বাংলাদেশের বিখ্যাত একজন আলেম ১৯২৮ সালে দেওবন্দে উচ্চশিক্ষা শেষ করার পর ডাক পান হায়দ্রাবাদের চিফ জাস্টিস হবার। কিন্তু সে ডাক উপেক্ষা করে নিজ দেশের মানুষের কথা ভেবে ফিরে আসেন আপন মাতৃভূমিতে। . এসেই সদরুল মুদাররিসিন হিসেবে যোগ দেন তখনকার সময়ের আলোচিত মাদ্রাসা—জামেয়া ইউনুছিয়া ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়। . . মহান এই মানুষটির স্বপ্ন ছিলো দেশের প্রতিটি গ্রামে একটি করে মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠিত হবে এবং বড় শহরগুলোতেও একটি করে দাওরায়ে হাদিসের মাদ্রাসা হবে। . . এরই ধারাবাহিকতায় বাগেরহাটের গজালিয়া মাদ্রাসা, গোপালগঞ্জের জামিয়া খাদিমুল ইসলাম গওহরডাঙ্গা, ঢাকার আশরাফুল উলুম বড় কাটারা, জামেয়া কুরআনিয়া লালবাগ ও জামেয়া ইমদাদুল উলুম ফরিদাবাদ প্রতিষ্ঠা করেন। . . হাকিমুল উম্মত আশরাফ আলি থানভি রাহ.-এর সরাসরি সাহচর্য পাওয়া এই আলেম ও বুজুর্গ ছিলেন বাংলাদেশের অসংখ্য মানুষের একজন আধ্যাত্মিক রাহবার। . . তিনি বলতেন, ‘তুমি দুনিয়ার সবকিছুই পেয়েছো; কিন্তু আল্লাহকে পাওনি, তাহলে কিছুই পাওনি! আবার তুমি দুনিয়াতে কিছুই পাওনি; কিন্তু আল্লাহকে পেয়েছো, তাহলে সবকিছুই পেয়েছো।’ . মহান এই ব্যক্তিটি আর কেউ নন, তিনি হলেন আমাদের সকলের পরিচিত—আল্লামা শামসুল হক ফরিদপুরী রাহ.। . . একজীবনে ফরিদপুরী রাহ. বাংলাদেশের মানুষের জন্য এত বিপুল ও বিশাল ইলমি খেদমত করেছেন, পুরোটা জানলে যে কেউই বিস্মৃত হতে বাধ্য। . . ব্যক্তিজীবনেও ছিলেন অমায়িক ও বুজুর্গ একজন মানুষ। ইতিহাস যাকে মনে রেখেছে—মুজাহিদে আজম, শায়খুল হাদিস আল্লামা ও ছদর সাহেব হুজুর রাহ. নামে। . . ‘সত্যের সূর্য’ নামে গল্পে গল্পে আল্লামা শামসুল হক ফরিদপুরী রাহ.-এর কিশোরতোষ জীবনী রচনা করেছেন হুসাইন বিন নূর। বইটি নতুন মোড়কে প্রকাশ করছে নাশাত পাবলিকেশন। . . কিশোরতোষ গদ্যের সহজ, সাবলীল ও সুখপাঠ্য ভাষার এই জীবনী গল্পগ্রন্থ বাংলাদেশের মুসলিম শিশু-কিশোরদের মনকে নাড়া দেবার জন্যই রচনা করা হয়েছে। যেন তারা বইটি পড়তে পড়তে আমাদের ইতিহাস ও আত্মপরিচয়ের সবচেয়ে বড় মানুষটির সাথে পরিচিত হয়ে নিজেকেও সেরকমভাবে গড়ার স্বপ্ন দেখতে পারে। . . আল্লাহ আমাদের শিশু-কিশোরদের কবুল করুন। আমিন।