প্রায় ১৫০ বছর আগের কথা। ঘটনার শুরু ১৮৬৫ সালে, শেষ ১৮৭২-এ। প্রেক্ষাপট, পার্বত্য চট্টগ্রামের কয়েক হাজার বর্গমাইলের গভীর জঙ্গলাবৃত অঞ্চল। সেখানে বাস করে ‘তাউংথা' নামে পরিচিত কিছু আদিম জনজাতি। হাজার বছর ধরে সমভূমির মানুষের কাছে ওরা অসভ্য, হিংস্র, বর্বর বলে গণ্য। তার ওপর কারো কারো ধারণা, ওই ভূখণ্ডে সমতলের মানুষের প্রবেশে মানা। ফলে লোকমুখে ছড়ায় নানা উদ্ভট গুজব। ওখানকার অধিবাসীরা নাকি জলের স্পর্শ বাঁচিয়ে চলে, বাকি পৃথিবীর কোনো খবরও ওখানে আসে না! উনিশ শতকে নিজের প্রাণ বাজি রেখে সেই 'নিষিদ্ধ' দুর্গম এলাকায় প্রবেশ করেছিলেন এক ব্রিটিশ অফিসার, থমাস হারবার্ট লুইন । দুঃসাহসী সেই অভিযানে উন্মোচন হতে থাকে একের পর এক বিস্ময়। গোরা লুইন পাহাড়িদের সঙ্গে আলাপ করেন, ঘনিষ্ঠও হন; সরেজমিনে দেখেন তাদের জীবনযাত্রা। লুসাই জনগোষ্ঠীর লোকেরা ভালোবেসে তাঁর নাম দেয় ‘থাংলিয়ানা'। তারপর একটা যুদ্ধের আয়োজন । তথাকথিত 'সভ্যতা' হানা দেয় পাহাড়ের নির্জনে। বাইরের দুনিয়ায় প্রথমবারের মতো পা ফেলে অচিন অঞ্চলের মানুষ । পার্বত্য চট্টগ্রামের বিরল সব রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা নিজের কুশলী কলমে লন্ডন থেকে ১৮৮৫ সালে প্রকাশিত স্মৃতিকথা আ ফ্লাই অন দ্য হুইল-এ লিপিবদ্ধ করে গিয়েছিলেন লুইন। সেই বইয়ের পার্বত্য চট্টগ্রাম সংক্রান্ত অধ্যায়গুলোর বাংলা অনুবাদ নিয়েই থাংলিয়ানা।