নাট্যজগৎ এক আনন্দময় জগৎ। নাট্যবৈচিত্র্যও বহুধাবিসৃত। বিদগ্ধজনেরা সকল কাব্য প্রজাতির মধ্যে নাটককে বলেছেন সর্বোত্তম।- কাব্যেষু নাটকং রম্যম্। নাটক কেবল দৃশ্য নয়, শ্রব্যও।- ‘দৃশ্যং শ্রব্যং চ’। নাটক এমন একটা ক্ষেত্র যেখানে আনন্দ-বেদনা, আশা-নিরাশা, সুখ-দুঃখের একত্র সমাবেশ ঘটে। ধর্ম, অর্থ, কাম সকলই নাটকের মাধ্যমে প্রাপ্তিসম্ভব, আবার নাটক বিনোদনমূলকও। ভরত তাঁর নাট্যশাস্ত্রের প্রথম অধ্যায়ে নাট্যোৎপত্তি, নাট্যভাবনা, নাট্যবিষয়ের বিভিন্ন দিকসহ নানা নান্দনিক দিকের কথা উল্লেখ করেছেন। নাটক যথার্থই ‘লোকবৃত্তানুকরণম্’। ভবভূতি উঁচু মাত্রার একজন সৃষ্টিশীল নাট্যকার। তাঁর সময়ের ভাবনায় তিনি রামায়ণের কাহিনিকে নতুনভাবে উপস্থাপন করেছেন। মহাবীরচরিতের মধ্যেও রূপান্তর ভাবনাই কাজ করেছে। কিছু ঘটনাকে, কিছু চরিত্রকে তিনি নতুনভাবে উপস্থাপন করতে চেয়েছেন। দর্শক-পাঠকের একাংশ এটা গ্রহণ করেছে আবার একাংশ গ্রহণ করেনি। গ্রন্থটিতে সঠিকভাবে এই নব ভাবনা এবং উপস্থাপন বিস্তৃতভাবে আলোচনার চেষ্টা করা হয়েছে। স্বাভাবিকভাবে নাট্যকারের চরিত্রচিত্রণ এবং নাট্যকৌশল প্রয়োগ প্রধান আলোচ্য হয়েছে। বিভিন্ন দিক পর্যালোচনা করে ভবভূতির নাট্যনির্মাণের কিছু দুর্বল দিক নির্দেশ করে তাঁর মূল উদ্দেশ্য ব্যাখ্যা করে মহাবীরচরিতকে একটি উল্লেখযোগ্য নাটক হিসেবে পরিগণিত করা হয়েছে।