"ফতোয়ায়ে আলমগীরী : ইসলামী আইন শাস্ত্র [সকল খণ্ড একত্রে]"বইটির প্রথমের কিছু অংশ: অজুর ফরজ মহান আল্লাহ রাব্বল আলামীন ঈমানদারগণকে লক্ষ্য করে ইরশাদ করেছেন ? হে ঈমানদারগণ! যখন তােমরা নামায আদায় করিতে প্রস্তুত হও, তখন তােমাদের (সমগ্র) মুখমণ্ডল ও দুই হাত কনুইসহ ধৌত কর। আর তােমাদের মাথা (এর কিছু অংশ) মােসেহ কর এবং তােমাদের পদদ্বয় গােড়ালিসহ ধৌত করিয়া লও। এই আয়াত এর মাধ্যমে অজুতে চারটি ফরজ প্রমাণিত হয়েছে। প্রথম ফরজ ও সমগ্র মুখমণ্ডল পানি দ্বারা ধৌত করা। জাহের বিবরণে মুখমণ্ডলের সীমা উল্লেখ করা হয়নি। আইনী কিতাবে আছে যে, মুখমণ্ডলের সীমা (উপরে) চুল উঠার স্থান হতে নিম্নে দাড়ি-গোঁফসহ থুতনি পর্যন্ত এবং দুই পার্শ্বে এক কানের লতি হতে অপর কানের লতি পর্যন্ত। যদি মাথার সামনের চুল টাক পড়া কিংবা অন্য কোন কারণে উঠে ছাফ হয়ে যায়, তবে বিশুদ্ধতর মতে সে স্থান ধৌত করা ফরজ নয়। ইহা খােলাছায় বর্ণিত আছে। আর যার মাথার চুল মুখমণ্ডলের সীমায় অর্থাৎ কপালে এসে পড়ে তার উপরে চুলসহ ঐস্থান ধৌত করা ফরজ। এটি আইনী কিতাবের বিবরণ। জহিরিয়াহ কিতাবে আছে, চোখের ভিতরে পানি প্রবেশ করানাে ওয়াজিব নয় বিংবা সুন্নতও নয়। আর পালকের গােড়ায় চোখের কিনারায় পানি পৌছাবার জন্য চুক্ষ খােলা ও বন্ধ করার প্রয়ােজন নেই। কাজীখান গ্রন্থে বর্ণিত আছে যে, চুল গজানোের স্থানে পানি পৌঁছানাে ওয়াজিব নয়। অজুকারীর গোঁফ লম্বা হলেও অজু করার সময়ে এর মূলে পানি না পৌঁছলে অজু পরিশুদ্ধ হবে। তবে গােসল শুদ্ধ হবে না। এটি মুজমিরাতে বর্ণিত আছে। হযরত ইমাম আবু হানীফা (রহঃ)-এর নিকটে দাড়ির এক-চতুর্থাংশ মােসেহ করা ফরজ। অন্য বর্ণনায় আছে, হযরত ইমাম আবু হানীফা (রহঃ) ও হযরত ইমাম মুহাম্মদ (রহঃ)-এর মতে দাড়ির উপর দিয়ে পানি বহিয়ে দেওয়া ওয়াজিব। এই বর্ণনাই বিশুদ্ধ। থুতনির উপর উখিত দাড়ি যা লম্বাবস্থায় ঝুলে থাকে তা ধৌত করা ওয়াজিব নয়। থুতনির উপরের দাড়ি ধৌত করার পর তা মুভিয়ে ফেললে পুনঃ থুতনি ধৌত করার প্রয়ােজন নেই। দ্রুপভাবে জ ব্য গোঁফ অথবা মাথা মােসেহ করার পর মাথর চুল মন্ডিয়ে ফেললে কিংবা অঙ্গুলের নখ ধুইবার পর কেটে ফেললে পুনরায় তা ধৌত করা আবশ্যক নয়।
Title
ফতোয়ায়ে আলমগীরী : ইসলামী আইন শাস্ত্র [সকল খণ্ড একত্রে]