মানব জাতির প্রতি আল্লাহর সবচে বড় অনুগ্রহগুলোর একটি হলো কুরআনুল কারীম। কুরআন আমাদের পথপ্রদর্শক। কুরআন আমাদের অন্ধকার থেকে আলোর পথে চালিত করার দিকনির্দেশক। কুরআন সত্যিকারের উন্নতি-অগ্রগতির মাধ্যম। কুরআনের সাথে নিবিড় সম্পর্ক স্থাপন করা মুমিনের কর্তব্য। প্রতিদিন কুরআনের জন্য কিছু সময় বরাদ্দ রাখা আমাদের জরুরি দায়িত্ব। অথচ আমাদের বেশিরভাগ মানুষের কুরআনের সাথে দূরতম সম্পর্কও নেই।
রমাদান কুরআন নাযিলের মাস। প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রমাদানে জিবরীলের সাথে কুরআন শোনাশুনি করতেন। আমরা অনেকে রমাদানে কুরআন তিলাওয়াত করি, খতম দিই। তবে সবচেয়ে বেশি কুরআনের সান্নিধ্য লাভ হয় তারাবীহতে। তারাবীহতে কুরআনের হাফেজদের সুললিত কণ্ঠের তিলাওয়াত আমাদেরকে মুগ্ধ করে। কিন্তু পরিতাপের বিষয় হলো, তারাবীহর তিলাওয়াতে আল্লাহর কালাম আমাদেরকে কী নির্দেশনা দেয়, তা খুব কম মানুষই বুঝতে পারেন। তারাবীহর সালাতে কুরআনের বার্তা বইটি সে অভাবমোচনের প্রয়াস মাত্র। আমরা যদি তারাবীহর তিলাওয়াতের মাধুর্য উপভোগের পাশাপাশি মর্মও অনুধাবন করতে পারি, উপলব্ধি করতে পারি আল্লাহর বার্তাগুলো— তাহলে আমাদের তারাবীহ পরম অর্থবহ এবং অত্যন্ত তৃপ্তিদায়ক হয়ে উঠবে।
আমাদের দেশে প্রায় সব মসজিদে সাতাশ তারাবীহতে কুরআন খতমের প্রচলন আছে। সে হিসেবে প্রতিদিনের তারাবীহতে পঠিতব্য অংশের ঘটনাবলি, ঈমান-আকীদা, আদেশ-নিষেধ, হালাল-হারাম, দৃষ্টান্ত, দোয়া এবং গুরুত্বপূর্ণ আয়াতসমূহের নির্যাস তুলে ধরা হয়েছে এই বইয়ে। এ ছাড়াও আজকের শিক্ষা নামে সংশ্লিষ্ট পারার গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষনীয় বিষয়গুলো তুলে আনা হয়েছে। তারবীহর সালাতে যাওয়ার আগে অথবা পরে যদি সেদিনের তারাবীহর পঠিতব্য অংশ কেউ নিয়মিত পড়তে পারেন, আশা করা যায়, মাস শেষে তিনি পুরো কুরআন সম্পর্কে একটা ধারণা পেয়ে যাবেন। শুধু রমাদানই নয়, রমাদানের বাইরেও কুরআনের সারমর্ম অনুধাবন ও কুরআনের সাথে নিবিড় সম্পর্ক তৈরি করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে এই বই, ইনশাআল্লাহ।
মহান আল্লাহ আমাদের ভুল-বিচ্যুতি ক্ষমা করে বইটিকে উপকারী এবং আমাদের নাজাতের মাধ্যম হিসেবে কবুল করুন। আমীন।
শায়খ আহমাদুল্লাহ একজন সুপরিচিত ইসলামী বক্তা। তিনি ১৯৮১ সালের ১৫ ডিসেম্বর লক্ষ্মীপুরের বশিকপুরে জন্মগ্রহণ করেন।প্রাথমিক শিক্ষা বশিকপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। এরপর কওমি মাদ্রাসায় ভর্তি হন। কয়েক বছর নোয়াখালীর কয়েকটি মাদ্রাসায় অধ্যয়ন করার পর তিনি হাতিয়ার ফয়জুল উলূম মাদ্রাসায় ভর্তি হন। সেখানে কিংবদন্তি আলেম দ্বীন মুফতি সাইফুল ইসলাম (রহ.)-এর সান্নিধ্য ও ছাত্রত্ব লাভের সুযোগ সৃষ্টি হয়। এরপর দেশের বৃহত্তম ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান দারুল উলূম হাটহাজারী মাদরায় ভর্তি হন। কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড (বেফাক) (সানুবিয়া) উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় ১০ তম স্থান, স্নাতক (ফজিলত) ৩য় স্থান এবং ২০০১ দাওরায়ে হাদীসে সম্মিলিত মেধা তালিকায় ২য় স্থান অর্জন করেছে। দাওরায় হাদিস শেষ করে খুলনা দারুল উলূম থেকে ইফতা সম্পন্ন করেন। তিনি একজন ইসলামিক স্কলার যিনি কোরআন ও হাদিস নিয়ে গবেষণা করেন। শায়খ আহমাদুল্লাহ বিভিন্ন বিষয়ে শতাধিক গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশ করে ইসলামী সমাজে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। তাঁর কাজগুলি ইসলামী বিশ্বাসের প্রতি তাঁর দক্ষতা এবং নিবেদন প্রদর্শন করে। তিনি ইসলামী সম্প্রদায়ের একজন প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব হয়ে উঠেছেন এবং তার কাজের মাধ্যমে জ্ঞান ও প্রজ্ঞার বিস্তার চালিয়ে যাচ্ছেন।