প্রাচীন শ্রীহট্টের প্রতাপগড় রাজ্য ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ এক অধ্যায়। উপমহাদেশের ইতিহাস সমৃদ্ধ হয়েছে এই রাজ্যের ভূমিকায়। প্রতাপগড় রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেছিলেন বিশ্ববিজেতা পারস্য সম্রাট তৈমুর লংয়ের পৌত্র মালিক মোহাম্মদ সুলতান মির্জা ওরফে মির্জা মালিক তুরানী। তাঁর উত্তরাধিকারীরা ছিলেন অসাধারণ দেশপ্রেমিক। এই রাজবংশে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর কয়েকজন বিপ্লবী শিষ্য ও একাত্তরের বীর মুক্তিযোদ্ধা জন্মেছেন। তাঁদের নৃতাত্ত্বিক পরিচয় ও পুরুষানুক্রমিক শৌর্যবীর্যের আখ্যান সপ্রমাণ এ—গ্রন্থে সবিস্তারে ওঠে এসেছে। মোঙ্গল জাতির পিতা বিশ্বজিৎ চেঙ্গিস খান ও পরবর্তীকালে তাঁর পরোক্ষ বংশধর বিশ্বজিৎ তৈমুর লং ভারত আক্রমণ করেছেন, কিন্তু তাঁরা দুজনেই বাংলার শৌর্যবীর্য্যের সংবাদ পেয়ে আক্রমনের থাবা না বসিয়ে কেবল দিল্লি জয় করে ফিরে গেছেন। তবে তৈমুর ছিলেন অতীব দূরদর্শী এক বীরযোদ্ধা এবং শাসক। তাঁর সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনার পথ ধরে দিল্লিসহ সমগ্র হিন্দুস্তানের বেশিরভাগ ভূখণ্ডই শাসন করতে পেরেছে তাঁর পরবর্তী বংশধররা! এর সূচনা ঘটেছিল তাঁরই পৌত্র মির্জা মালিক তুরানী কর্তৃক বঙ্গদেশের শ্রীহট্টে প্রতাপগড় রাজ্য প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে। পরবর্তীকালে সেই লক্ষ্যটি পুরোপুরি সফল হয়েছিল তৈমুরের প্রপৌত্র মির্জা জহির—উদ্দীন মোহম্মদ বাবর কর্তৃক ভারতে মুঘল সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে। এ মুঘল বংশ দীর্ঘ পৌনে চারশো বছর ভারত শাসন করেছিলো। ভারতবর্ষ নিয়ে দূরদর্শী তৈমুর যে স্বপ্ন এঁকেছিলেন, কীভাবে তার যথাযথ বাস্তবায়ন হল, এই গ্রন্থে লেখক তার বিবরণ তুলে ধরেছেন।