নৌ-কমান্ডো মো. আজিজুল আলম অতি-তরুণ বয়সে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মুক্তিমন্ত্রে দীক্ষিত হয়েছিলেন। কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রাবস্থায় রাজশাহী অঞ্চলের আন্দোলন-সংগ্রামে তাঁর ছিল উদ্যোগী ভূমিকা। ১৯৬৭ সালে বঙ্গবন্ধুর গোপন সংগঠন' নিউক্লিয়াস এর তিনি ছিলেন অন্যতম কনিষ্ঠ সদস্য। আন্দোলনের ঢেউ তাকে নিয়ে যায় বঙ্গবন্ধুর সান্নিধ্যে, স্বল্পকালের দেখায় যে স্নেহ-স্পর্শ তিনি লাভ করেন তা আজীবনের প্রেরণা হয়েছে তাঁর জন্য। সূচনা থেকেই তিনি ঝাঁপ দিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধে এবং অত্যন্ত গোপনে বাছাই ও প্রশিক্ষণ দিয়ে যে নৌ-কমান্ডো দল গঠিত হয়েছিল, তিনি ছিলেন তার অন্যতম সদস্য। যুদ্ধ শেষে তিনি ফিরে আসেন বিশ্ববিদ্যালয়ে। এমএসসি পাস করার পরপরই জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে প্রাণ দিতে হলো। তখনই দেশপ্রেমিক মুক্তিযোদ্ধাদের উপরে নেমে এলো অত্যাচার আর নির্যাতনের খড়গ। এই গ্রন্থের লেখকের প্রাণসংশয় দেখা দিলে তাঁর শ্রদ্ধাভাজন শিক্ষক প্রফেসর মুস্তাফিজুর রহমান তাঁর জন্য একটি স্কলারশিপের ব্যবস্থা করে দিলে তিনি তাঁর অধীনে পিএইচডি গবেষণা শুরু করেন। কিন্তু মাঝপথে স্কলারশিপ বন্ধ হয়ে গেলে তিনি কলেজ শিক্ষকতায় যোগ দেন। সে চাকরিতে ইস্তফা দিয়ে তিনি ১৯৭৯ সালে বাংলাদেশ) পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডে যোগদান করেছিলেন। ২০০৮ সালে অবসর গ্রহণের পরে তিনি তাঁর জীবনের সবচাইতে বড় অহংকার মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক লেখালেখি শুরু করেন। ইতিমধ্যে “একাত্তরের মৃত্যুঞ্জয়ী নৌ-কমান্ডো" ও জীবন মৃত্যু পায়ের ভৃত্ত, "বঙ্গবন্ধু থেকে শেখ হাসিনা” গ্রন্থ দুটি প্রকাশিত হয়েছে। লেখকের আজন্ম স্বপ্ন ছিল তাঁর মুজিব ভাইয়ের সান্নিধ্যে থাকার। কিন্তু ঘাতকের বুলেট তাঁর সে স্বপ্ন সাধ ভেঙ্গে চুরমার করে দেয়। তাই তিনি তাঁর পরম আরাধ্য মুজিব ভাইকে নিয়ে লেখার প্রয়াস পেয়েছেন। তিনি তাঁর লেখনির মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুকে হিমালয়ের এভারেস্ট শৃঙ্গের চাইতেও ওপরে স্থান দিয়ে বাংলাদেশের মর্যাদাকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন।