদের তথাকথিত ইতিবৃত্ত পাঠ করে এই অসম সাহসী আজাদীর যোদ্ধাদের আমরা দস্যু, ডাকাত, বর্বর, ফ্যানাটিক, ম্যাড মোল্লা আখ্যায়িত করতে কুণ্ঠা বোধ করি না। ফলে আমাদের ইতিহাসের এই দিগন্তের পরিচয় এখনও সাধারণ মানুষের কাছে রয়েছে অস্পষ্ট ও অজ্ঞাত। ফরায়েজী আন্দোলন আমাদের ইতিহাসের এক গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায়। বর্তমান গ্রন্থে মুখ্যত ঊনবিংশ শতাব্দীর সেই বিপ্লবের ইতিহাসের একটি পূর্ণাঙ্গ পরিচয় দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। সেই আন্দোলনের ধর্মীয় ও আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপট এবং আজকের দিনে এর প্রাসঙ্গিকতা নিয়েও করা হয়েছে যথেষ্ট আলোকসম্পাত। ইতিহাস অন্বিষ্ঠ, শিকড় সন্ধানী পাঠক এই বইয়ের মধ্যে পাবেন এক অপূর্ব সুস্বাদ।
জন্ম ও যশাের, ২৮ অক্টোবর, ১৯৬৩ শৈশব কৈশাের ও যশাের যশাের জেলা স্কুল ও যশাের এম. এম. কলেজ থেকে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক এবং শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ, বরিশাল থেকে চিকিৎসা বিজ্ঞানে স্নাতক। পরবর্তীতে বাংলাদেশ কলেজ অফ ফিজিসিয়ানস্ এন্ড সার্জন থেকে মনােরােগবিদ্যায় স্নাতকোত্তর এফসিপিএস ডিগ্রি অর্জন। ফাহমিদ-উররহমান মননশীল প্রাবন্ধিক ও বুদ্ধিজীবী। ছাত্র জীবন থেকে লেখালেখি ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত। বিজ্ঞানের ছাত্র হয়েও এবং পেশাগত জীবনের বাইরে তিনি নিরন্তর নিজেকে জড়িয়ে রেখেছেন সাংস্কৃতিক আত্মপরিচয় ও বৈশ্বিকভাবে বাঙ্গালি মুসলমানের স্থান নির্ণয়ের কাজে। সাহিত্যের নেশা তাকে টেনেছে। পেশার প্রাচীর তার কলম আটকিয়ে রাখতে পারেনি। নেশা তার বিচিত্র। ইতিহাস, সংস্কৃতি, শিল্পকলা, ধর্ম, সমাজ ও রাজনীতি - সকল বিষয়ে তার আগ্রহ। এর ভিতর দিয়ে তিনি তৈরি করেছেন বিশেষ দৃষ্টিভঙ্গী যা দিয়ে তিনি হাঁটেন বহু বিচিত্র পথে। শিখেছেন স্রোতের বিরুদ্ধে কথা বলতে। প্রবল সাংস্কৃতিক ও ইতিহাসচেতনা তাকে তাড়িত করে, যার ফলে তার লেখায় থাকে তত্ত্ব, তথ্য ও ভাবুকতার এক অনন্যপূর্ব আস্বাদ, যা তাকে একজন মূলত আদর্শ সমাজবিজ্ঞানী হিসেবে চিহ্নিত করে। তার এই সাংস্কৃতিক অনুসন্ধিৎসাকে বিদ্বৎসমাজ শ্রদ্ধা জানাতে বাধ্য হয়েছেন।