ইমাম আজমের ওফাতের প্রায় শত বছর পরে আগমন ঘটে ইমাম আবু জাফর ত্বহাবির। একপর্যায়ে তিনি নিজেই হয়ে ওঠেন আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাতের ইমাম। তখনো নিজের পক্ষ থেকে কোনো আকিদা না লিখে ইমাম আবু হানিফার আকিদা পুনর্বিন্যস্ত করেন, যা পরবর্তীতে ‘আকিদাহ ত্বহাবিয়্যাহ’ নামে গোটা জগতজুড়ে খ্যাতি লাভ করে। আজও যা আহলুস সুন্নাহর সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য এবং সর্বাধিক পঠিত ও চর্চিত আকিদাগ্রন্থ। একইভাবে যখন ইমাম আবু মনসুর আল-মাতুরিদি আগমন করেন, তিনিও আকিদার ক্ষেত্রে নিজস্ব ও ‘স্বতন্ত্র মাযহাব’ প্রতিষ্ঠার পরিবর্তে ইমাম আজমের মাযহাব গ্রহণ করেন এবং যুগের প্রয়োজনে সংযোজন-বিয়োজন-পরিবর্ধন-পরিমার্জনসহ সেটাকেই নিজের মাযহাব বলে ঘোষণা করেন। একইভাবে যখন ইমাম আবুল আলা সায়েদ নিশাপুরি আগমন করেন, তিনি আকিদার ব্যাপারে নিজের পক্ষ থেকে বক্তব্য না দিয়ে ইমাম আজম ও তার শাগরেদদের বক্তব্যগুলো সংকলন করেন। তার ‘আল-ইতিকাদ’ পুস্তিকাটিও এ কারণে জগদ্বিখ্যাত হয়েছে। জগতের সব বিদ্বানের যার আকিদার অনুসারী, সেই ইমাম আজমের আকিদা কী? এ প্রশ্ন তো জাগে! সেই উত্তরেই এই পুরো বই নিবেদিত—‘ইমাম আজমের আকিদা’! উত্তরগুলো আমরা খুঁজতে চলে গেছি সেই প্রথম যুগে। দ্বিতীয় শতাব্দীতে। তখন ইমাম আজম রহ. জীবিত। পড়াচ্ছেন। সফর করছেন। ইজতিহাদ করছেন। ইবাদতে ডুবে আছেন। সংগ্রাম করছেন। ভ্রান্তি খণ্ডন করছেন। আকিদার নানান বিচ্যুত ফিরকার বিরুদ্ধে লড়াই করছেন! এই সব বিষয় আমরা কাছাকাছি থেকে দেখেছি। তার আকিদার বক্তব্যগুলো তার ‘মুখ’ থেকে গ্রহণ করেছি। তিনি আকিদা বিষয়ে যাদের কাছে চিঠি লিখেছেন, সেই চিঠিগুলো থেকে নিয়েছি। প্রাচীন সূত্রগ্রন্থাবলিতে মুখ ডুবিয়ে জানতে চেয়েছি—কী ছিল ‘ইমাম আজমের আকিদা’!
আমি মীযান হারুন। জন্ম ১৯৯৩ সালে। বরিশালে। ঢাকায় জামিয়া মুহাম্মাদিয়া ইসলামিয়া বনানী মাদরাসায় লেখাপড়া। হিফজ, দাওরায়ে হাদীস। জামিয়া ইসলামিয়া আকবর কমপ্লেক্স ঢাকায় আরবী ভাষা ও সাহিত্যের ওপর উচ্চতর ডিগ্রি। পাশাপাশি আলিয়াতে দাখিল, আলিম, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা অনার্স (অসমাপ্ত)। অতঃপর কিং সউদ বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবী ভাষা ইনস্টিটিউটে আরবী ভাষার ওপর ডিপ্লোমা। অতঃপর আকীদা ও সমকালীন মতবাদের ওপর অনার্স, মাস্টার্স, এখন এমফিল করছি একই বিষয়ে। ছোটবেলা থেকেই লেখালেখি জীবনের মূল ভালো লাগা, ভালোবাসা। অনুবাদ ও মৌলিক মিলিয়ে প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা ১৫ এর মতো। অনুবাদের মাঝে উল্লেখযোগ্য: আর রাহীকুল মাখতূম, আস সীরাতুত নববয়্যিাহ, নতুন শতাব্দীর উদ্বোধন, কে সে মুসলমান, সত্যের তুলিতে আঁকা ছবিতে যেমন তুমি হে নবী, সালাফের দরবার বিমুখতা, মিডিয়া আরবী কীভাবে শিখবো ইত্যাদি। মৌলিক আরবী কাজ: রিজালুন সানাউত তারীখ ওয়া খাদামুল ইসলাম ওয়াল ইলম ফী বাংলাদেশ। এটা বাংলাদেশী সকল ধারার আলিমদের জীবনালেখ্য। উলায়িকা আবাউনা। এটা বাংলাদেশ ভারত ও পাকিস্তারেন আলিমদের জীবনী। কিশোরদের জন্য। ভবিষ্যৎ টার্গেট: পিএচডি ডিগ্রি শেষ করা। আকীদা বিষয়েই। অতঃপর দেশে ফিরে গিয়ে মসজিদ, মাদরাসার পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ানো আল্লাহ সুযোগ দিলে। পছন্দ: বই পড়া ও লেখা। আগ্রহের বিষয়: আকীদা ও মতবাদ, তাফসীর, তুলনামূলক ধর্মতত্ত্ব, ইতিহাস, আরবী ভাষা ও সাহিত্য, দাওয়াত। ভবিষ্যতে এসব বিষয়ে শতাধিক বই প্রণয়নের ইচ্ছা আছে। অমুসলিমদের মাঝে দাওয়াতী কাজ করার বিস্তৃত টার্গেট আছে। পাশাপাশি মাদরাসা, স্কুল প্রতিষ্ঠার টার্গেট। রাজনীতিতে জড়ানোর কোনো ইচ্ছা নেই।