"যোগ চিকিৎসা ২" বইয়ের ফ্ল্যাপের লেখা: প্রথমে শরীর, তারপর মনের সম্মিলনে গড়ে ওঠে মানুষের সত্তা। এই পৃথিবীতে সর্বোত্তম প্রাণময় সত্তা হল মানুষ। নিজের জীবৎকালের সীমার মধ্যে মানুষ চায় নীরােগ দেহ ও প্রফুল্ল মন নিয়ে বাঁচতে। কিন্তু একই সঙ্গে সুস্থ শরীর ও আনন্দে পূর্ণ মনের সংযােগ এখন প্রায় দুর্লভ। নানাবিধ চিকিৎসা ব্যবস্থাও এই কাজে সাফল্যলাভ করতে পারেনি। অথচ প্রাচীন ভারতে মনীষীরা এমন একটি চিকিৎসা পদ্ধতি আবিষ্কার করেছিলেন যার সাহায্যে মানুষ সুস্থ জীবনযাপন করতে পারবে শরীরে ও মনে। এই পদ্ধতিই আজ বিশ্বজুড়ে যােগ বা যােগচিকিৎসা নামে বহুখ্যাত। বিভিন্ন চিকিৎসার জটিল প্রক্রিয়া ও প্রায়ােগিক প্রতিক্রিয়ায় বীতশ্রদ্ধ হয়ে আজকের মানুষ যােগচিকিৎসা গ্রহণ করতে আগ্রহী হয়ে উঠেছে। যে-রােগহীন জীবনের দিশা যােগচিকিৎসা দিয়েছে তার মূলে আছে যােগদর্শনে উল্লিখিত অষ্টাঙ্গযােগের তৃতীয় অঙ্গ ‘আসন’। আসন অর্থাৎ আসন। ‘আ’ অক্ষরের অর্থ সর্বত্র। ‘স’অর্থাৎ ঈশ্বর। আর ‘ন’-এর অর্থ জ্ঞান। সর্বত্র ঈশ্বর জ্ঞান অর্থাৎ সমস্ত প্রতিকূলতা, প্রতিবন্ধকতা জয় করে উদারচেতনার পথে উত্তরণ। দেহতরঙ্গকে অবরােধক বিজ্ঞানের দ্বারা জয় করাই আসন সাধনার মূল ও একমাত্র পথ। যােগ চিকিৎসা প্রথম খণ্ডের মতােই এই দ্বিতীয় খণ্ডেরও বৈশিষ্ট্য বিভিন্ন আসনের সচিত্র বিস্তৃত উপস্থাপনা। দেহের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ সমূহকে সুনির্দিষ্ট কিছু প্রক্রিয়ায় সঞ্চালন এবং সংস্থাপন করে অর্থাৎ আসনের সাহায্যে দেহের ও মনের রােগ থেকে মুক্তি পেতে হলে এ বই অপরিহার্য।
দীপেন সেনগুপ্তর জন্ম ২৬ সেপ্টেম্বর ১৯৫৬, আসানসোলে। পিতামহ অষ্টাঙ্গ বিদ্যাপীঠের (পরবর্তীকালে অষ্টাঙ্গ আয়ুর্বেদ কলেজ) প্রতিষ্ঠাতা আয়ুর্বেদাচার্য তারাপ্রসন্ন সেনশর্মা। বাবা ছিলেন চিকিৎসক। শিক্ষা: কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক। পরবর্তী পড়াশোনা দিল্লিতে। শিক্ষক হিসেবে যুক্ত ছিলেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়, যাদবপুর বিদ্যাপীঠ কলেজ অফ এডুকেশন ও হাওড়া অরথোপেডিক রেলওয়ে হসপিটাল স্পোর্টস মেডিসিন বিভাগের সঙ্গে। লেখক স্বামী সন্তদাস ইনস্টিটিউট অফ কালচারের প্রতিষ্ঠাতা-সম্পাদক এবং স্বামী সন্তদাস হার্বাল রিসার্চ সেন্টারের প্রধান কর্ণধার। বর্তমানে স্বামী সন্তদাস ইনস্টিটিউট অফ কালচার যৌগিক কলেজের ডিরেক্টর। প্রতিষ্ঠা করেছেন ভারতে প্রথম যৌগিক নার্সিংহোম, ঢাকুরিয়ায়, ১৯৯৩ সালে। স্বামী ধনঞ্জয় দাস কাঠিয়াবাবার সুযোগ্য শিষ্য।। প্রাচীন ভারতীয় কৃষ্টি ও সভ্যতায় বিশ্বাসী লেখক তাঁর একুশ বছরের চিকিৎসা ও অধ্যাপনা জীবনে যোগচিকিৎসা ও খাদ্যতত্ত্ব নিয়ে চোদ্দোটির অধিক গবেষণা গ্রন্থ রচনা করেছেন।