‘আধুনিক বাংলা প্রয়োগ অভিধান’ বইয়ের ফ্ল্যাপের কথাঃ সচল ভাষা মাত্রেই নিরন্তর চলে পরিবর্তন, সে-পরিবর্তন বানান, শব্দপ্রয়োগ, শব্দার্থ সবকিছুকেই স্পর্শ করে। ব্যাকরণ আর প্রয়োগ হাত ধরাধরি করে চলে না। ব্যাকরণ যাকে অসিদ্ধ বলে, প্রয়োগ অনেকসময় তাকেই দেয় অনুমোদন। যে-কোনও ভাষাতেই ব্যাকরণ রচিত হয়ে আসছে অনেককাল ধরে। সে-তুলনায় প্রয়োগবিধির গ্রন্থ বয়সে নবীন। ইংরেজিতে উনিশ শতকে ফাউলার ভ্রাতৃদ্বয়ের রচিত প্রয়োগ অভিধান দিয়ে তার যাত্রা শুরু। পরে সেই ধারা পুষ্ট করেছেন আরও অনেকেই। আমাদের ভাষায় প্রয়োগবিধির কোনও বই বহুকাল ছিল না। প্রথম প্রয়োগবিধির বইটি লিখলেন সুভাষ ভট্টাচাৰ্য। ১৯৮৪ সালে প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে বিপুল আলোড়ন তোলে সেই বই। নামে অভিধান হলেও এই বই বস্তুতপক্ষে একটি আলোচনা-গ্রন্থ। বিষয়ের বিন্যাস বর্ণানুক্রমিক বলেই একে অভিধান বলা হয়েছে। বাংলা ভাষার বানান, শব্দার্থের আলো-আঁধারি, শব্দপ্রয়োগের রীতি এই সবই আলোচিত হয়েছে এতে। আলোচনায় গভীরতা আর প্রাজ্ঞতা যত, সরসতাও ততটাই। আর প্রতিটি ক্ষেত্রে বাংলা সাহিত্য থেকে দৃষ্টান্তবাক্যের প্রচুরতাও চমকে দেবার মতো। প্রথম প্রকাশের উনিশ বছর পর সেই বইয়ের আদ্যন্ত পরিবর্ধিত ও পরিমার্জিত এই আনন্দ সংস্করণে পাঠক পাবেন নতুন চিন্তারও রসদ। সমস্ত বয়সের শিক্ষিত ও শিক্ষামনস্ক বাঙালির অবশ্যপাঠ্য এই বই।
জন্ম বরিশালে ২৮ সেপ্টেম্বর ১৯৩৯। স্নাতক প্রেসিডেন্সি কলেজ ও স্নাতকোত্তর কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। লেখালিখি ও চর্চা প্রধানত অভিধান, ভাষাতত্ত্ব ও ইতিহাসে, কখনো-বা সংগীত বিষয়ে। একক প্রচেষ্টায় সংকলন ও সম্পাদনা করেছেন দশ-বারোটি অভিধান, লিখেছেন পাঁচ ছটি ভাষা বিষয়ক গ্রন্থ। প্রকাশিত গ্রন্থের মধ্যে ‘আধুনিক বাংলা প্রয়োগ অভিধান’, ‘বাঙালির ভাষা’, ‘ভাষা ও শৈলী’, ‘ভাষাদিগন্তে নতুন আলো’, ‘বাংলাভাষা চর্চা’, ‘ভাষার তত্ত্ব ও বাংলা ভাষা’, ‘বাংলা উচ্চারণ অভিধান’, ‘ইতিহাস অভিধান’ (প্রথম ও দ্বিতীয় খন্ড), ‘স্বপ্নের ভুবন : রবীন্দ্রনাথের গান’, ‘বিবিধ বিদ্যার অভিধান’, ‘তিষ্ঠ ক্ষণকাল’, ‘ভাষাকোশ’, ‘তোমাদের রবীন্দ্রনাথ’ ইত্যাদি। সম্পাদিত গ্রন্থ ‘সংসদ বাংলা অভিধান’, Samsad English-Bengali Dictionary, Samsad Bengali-English Dictionary ইত্যাদি। পেয়েছেন আনন্দ পুরস্কার (১৯৮৪), বিদ্যাসাগর স্মৃতি পুরস্কার (২০০৭), চণ্ডীগড় প্রাচীন কলাকেন্দ্র সম্মান (২০০৯)। সাহিত্য সংসদের সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য।