১৯৭১ সালে বর্বর পাকিস্তান সামরিকবাহিনীর অত্যাচার, অবিচার ও গণহত্যার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিল বাংলাদেশের মানুষ। সমাজের সর্বস্তরের মানুষ যার যতটুকু ক্ষমতা ছিল তার উপর ভিত্তি করে এই যুদ্ধে অবদান রাখতে সচেষ্ট ছিলেন। এই কঠিন সংগ্রামে লক্ষ লক্ষ মানুষ আত্মত্যাগ করেছিলেন, আহত হয়েছিলেন। নির্মম পাকিস্তানি সামরিক জান্তা পরিকল্পিতভাবে গণহত্যা ও নারীনির্যাতন শুরু করেছিল, কারণ তারা মনে করেছিল যে তাদের ভয়াবহ কর্মকাণ্ডের প্রভাব সহ্য না করতে পেরে এদেশের মানুষ তাদের কাছে আত্মসমর্পণ করবে। কিন্তু বাংলার মানুষের প্রাণশক্তি আর সাহসিকতার বিষয়ে তাদের কোনো ধারণাই ছিল না। আপামর জনগণের সম্মিলিত শক্তির কাছে তারা পরাজয় বরণ করতে বাধ্য হলো এবং লজ্জাজনকভাবে আত্মসমর্পণ করল। তারা সেদিন কেবল যুদ্ধক্ষেত্রেই পরাজিত হয়নি, ইতিহাসের পাতায়ও পরাজিত হলো। আমাদের বিজয়ের ইতিহাস গর্বের ও বেদনার। পুস্তকটিতে অত্যাচার, গণহত্যা ও বিজয়ের সেই ইতিহাসের নানান ঘটনা লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। মূলত ওরাল হিস্ট্রি বা মুখের কথার ইতিহাসকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে পুস্তকটিতে। এসব তথ্য নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরার জন্য প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। তাদের মাঝে মুক্তিযুদ্ধ চেতনা জাগ্রত করার জন্য নির্যাতন ও গণহত্যার তথ্য সম্বন্ধে তাদেরকে অবগত করা অপরিহার্য। ধারাবাহিক এই পুস্তকটি পাঠক সমাজে স্থান করে নিতে পারবে বলে আশা প্রকাশ করছি। ‘দেশটাকে ভালবেশে-১৪’ পুস্তকটি ইতঃপূর্বে প্রকাশিত ‘দেশটাকে ভালোবেসে-১’ থেকে ‘দেশটাকে ভালোবেসে-১৩’ এর ধারাবাহিকতায় বিটিভি ও বিটিভি ওয়ার্ল্ডে প্রচারিত মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক অনুষ্ঠান ‘দেশটাকে ভালোবেসে’- এর উপর ভিত্তি করে রচনা করা হয়েছে।