এত প্রাণ থাকতে একমাত্র পাখিই পেয়েছিল আকাশে ওড়ার ছাড়পত্র। কৃত্রিমতা, যান্ত্রিক সহায়তা ছাড়াই স্বচ্ছন্দ সাবলীল আকাশচারণ। ডাঙার জীব শূন্যে দু পা বাড়াল, পিঠের দুপাশে গজাল নরম পালক ঢাকা দুটো ডানা। শুধু বৈচিত্র্যের নেশায় এ বদল নয়, প্রয়োজনের তাগিদে প্রকৃতি ওদের মাটিছাড়া করল। সৃষ্টির আঁতুড়ঘর থেকে বর্তমান যুগ, প্রায় সাড়ে চার কোটি বছর পার করতে গিয়ে বহুবার প্রলয়ের মুখে পড়েছে এই পৃথিবী। ধ্বংস, নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে বহু প্রাণ। বদলে গেছে ভূতত্ত্বের গঠন। সাগর মরুভূমি হয়ে গেছে, বিস্তৃত পাহাড় ভেঙে তছনছ করে বয়ে গেছে সমুদ্রের জলরাশি। প্রত্যেক ধ্বংসের পর নতুন করে সেজে উঠেছে প্রকৃতি। নতুন প্রাণের আগমন, বিবর্তন, পরিবর্তন, বৃদ্ধি একসময় আবার ধ্বংস। সৃষ্টি আর ধ্বংসের কোনও এক বিশেষ সীমানাকালে আকাশে উড়েছিল পাখি। কে ছিল তার পূর্বসূরী, তারা কি আজকের পৃথিবীতে স্থান পেয়েছে? যদি না-ও পায় তাহলেও পাখি গোত্রহীন নয়। সেই বিশেষ প্রাণ সমন্বয়, যাদের একটু একটু করে বদলে প্রকৃতির বুকে সৃষ্টির অপূর্ব উপহার পাখি। বদলও তো অবিচ্ছেদ্য, একমুখী নয়। পৃথিবীতে আনতে, তাকে স্বচ্ছন্দ আকাশচারী করতে সৃষ্টির ঘনঘন মাথা নাড়া আর পশ্চাদ্ধাবন। সেই অবস্থাতেও জন্ম নিয়েছে বিচিত্র সব জীব। পাখি জন্মের সুলুকসন্ধান, বিবর্তনের পথে এদের উত্থান পতন আর উড্ডীয়নের ধারাবাহিক গল্পে ধরা দিয়েছে বাইশ কোটি বছরের প্রাক্-ঐতিহাসিক দুনিয়া।