২৫ বছরের সাদাসিদে এক যুবক হঠাৎ জার্মান সরকারের এক বৃত্তি পেলো। তাকে দুয়েকদিনের মধ্যে জার্মানি যেতে হবে। সে এর আগে বিদেশে দূরের কথা দেশের কোথাও বেড়াতে যায়নি, নিজ জেলা চট্টগ্রামের বাইরে শুধুমাত্র ঢাকা শহরে গেছে; তাও শুধু পড়াশুনার জন্য তবুও সে জার্মানি পৌছলো; কিন্তু তারপরেই বিপদ। কথা ছিল ফ্রাংকফুর্ট বিমানবন্দরে তার সাথে একজন দেখা করবে। তিনিই পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন, কিন্তু সেখানে কেউ আসেননি এদিকে যুবক জার্মান ভাষা জানে না, সেখানে ইংরেজি চলে না। তার হাতে টাকা নেই, সে জানে না কোথায় যাবে, বা কীভাবে যাবে? সমস্ত পরিবেশ সম্পূর্ণ ভিন্ন। তিনদিন উদ্ত্তান্ত অবস্থার পরে তার স্থান হলো এক জার্মান ভাষা ইনস্টিটিউটে ভাষা কোর্স শেষ করার পরে স্থান হলো এক গবেষণা প্রতিষ্ঠানে, যার সাথে কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পর্ক নেই। এদিকে যুবকের ইচ্ছা ডক্টরেট ডিগ্রি করবে। তাই সে এ স্থানের পরিবর্তে বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণার সুযোগ চাইলো। কিন্তু বৃত্তি প্রদানকারী সংস্থা তাকে জানালো যে বাংলাদেশসহ অনেক দেশের মাস্টার ডিগ্রি জার্মানিতে স্বীকৃত নয়। একারণে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জনের জন্য তাকে অন্তত: ৭-৮ বছর পড়াশোনা করতে হবে। এতদিন বৃত্তি দেওয়া তাদের পক্ষে সম্ভব নয়। তারপরেও এ যুবক সরাসরি পিএইচডি কোর্সে ভর্তি হল, আড়াই বৎসরের মধ্যে 'খুব ভালো' ক্যাটাগরিতে (১ম শ্রেণীর তুল্য) ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জন করলো। পরবর্তীকালে DAAD জার্মানির আরেক বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা করার জন্য তিনবার এবং অন্য আরেকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে একবার তাকে পোস্ট ডক্টরেল স্কলারশিপ প্রদান করে। এ অসম্ভবকে সম্ভব করা হলো কীভাবে এ বইয়ে তার বিস্তারিত বিবরণ দেওয়া হয়েছে। সে সাথে আছে দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের পরে জার্মানির অবিশ্বাস্য প্রগতির ইতিহাস। লেখকের কিছু অনুভূতিও এসাথে যোগ হয়েছে।