বাংলাদেশ হচ্ছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় সক্রিয় বদ্বীপ। কীভাবে প্রাকৃতিক ও মানবসম্পদের নানান পরিবর্তন, ঝুঁকি ও অনিশ্চয়তা মোকাবিলা করে আমাদের টিকে থাকতে হবে ও উন্নয়নের গতি অব্যাহত রাখতে হবে, তা-ই হবে বদ্বীপ ব্যবস্থাপনার মূল বিষয়। এ বইয়ে বদ্বীপ ব্যবস্থাপনার একটি সারসংক্ষেপ তুলে ধরা হয়েছে। বাংলাদেশ হচ্ছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় সক্রিয় বদ্বীপ। এটি বিশ্বের সবচেয়ে দুর্যোগপ্রবণ অঞ্চলগুলোর একটি। প্রকৃতির সঙ্গে লড়াই করেই টিকে আছে এ দেশের মানুষ। ভবিষ্যত্ অনিশ্চয়তায় ঘেরা। ১০০ বছর পরে কী হবে, আমরা তা জানি না। তারপরও মানুষ স্বপ্ন দেখে। অতীতের অভিজ্ঞতা এবং বর্তমানের ঘটনাপ্রবাহের ভিত্তিতে তৈরি হয় রূপকল্প। ধরা যাক, ২১০০ সালে আমরা কেমন বাংলাদেশ দেখতে চাই? এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। ২১০০ সালে একটি নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছাতে হলে এখন কী করতে হবে, আগামী ১০, ২০ বা ৫০ বছরে কী কী পদক্ষেপ নিতে হবে, তার একটি ছক থাকা চাই। সে জন্য দরকার আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে বাস্তবের সংশ্লেষ এবং দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা। কীভাবে আমাদের প্রাকৃতিক ও মানবসম্পদকে নানান পরিবর্তন, ঝুঁকি ও অনিশ্চয়তাকে মোকাবিলা করে টিকে থাকতে ও উন্নয়নের গতি অব্যাহত রাখতে হবে, তা-ই হবে বদ্বীপ ব্যবস্থাপনার মূল বিষয়। পরিবর্তনশীল বিশ্বের সঙ্গে খাপ খাইয়ে টিকে থাকার প্রশ্নটি এখানে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। সে জন্য এটাকে বলা হচ্ছে অভিযোজনভিত্তিক বদ্বীপ ব্যবস্থাপনা (অ্যাডাপ্টিভ ডেলটা ম্যানেজমেন্ট)। সময়ের দাবি হলো, উন্নয়নপ্রক্রিয়ায় সমাজের সব স্তরের মানুষকে সম্পৃক্ত করতে হবে। যাঁদের জন্য উন্নয়ন, তাঁরাই হলেন মূল অংশীজন। তাঁদের জন্য দরকার ছিল বাংলা ভাষায় একটি সহজবোধ্য বিবরণ। এ লক্ষ্যেই এই বই, যেখানে তুলে ধরা হয়েছে অভিযোজনভিত্তিক বদ্বীপ ব্যবস্থাপনার একটি সারসংক্ষেপ।
সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত মহিউদ্দিন আহমদের বই ‘এক-এগারো’ও তার পূর্বে প্রকাশিত বইগুলোর মতো পাঠক মহলে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে, দিয়েছে জানা-অজানা অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য। রাজনীতি ও রাজনৈতিক দল ও এর সাথে জড়িত ব্যক্তিবর্গের সম্বন্ধে জানতে, বুঝতে এবং অনুসন্ধানী তথ্য পেতে তার বইয়ের তুলনা হয় না। মহিউদ্দিন আহমদ এর বই সমূহ হলো বিষয়ভিত্তিক গবেষণাগ্রন্থ, যেগুলোতে লেখক নিজের বিশ্লেষণী জ্ঞান কাজে লাগিয়ে কোনো একটি বিষয়ের গভীরে গিয়ে অনুসন্ধান করেছেন, তার সাথে জড়িতদের থেকে তথ্য নিয়েছেন, মিডিয়া গবেষণা করেছেন এবং বিস্তর তথ্যা ঘেটে সবচেয়ে প্রামাণ্য তথ্যটুকুই দেয়ার চেষ্টা করেছেন। ‘বাঙালির জাপান আবিষ্কার’, ‘ইতিহাসের যাত্রী’, ‘রাজনীতির অমীমাংসিত গদ্য’, ‘জাসদের উত্থান পতন: অস্থির সময়ের রাজনীতি’, ‘বিএনপি: সময়-অসময়’, ‘আওয়ামীলীগের উত্থানপর্ব: ১৯৪৮-১৯৭০’, ‘আওয়ামীলীগ: যুদ্ধদিনের কথা’, ‘এই দেশে একদিন যুদ্ধ হয়েছিল’, ‘আলোকিত মানুষ’, ‘এ্যালান পো’র শ্রেষ্ঠ গল্প’, ‘বোমা বন্দুকের চোরাবাজার’, ‘Seoul Diary’, ‘Elegy and Dream’- এর মতো পাঠকপ্রিয় বই নিয়ে মহিউদ্দিন আহমদ এর বই সমগ্র। মহিউদ্দিন আহমদ ১৯৫২ সালে ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন। গভর্নমেন্ট ল্যাবরেটরি হাই স্কুল থেকে মাধ্যমিক এবং ঢাকা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক শেষ করে ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগে। শিক্ষাজীবনে জড়িত ছিলেন ছাত্র রাজনীতির সাথেও। ১৯৭০ সালের ডাকসু নির্বাচনে মুহসীন হল থেকে সহ-সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। পরের বছর মুক্তিযুদ্ধে তিনি ‘বেঙ্গল লিবারেশন ফ্রন্ট’ এর হয়ে যুদ্ধে অংশ নেন। পরবর্তীতে দক্ষিণ কোরিয়ার সুংকোংহে বিশ্ববিদ্যালয়ে এনজিও স্টাডিজ নামক একটি বিভাগের পরিচালক হিসেবে কাজ করেন। কর্মজীবনে তিনি দৈনিক গণকণ্ঠে কাজ করেছেন। বর্তমানে নিয়মিত কলাম লিখছেন প্রথম আলো পত্রিকায়। তার লেখা অধিকাংশ বই-ই প্রকাশিত হয়েছে প্রথমা প্রকাশন থেকে।