মিউনিখের এক হোটেল থেকে বৈকালিক ভ্রমণের উদ্দেশ্যে বের হলো এক যাত্রী- ড্রাকুলার অতিথি। যেতে যেতে পৌঁছে গেল পরিত্যক্ত গ্রামের এক কবরস্থানে। এক সময় রক্তচোষার আক্রমণে ওখানকার গ্রামবাসীরা গ্রাম ছেড়ে অন্যত্র চলে যেতে বাধ্য হয়েছিল। কী আছে সেই যাত্রীর ভাগ্যে? বেঁচে ফিরতে পারবে কি সেই ভয়ঙ্কর গ্রাম থেকে? ব্রাম স্টোকারের 'ড্রাকুলা' বইটি পড়ার সময় আপনাদের মনে প্রশ্ন জেগেছে নিশ্চয়ই- জোনাথন হারকার ড্রাকুলার প্রাসাদ থেকে পালালো কীভাবে? আর সেই ঘটনা কেন-ই বা লিখে রাখল না? জমে থাকা প্রশ্নগুলো উত্তর পাবেন অবশেষে। শার্লক হোমস সিরিজের 'দ্য সাইন অফ ফোর' উপন্যাসের ডিটেকটিভ অ্যাথেলনি জোনসের কথা মনে আছে, যার ভুলভাল তদন্তে পুরো কেস জট পাকিয়ে গিয়েছিল? সেই জোনস এবার হোমসের কাছে নিয়ে এসেছে আরেকটা কেস- চুরি গেছে তিনটা 'রাণীর মূর্তি', সাথে হয়েছে খুন! হোমস কি পারবে রহস্যটার সমাধান করতে? ওয়াটসনের ভুল ডিডাকশন, আর শার্লকের সেগুলোকে পাশ কাটিয়ে নতুন সমাধান-- এমন ঘটনার সাথেই তো আমরা সচরাচর পরিচিত। কিন্তু কেমন হয়, যদি ওয়াটসনই শার্লকের আগে কোনো কেস সমাধান করে ফেলে? লেস্ট্রেডের হাত ধরে হোমসের কাছে আসা একটা কেসে ঠিক এমনটাই ঘটেছিল। ড্রাকুলা আর শার্লক হোমসকে নিয়ে লেখা চারটা ভিন্ন ভিন্ন গল্প সংকলিত হয়েছে এ বইটিতে। ব্রাম স্টোকার, অ্যান্টোনি হরোউইটজ, স্টিফেন কিংয়ের মতো মহারথীদের লেখার পাশাপাশি রয়েছে নিঝুম-এর লেখা একটা মৌলিক ছোটোগল্পও। বইটি খুলে বসুন আর হারিয়ে যান ড্রাকুলা এবং শার্লক হোমসের রোমাঞ্চকর অনন্য দুনিয়ায়।
ব্রাম স্টোকার পুরাে নাম আব্রহাম ব্রাম স্টোকার। আইরিশ এই উপন্যাসিক ও গল্পকার গােটা পৃথিবীর কাছে বিখ্যাত। ড্রাকুলা'র লেখক হিসাবে। জন্ম ১৮৪৭ সালের ৮ই নভেম্বর আয়ারল্যান্ডের ডাবলিনে।। ছােটোবেলায় দীর্ঘকাল কঠিন রোগে আক্রান্ত হয়ে। শয্যাশায়ী ছিলেন। মায়ের কাছে নানান রূপকথা আর কিংবদন্তি শুনে মূলত ভৌতিক সাহিত্যে আগ্রহ জাগে। তার। ১৮৭৫ সালে প্রকাশিত হয় উনার প্রথম উপন্যাস। ‘দ্য প্রিমরােজ প্যাথ'। পঞ্চদশ শতকের ওয়ালাচিয়ার। আলােচিত-সমালােচিত রাজকুমার ভাদ তেপস। ড্রাকুলা বা ভাদ দ্য ইম্পেলারকে নিয়ে যুবক বয়স। থেকেই প্রচণ্ড আগ্রহ ছিল তার। জে. সারিভন লে। ফানুর ‘কামিলা' পড়ে সর্বপ্রথম ভ্যাম্পায়ার ফিকশন। লেখার ইচ্ছা জাগে তার মনে।। ১৮৯৭ সালে প্রকাশিত হয় উনার সবচেয়ে বিখ্যাত উপন্যাস 'ড্রাকুলা' যেখানকার প্রধান চরিত্রটিকে তিনি। গড়ে তুলেছিলেন ভাদ দ্য ইম্পেলারের অনুকরণে। যদিও শুরুতে বইটি তেমন সাড়া ফেলেনি। ব্রামের মৃত্যুর কিছু বছর পর এই গ্রন্থটির জনপ্রিয়তা বাড়তে থাকে এবং একসময় বিশেষজ্ঞরা এটিকে কালজয়ী। গ্রন্থ হিসাবে মেনে নেন। অতিপ্রাকৃত সাহিত্যেও সবচেয়ে বিখ্যাত বই এটিই। প্রায় এক ডজন বইয়ের লেখক তিনি, তবে ড্রাকুলার। আকাশছােয়া জনপ্রিয়তার কারণে সেগুলাে নিয়ে আর। তেমন আলোচনা হয় না। তবে উনার ‘দ্য লেডি অফ। দ্য শ্রাউড', 'দ্য মিস্ট্রি অফ দ্য সি’, ‘দ্য স্নেকস পাস বইগুলাে কাল্ট ক্লাসিকের মর্যাদা পেয়েছে। এছাড়া ‘দ্য জুয়েল অফ সেভেন স্টারস’ আর ‘দ্য লেয়ার অফ। দ্য হােয়াইট ওয়ার্ম' উপন্যাস দুটিও পঞ্চাশের দশকের। পর মোটামুটি জনপ্রিয়তা পায়।। ১৯১২ সালের ২০শে এপ্রিল ইংল্যান্ডের লন্ডন শহরে। হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যান হরর সাহিত্যের এই মহান লেখক।