ঘোর দুর্দিনে রয়েছে গণতন্ত্র। বিশ্বের বিভিন্ন দেশেই এমন প্রবণতা বাড়ছে। গণতন্ত্রের নামে ক্ষমতা গ্রহণের পরে অনেক বেসামরিক সরকার হয়ে পড়ে বড় মাপের একনায়কতান্ত্রিক ও স্বৈরচারী। আন্তর্জাতিক গবেষণা সংস্থাগুলো বলছে, পুনরায় গণতন্ত্রের এখন বিপরীতমুখী যাত্রা হচ্ছে বিশ্বের বহু দেশে। এক সময়ের সামরিক শাসকরা যা যা করত-বেসামরিক নেতৃত্ব এখন কোনো কোনো ক্ষেত্রে তাই করছে; কখনো কখনো এর চাইতেও বেশি। ঔপনিবেশিক শাসন— উত্তর সমাজ ও রাষ্ট্রগুলো দীর্ঘমেয়াদী গণতন্ত্রের বদলে পেয়েছে দফায় দফায় সামরিক শাসন এবং একনায়ক-স্বৈরাচারী বেসামরিক নেতৃত্ব। ১৮ শতকের প্রথম থেকে এ পর্যন্ত সময়ে অন্তত চার দফা গণতন্ত্রের তরঙ্গ ও বিপরীত তরঙ্গ অর্থাৎ গতিময়তা অথবা অধোঃগতি প্রত্যক্ষ করেছে। বাংলাদেশেও গণতন্ত্র নানা ঘাত-প্রতিঘাতের মধ্য দিয়ে চলছে। পণতন্ত্রহীনতা এ দেশের নিত্যসঙ্গী। গণতন্ত্র অর্জনের প্রবল প্রচেষ্টা-সংগ্রাম এবং আকাঙ্ক্ষা ব্যর্থ হয়েছে বার বার। দুই দফার সরাসরি এবং গণতন্ত্র মেরামতের নামে এক দফার মুখোশধারী সামরিক শাসনও প্রত্যক্ষ করেছে বাংলাদেশ। দীর্ঘ লড়াই সংগ্রামের পরে সামরিক শাসনোত্তর সময়ে যেসব ব্যবস্থাবলী গ্রহণ জরুরি ও অনিবার্য ছিল- বেসামরিক শাসকদের সীমাহীন ব্যর্থতা বরং নিত্য নতুন সমস্যার জন্ম দিয়েছে গণতন্ত্র চর্চার ক্ষেত্রে। বাংলাদেশে সংকটে থাকা গণতন্ত্র এবং সামরিক শাসনের নানা দিক বিশ্লেষণ ও পর্যালোচনা জরুরি। কেন সংকটে রয়েছে গণতন্ত্র, বারবার সেনা শাসনের কারণ ও এর জন্য বেসামরিক রাজনৈতিক নেতৃত্বের দক্ষতা ও প্রজ্ঞার ঘাটতি, সামরিক শাসনোত্তর ব্যর্থতা এবং দেশীয় ও আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপট নিয়ে দীর্ঘ গবেষণা ও বিশ্লেষণ করা হয়েছে এ বইয়ে। এ কারণেই বইটি পড়া জরুরি।