১. রাঢ়ের পাঁজির বই দেশের ইতিহাসের উপকরণ কত দিকে ছড়ানো আছে, খুঁটিয়া খুঁটিয়া জড় করিতে পারিলে পরস্পরের সাহায্যে সাঙ্গ ইতিহাস পাওয়া যাইতে পারে। আমাদের পাঁজির ইতিহাসের মধ্যে নানা ইতিহাস লুক্কায়িত আছে, তাহার দুই একটা উদাহরণ দিতেছি। পাঁজি নইলে কোন সভ্য জাতির দিন চলেনা, আমাদের ত কথাই নাই। পশ্চিম দেশে প্রত্যেক রাজ্যে পাঁজি গণিবার বহুলোক নিযুক্ত আছেন, আমাদের দেশেও ছিলেন। তাঁহারা গ্রহাচার্য। পশ্চিম ভারতে তাহাদের নাম জোশী বা জোষী (জ্যোতিষী)। বঙ্গের পূর্বাঞ্চলেও তাঁহাদের নাম ‘জোশী' ছিল, “ময়নামতীর গানে” এই নাম আছে। রাজার ‘জোশী’ রাজ্যের প্রজাদের নিমিত্ত পাঁজি গণিতেন, রাজার আদেশ কিম্বা অনুমোদন ব্যতীত পাঁজি চলিতে পারেনা। প্রত্যেক রাজার ঘড়ীআল থাকিত। ‘ঘটিকা’, এক মাপ ঘট, তাম্রনির্মিত। ইহার তলে সরু ছিদ্র থাকিত। জলে ভাসাইয়া দিলে যত সময়ে ঘটিকা জলপূর্ণ হইয়া ডুবিয়া পড়িত, তত সময়ের নাম এক ‘ঘটিকা'। ঘটিকার পরিমাণ এমন যে, এক অহোরাত্রে ঠিক ষাটি বার ডুবিত। এক ঘটিকার জলের ওজন ষাটি পল হইত। ইহা হইতে এক ঘটিকার যাটি ভাগের এক ভাগ কালের নাম ‘পল’। এক ঘটিকাকাল ইদানীং বিলাতী ঘড়ীতে ২৪ মিনিট। সপ্তঘটী বেলা হইলে রাজার সভাভঙ্গ হইত। এক এক ঘটিকা বেলা হইত, সভামণ্ডপের এক স্তম্ভে বা প্রাচীরে দণ্ডাকার চিহ্ন