জীবন আমাদেরকে দর্শন শেখায়; জীবনদর্শন। আমরা উপলব্ধি করি, আমরা ভাবি। আমরা অনুধাবন, অনুসন্ধান করি। প্রশ্ন করি; কী কেন আর কীভাবে? এটা কেন? এভাবে কেন আর কেন নয়-এসব প্রশ্নের উত্তরগুলো আমাদের মস্তিষ্ক যখন জানার জন্য ব্যাকুল হয়ে ওঠে-প্রকৃতপক্ষে তখনই আমরা দৈবদর্শন লাভ করি। এজন্যই আল্লাহ তাআলা পবিত্র কুরআনে বলেছেন, 'যে জানে আর যে জানে না, তারা কি কখনো এক হতে পারে?' [৩৯: ৯] না, পারে না। সম্ভবই না। একজন স্কুলশিক্ষক জীবনে যত লেখাপড়াই করুক না কেন, ক্লাসে ঢোকার আগে অন্তত ১০ মিনিটের জন্য হলেও সেদিনের লেকচারটায় তিনি যদি একবার চোখ বুলিয়ে না আসেন, তো সেদিনের ক্লাসে তার উপস্থাপনার ধরনটাই পালটে যায়। তথাপি সব শিক্ষা কেবল বই পড়লেই আয়ত্ত করা যাবে, এমনও না। সাইকেল কীভাবে চালাতে হয়, সাঁতার কীভাবে কাটতে হয়, কীভাবে মাঠে লাঙল চালাতে হয়-পৃথিবীর কোনো পুস্তক এ সমস্ত বিষয়ে আমাকে প্রকৃত জ্ঞান ও উপলব্ধির জোগান দিতে পারবে না। সন্তান যখন জন্মলাভ করে, তখন আনাড়ি এক তরুণীও কীভাবে যেন হঠাৎ করে মা বনে যান; অথচ তার না ছিল পূর্ব-অভিজ্ঞতা আর না পুস্তকজ্ঞান। তথাপি মাতৃত্বের এমন এক অনুপম দৃষ্টান্ত তিনি স্থাপন করে দেখান, যা হৃদয়ের সমস্ত তন্ত্রে ভাবনার বীজ বুনে দিয়ে যায়। জীবনের দর্শন আসলে এমনই। ক্ষেত্রবিশেষে ভিন্ন ও অভিন্ন। কাস্তে আর কুড়ালে যে তফাত। রাত আর দিনেরও সেই একই তফাত। একই তফাত পুরুষ আর নারীতেও। তাদের উপলব্ধি ও চিন্তায়ও-জীবনের এই ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র দর্শন ও উপলব্ধিকে পুঁজি করেই আমাদের এবারের আয়োজন 'মুঠো মুঠো রোদ্দুর'। জীবনের ভাঁজে ভাঁজে মুঠো মুঠো রোদ্দুর ছড়িয়ে পড়ুক। আঁধার ঘুচে গিয়ে স্বচ্ছ ও নির্মল আলোর ব্যাপ্তি ঘটুক। চিন্তাহীন চিন্তাজগতে ভাবনার অঙ্কুর জাগুক। সেই প্রত্যাশা।