"এক কথায় প্রকাশ" বইটির ভূমিকা থেকে নেয়াঃ 'শব্দ’ ভাষা শরীরের অন্যতম উপাদান। ভাষা শরীরের উৎকর্ষ ও সৌন্দর্যবিধানে বাক্য-সংকোচন বা এককথায় প্রকাশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। বাংলা ভাষার ভাবসম্পদকে সৌন্দর্যমণ্ডিত করার ক্ষেত্রে বিভিন্ন রীতি প্রচলিত থাকলেও বাক্য-সংকোচনের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্ববহ। শব্দ প্রত্যেকটি ভাষারই ভাবের প্রতীক, শব্দ একটি ভাষার ঐতিহ্য, তাই শব্দকে নিয়ে সব মানুষেরই স্বভাবজাত কৌতূহল থাকে। বাংলা ভাষার শব্দ নিয়েও আমাদের কৌতূহলের শেষ নেই। স্কুল জীবনে যখন এককথায় প্রকাশ পড়েছি তখন মনে প্রশ্ন জাগত এককথায় প্রকাশ বা বাক্য-সংকোচন কীভাবে একাধিক শব্দ বা পদকে সংকুচিত করছে? এক্ষেত্রে কোন ধরনের নিয়ম-পদ্ধতি অনুসরণ করা হচ্ছে। বিদ্যালয়, মহাবিদ্যালয়, বিশ্ববিদ্যালয় পেরিয়ে এসেও সন্তোষজনক জবাব পেলাম না। বাংলা ভাষার সুপরিকল্পিত চর্চার অভাব আমাদের জাতীয় জীবনে একটি পরিচিত ঘটনা। সেই অভাবের ফাঁক-ফোকরে আমার উৎসাহও মাঝেমধ্যে মিলিয়ে গেছে সংকুচিত বাক্যের উৎস সন্ধানে। এরই মাঝে একদিন পরিচয় হয় প্রফেসর’স প্রকাশন-এর স্বত্বাধিকারী জসিমভাইয়ের সাথে। তাঁর অনুপ্রেরণা এবং আমার সুপ্ত জিজ্ঞাসার বাস্তবায়নের চেষ্টার ফসল এই বইটি। যেসব এককথায় প্রকাশ সচরাচর ব্যবহৃত হচ্ছে না সেগুলাে বাদ দেয়া হয়েছে, যে কারণে বইটির কলেবর কিছুটা ছােট হয়েছে। সারা বিশ্বে বাংলা ভাষার ব্যাপক বিস্তৃতি সত্ত্বেও আমাদের মাতৃভাষা চর্চার ব্যাপক প্রচার ঘটেনি। বাংলা ভাষার চরম উৎকর্ষ সাধনে আমাদের সবার বাংলা ভাষার বিভিন্ন বিষয়ে সচেতনতা ও কৌতূহল নিয়ে এগিয়ে আসা প্রয়ােজন। এককথায় প্রকাশ’ বা বাক্য-সংকোচন সম্পর্কে আমি আমার কৌতূহল প্রকাশ করছি এবং সেই লক্ষ্যে প্রচেষ্টা চালিয়েছি। পাঠকের সুপরামর্শ এবং জ্ঞানগর্ভ সমালােচনা বইটিকে আকাঙ্ক্ষিত সাফল্য অর্জনে সহায়তা করবে বলে আমার বিশ্বাস।