বিশ্বজুড়ে নানা ধরনের অশান্তি বিরাজ করছে। রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক, সামাজিক প্রতিটি ক্ষেত্রে মানুষের বেঁচে থাকার পথে অন্তরায়রূপী নানান বিষয় ঘটে চলেছে। তবুও মানুষকে আশা নিয়ে বাঁচতে হয়। সেই আশাবাদ জাগাতে ও স্বপ্ন-আকাঙ্ক্ষার প্রতীক ধরে রাখতে প্রতি বছরের মতো ‘পেন্সিল’-এর সপ্তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে প্রকাশিত হচ্ছে ‘পেন্সিল ম্যাগাজিন ২০২৩’। বাংলা সাহিত্যের পরিচর্যা ও নবীনদের সাহিত্য পরিমণ্ডলসহ সকল সৃজনশীল মাধ্যমের বিকাশ ঘটাতেই ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৬ খ্রিষ্টাব্দে অন্তর্জালে গড়ে ওঠে ‘পেন্সিল’। পেন্সিলকে সৃষ্টি করার আড়ালে উদ্বুদ্ধ হওয়া সকলের চেতনায় আছে বাঙালিত্বের সাধনা, মুক্তিযুদ্ধের অহংকার এবং প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতিচর্চা ছড়িয়ে দেওয়ার অভিপ্রায়। শিশু থেকে প্রাপ্তবয়স্ক এবং সকল সদস্যের মধ্যে নান্দনিকতা, মানবিকতা ও সৃজনশীলতার বিকাশ ঘটাতে পেন্সিল নিজ প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। শুধু লিখতে বা গাইতে নয়, মনোযোগী পাঠক হয়ে পড়তে, শ্রোতা হিসেবে শুনতে কিংবা তুলির আঁচড়ে নতুন কিছুর উন্মেষ ঘটাতে পেন্সিলের সদস্যরাও এগিয়ে এসেছেন অকুণ্ঠচিত্তে। আমরা লক্ষ করি, বাংলাদেশে নানা কারণে রাজনৈতিক অস্থিরতা বিরাজ করছে। আবার করোনা মহামারির পর ডেঙ্গু জ্বরে মানুষের প্রাণহানী ঘটে চলেছে প্রতিনিয়ত। পাশাপাশি বিশ্ববাসী দেখে যাচ্ছে রাশিয়া-ইউক্রেন, ইসরায়েল-হামাস’সহ বিবিধ গোষ্ঠী যুদ্ধে লিপ্ত। ইতোমধ্যে এসব যুদ্ধের প্রভাব বিশ্ববাসী উপলব্ধি করছেন। বাংলাদেশের মতো তৃতীয় বিশ্বের দেশের মানুষ যখন ‘যুদ্ধ নয় শান্তি’ বার্তায় উজ্জীবিত ঠিক সেই সময়েই উন্নত রাষ্ট্রসমূহের এই ‘যুদ্ধ যুদ্ধ খেলা’ পৃথিবীকে বার বার নানান সংকটের মুখোমুখি করেছে। ফলে মানবতার বিনষ্টিসহ নানামাত্রিক বিপর্যয় প্রতিনিয়ত মোকাবিলা করতে হয় মানুষকেই। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে বিশ্বব্যাপী যে অর্থনৈতিক মন্দার চিত্র ফুটে উঠেছে, নিত্যনৈমিত্তিক দ্রব্যাদির প্রতিনিয়ত মূল্য বৃদ্ধি ঘটছে—তার সমগ্র দায়ভার সাধারণ মানুষকেই বহন করতে হচ্ছে। ফলত, আমরাও শান্তিপ্রিয় মানুষের মতোই বলতে চাই, আমরা যুদ্ধ চাই না—শান্তি চাই। সেই রাষ্ট্রীয় সেবকদের প্রতি আহ্বান আপনারা কল্যাণমূলক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় ব্রতী হোন। কল্যাণমূলক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা হলেই কেবল পৃথিবীর প্রতিটি মানুষ বেড়ে উঠতে সক্ষম হবে নিরাপদ আশ্রয়ে। প্রতিবারের মতো এবারের ম্যাগাজিনেও স্থান করে নিয়েছে গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ, ভ্রমণ, স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা এবং রেসিপি’সহ নানান কিছু। পেন্সিলের ম্যাগাজিন সম্পাদনা পর্ষদ চেষ্টা করেছে অজস্র লেখা থেকে বাছাই করে পাঠকের হাতে সবচেয়ে আকর্ষণীয়রূপে ম্যাগাজিনটিকে তুলে দেওয়ার। এবারের ম্যাগাজিনের বিভিন্ন লেখার অলংকরণ করার মাধ্যমে মিনহাজ আহমেদও আমাদের ঋণী করেছেন। তার এই অলংকরণ রচনাগুলোকে নান্দনিকভাবে উপস্থাপনে সহায়তা করেছে। সবশেষে একটি নান্দনিক ও আকর্ষণীয় ম্যাগাজিন প্রকাশের প্রয়াসে পাঠকদের অনুকূল সাড়া পাওয়ার প্রত্যাশা রইল।