ছবি আঁকা প্রসঙ্গে কিছু কথা শিশুদের প্রথম ছবি আঁকতে চাইলেই মনে পড়বে যে, ছবিটা কোন দিক থেকে আঁকা শুরু করব? উপর থেকে নীচে, না বাম থেকে ডানে- কোন দিক থেকে শুরু করলে ভালো হবে? শিশুদের মনে এমন প্রশ্ন জাগাটাই স্বাভাবিক। যাই হোক তারপর কিছুক্ষণ আঁকা-আঁকি করে যখন দেখে ছবির মত করে অবয়ব আসে না তখন সে বিরক্ত হয় এবং ছবি আঁকার প্রতি শিশু আগ্রহ হারিয়ে ফেলে। সকল শিশুই কোনো না কোনো প্রতিভা নিয়ে জন্মায়। সেই সুপ্ত প্রতিভা চর্চার অভাবে প্রকাশ পায় না। আমরা তার অংকন প্রতিভাকে হাতে কলমে শেখাতে সহায়তা করি। শিশুর মন কাঁদামাটির মত নরম এবং কোমল। কাঁদামাটি যেমন নিজের মত যেমন খুশি তেমন গড়া যায়, তেমনি শিশুকেও সহজে গড়ে তোলা যায়। তাই অনেক দিন ধরেই ভাবছিলাম শিশুদের চিত্র অঙ্কনের উপর ভালো দিক-নির্দেশক একটি বই প্রকাশ করব। নির্ভুল, সহজপাঠ্য, মানসম্মত ও শিশুসুলভ একটি বই। শিশুদের ছবি আঁকার উপর আমার সমস্ত চিন্তা ভাবনাগুলি একত্রিত করে একটি নতুন ধারায় নতুন পদ্ধতিতে বইটি প্রকাশ করলাম। বইটি শিশুদের চিত্র অংকন শেখাতে বাজারের অন্যান্য বইগুলো থেকে নিঃসন্দেহে এক ধাপ এগিয়ে থাকবে। এই বইটিতে প্রতিটা ছবির বিষয়বস্তুগুলি খন্ড খন্ড ভাগে অঙ্কন করে ছবি আঁকার কৌশলগত দিক দেখানো হয়েছে। ছবির প্রাথমিক রং থেকে শুরু করে শেষ রং টা কেমন হবে তারও বর্ণনা বিশেষভাবে দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া বইটির বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো মূল ছবিটিকে রূপান্তর করে লিখিত আকারে বর্ণনা দেওয়ার চেষ্টা করেছি। শিশুদের মনে যদি ছবি আঁকা সংক্রান্ত কোন প্রশ্নও জাগে, তবে সে বর্ণনা থেকে তার উত্তর পেয়ে যাবে বা অভিভাবকবৃন্দও সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজে দিতে পারবেন। অনেক ভেবে প্রকাশক বইটির নাম দিলেন 'ভাবনার ছবি আঁকা'। বইটি প্রকাশের পূর্বে, আমরা একটি ছোট সামাজিক নিরিক্ষা চালাই। এই পর্যবেক্ষণ থেকে আমরা এই বইয়ের সফলতার ব্যাপারে আশাবাদী। শিশুরা সহজেই ছবির বিষয়বস্তু আয়ত্ব করতে এবং বুঝতে পারে। ছবি আঁকার সহজ কৌশল, সঠিক পন্থা এবং শিশু মনের যাবতীয় প্রশ্নের উত্তর-এর সমন্বয় আমরা এই বইয়ে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। আমার দীর্ঘ অভিজ্ঞতা এবং নিরলশ পরিশ্রমের ফসল এই বইটি। শিশুরা যদি সঠিক অনুশীলন চালিয়ে যায়, আমার একান্ত বিশ্বাস অবশ্যই চিত্র অঙ্কনে শিশুরা যথেষ্ট ভালো করবে। সবশেষে, সকল সোনামণিদের প্রতি রইল আমার অনেক আদর ও প্রাণঢালা ভালবাসা। বইটি সমন্ধে যে কোন পরামর্শ সাদরে গৃহীত হবে। ধন্যবাদান্তে সীমান্ত শংকর চক্রবর্তী