ঢাকাসহ অন্যান্য বড় শহরে মাটির অস্তিত্ব দিনদিন কমে আসছে। হারিয়ে যাচ্ছে খোলামেলা জায়গা। আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবনে ছেয়ে যাচ্ছে গোটা শহর। ইট- কাঠের বদলে দ্রুতই বৃদ্ধি পাচ্ছে ইস্পাতের কাঠামো ও কাচে মোড়ানো বহুতল ভবন। কাচে মোড়ানো দরজা-জানালায় ও বাণিজ্যিক ভবনের টেকসই স্থাপনার জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে হালকা, কিন্তু শক্তিশালী ধাতব পাত, ফাইবার ও গ্লাস। এতে তাপমাত্রা আরো বেড়ে যাচ্ছে, কারণ সূর্য থেকে তাপ ও আলো ধাতব ও কাচের কাঠামোর একটিতে পড়ে অপরটিতে প্রতিফলিত হয়। বারংবার প্রতিফলনের কারণে কিছু নির্দিষ্ট এলাকার তাপমাত্রা আশেপাশের এলাকার তুলনায় বেড়ে যায় এবং শহরজুড়ে তৈরি হয় অসংখ্য হিট আইল্যান্ড বা তাপ দ্বীপ। এহেন প্রতিকূল অবস্থা নিরসনে শহরে ভবনের ছাদে কিংবা এর কাঠামোতে বাগান করা গেলে বাগানের গাছ অতিরিক্ত তাপ শুষে নেবে এবং গাছের দেহ থেকে যে পানি প্রস্বেদন প্রক্রিয়ায় বেরিয়ে যাবে, তা সেই স্থানের তাপমাত্রা কয়েক ডিগ্রি কমিয়ে আনতে পারে। অসংখ্য ছাদ বাগান বা শহুরে গাছপালা এ প্রক্রিয়ায় শহরের উচ্চ তাপমাত্রাকে কমিয়ে আনা কঠিন কোনো কাজ নয়। অপরিকল্পিত ছাদ বাগান কেবল সময়, অর্থ অপচয়ই করায় না, সেই সাথে ভবনেরও নানা ক্ষতি করে। তাই কিছু মৌলিক বিষয়ের প্রতি লক্ষ রেখে ছাদ বাগান গড়ে তোলা প্রয়োজন। এসব নানাবিধ বিষয় মাথায় রেখে পরিকল্পিতভাবে ছাদ বাগান করতে আগ্রহী বা যাদের ছাদ বাগান আছে, সেগুলোতে তারা কীভাবে সুন্দরভাবে পরিচর্যা করতে পারেন এসব বিষয়াবলি মাথায় রেখে প্রণীত হলো আমা কর্তৃক লিখিত ও সম্পাদিত পুস্তক “ছাদ বাগানের পূর্ণাঙ্গ গাইড"।
কৃষিবিদ ড. মাে. আখতারুজ্জামান, সংস্কৃতির রাজধানী খ্যাত কুষ্টিয়া জেলার সদর উপজেলার দুর্বাচারা গ্রামে ১৯৬২ সালে জন্মগ্রহণ করেন। স্কুল শিক্ষক প্রয়াত বাবা এবং প্রচণ্ড ধীশক্তির অধিকারিনী মমতাময়ী মায়ের স্নেহের পরশে নিজ গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষা সমাপনান্তে কুষ্টিয়া জেলা স্কুল হতে ১৯৭৮ সালে এসএসসি, কুষ্টিয়া সরকারি কলেজ থেকে ১৯৮০ সালে এইচএসসি, পাশ করে ময়মনসিংহস্থ বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে সেখান থেকে কৃষিতে কৃতিত্বের সাথে ১৯৮৪ ও ১৯৮৫ সালে স্নাতক সম্মান ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করত: ১৯৮৬ সালের ৮ম রেগুলার বিসিএস পরিক্ষায় চুড়ান্তভাবে উত্তীর্ণ হয়ে কৃষি ক্যাডারের সদস্য হিসেবে চাকুরি জীবন শুরু করেন ১৯৮৯ সালে। সরকারি বৃত্তিতে যুক্তরাজ্যের রেডিং বিশ্ববিদ্যালয়ের কোলাবােরেশনে ১৯৯৯ সালে কীটতত্তে ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জন করেন। চাকুরি জীবনে তিনি কৃষির বহুমুখী সেক্টর ও উন্নয়ন সহযােগিদের সাথে কাজ করে মাঠ ফসল, উদ্যান ফসল, বীজ প্রত্যয়ন, উদ্ভিদ সঙ্গনিরােধ, বালাই ব্যবস্থাপনা, মাটির স্বাস্থ্য সুরক্ষা, কৃষি প্রশিক্ষণ প্রভৃতি বিষয়ে বিপুল বাস্তব অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন। যুক্তরাজ্য, চীন, ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যাণ্ড, ভারত প্রভৃতি দেশ থেকে গ্রহণকৃত একাডেমিক শিক্ষা, প্রশিক্ষণ, শিক্ষা সফরে নেতৃত্বদান, আন্তর্জাতিক সেমিনারে রিসাের্স স্পীকার, লীড স্পীকার ও কীনােট স্পীকার হিসেবে বক্তব্য প্রদান করে তিনি ভীষণভাবে সমাদৃত হয়েছেন। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে গেস্ট লেকচারার হিসেবে দেড় যুগ কাজ করার বর্ণিল অভিজ্ঞতা রয়েছে। ভার্চুয়াল প্লাটফর্মে ক্লাস পরিচালনা করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএ’তে। প্রতিটি কর্মস্থলেই তার উদ্ভাবনী কাজের সন্ধান মেলে। প্রচণ্ড বিদ্যানুরাগী ও সৃষ্টিশীল প্রতিভার অধিকারি এই মানুষটি কৃষির বাইরেও মনস্তত্ব, মােটিভেশন, তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ে ব্যাপক পড়াশুনা করত: প্রচুর লেখালেখিও করেন। তিনি জাতীয় কৃষি প্রশিক্ষণ একাডেমির মহাপরিচালকের সফল দায়িত্ব পালন শেষে বর্তমানে অবসরােত্তর ছুটিতে আছেন। পদস্থ সরকারি চাকুরে একাধিকবার জাতীয় পুরস্কারে ভূষিত সহধর্মিনী, কর্মজীবী পুত্র, বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকোত্তর পড়ুয়া একমাত্র আত্মজাকে নিয়ে সদা হাস্যময় ইতিবাচক মানসিকতার এই মানুষটির রয়েছে এক সুখময় পারিবারিক জীবন। তাঁর নিজের ডিজাইন করা সুবিন্যস্ত ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট (www.drakhtaruzzaman.info) ব্রাউজ করলে তাঁর সৃষ্টিশীলতা, যােগ্যতা, দক্ষতাসহ বহুমাত্রিক ও অতলান্তিক জ্ঞানের সন্ধান মিলবে।