ভগীরথী নদীর তীরে পলাশী প্রান্তর। সেখানে এক বিশাল আম বাগান। ইতিহাসে পলাশীর আম্র কানন নামে পরিচিত। ১৭৫৭ সালের ২৩ জুন সকালে এই আম বাগানে একটি যুদ্ধ হলো বাঙালি আর ইংরেজ সৈনিকদের মধ্যে । বাঙালিদের পক্ষে সৈনিক ছিল ৩৫ হাজার আর ইংরেজ ছাউনিতে সৈনিকের সংখ্যা মাত্র ৩ হাজার । এত বেশি সৈন্য নিয়েও সেদিন যুদ্ধে হেরে গিয়েছিল বাঙালিরা। কারণ সব সৈন্য যুদ্ধ করল না, বেশিরভাগই দূরে দাঁড়িয়ে তামাশা দেখলো । এক সময় যুদ্ধ থেমে গেল। স্বাধীনতার যে সূর্যটা বাঙালির হাতে ছিল সর্বশক্তি দিয়েও তা আর ধরে রাখা গেল না। যুদ্ধের নায়ক শেষ পর্যন্ত পরাজিত হয়ে পালিয়ে গেলেন। কিন্তু তারপরও প্রাণে বাঁচতে পারলেন না। শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করার আগেও তাঁর মুখে ছিল বাংলার নাম, বাংলার প্রতি গভীর ভালবাসা । এতক্ষণ যে যুদ্ধের কাহিনী বলা হলো তা ছিল বাঙালি জাতির পরাধীন হওয়ার কাহিনী । ১৭৫৭ সালের ২৩ জুন পলাশীর আম বাগানে ওই যুদ্ধে পরাজিত হন বাংলার শেষ স্বাধীন শাসনকর্তা নবাব সিরাজদ্দৌলা । নবাব সিরাজদ্দৌলার দেশ প্রেমের কোনও অভাব ছিল না। তিনি ছিলেন অতিশয় নরম মনের। দেশকে ভালবাসতেন প্রাণ দিয়ে। কিন্তু শাসন কাজ চালানোর জন্য যে পরিমাণ কঠোর হওয়া দরকার তা তিনি হতে পারেননি। তিনি ভালবাসতেন মানুষ, ভালবাসতেন দেশ। ভালবাসা দিয়েই শত্রুমিত্র সকলের মন জয়