”বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে মাছ চাষ” বইটির ভূমিকা: বাংলাদশের কৃষিনির্ভর অর্থনীতিতে মৎস্য সম্পদের গুরুত্ব অপরিসীম। নদীমাতৃক বাংলাদেশে রয়েছে মাছ চাষের ঐতিহ্য। বর্তমানে আমাদের দেশে প্রাশ ১৩ লাখ দিঘি, পুকুর সর্বত্র ছড়িয়ে আছে। যাতে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সনাতন পদ্ধতিতে মাছ চাষ হচ্ছে। একটু চেষ্টা করেলেই এসব জলাশয় বা দিঘি পুকুরে অধিক হারে মাছ উৎপাদন সম্ভব। অতীতে এ দেশে প্রাকৃতিক জলাশয়ের মাছ শুধু আহরণ করা হতো, চাষ করা হতো না। বর্তমানে দ্রুত জনসংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে আমিষের উৎস মাছ আর আগের মত সহজলভ্য নয়। জাতীয় পুষ্টি চাহিদা পূরণ, কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি, বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন এবং সর্বোপরি দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে মৎস্য খাতের অবদান সম্প্রসারিত করার সুযোগ আরও ব্যপক। বাংলাদেশে অভ্যন্তরীণ জলজ সম্পদে অত্যন্ত সমৃদ্ধ। নদী, নালা, খাল, বিল, হাওর ও বন্যাপ্লাবিত জলাভূমি ইত্যাদি নিয়ে ৪.৩ মিলিয়ন হেক্টর জলরাশিতে মাছ উৎপাদনের সম্ভাবনা অত্যান্ত উজ্জ্বল। দেশের মোট ৪৮টি জেলায় রয়েছে সেচ প্রকল্পের খাল। কিন্তু উম্মুক্ত জলাশয়ে দিন দিন মাছের উৎপাদন কমে আসছে। ফলে আমিষজনিত পুষ্টির অভাব প্রকট হয়ে উছেঠে, অথচ সুষ্ঠু পরিকল্পনা, লাগসই প্রযুক্তি ইত্যাদির মাধ্যমে এই বিরাট জলরাশি থেকে মাছের উৎপাদন বাড়ানোসহ ক্রমবর্ধমান জনগোষ্ঠীর একাংশের কর্মসংস্থান করা সম্ভব। আমাদের দেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থার প্রেক্ষিতে উম্মুক্ত জলাশয়ে নিবিড়-আধা-নিবিড় পদ্ধতিতে মাছ চাষ করার সম্ভাবনা তুলনামূলকখভাবে কম এবং নতুন। এ লক্ষ্যে মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট, নদী কেন্দ্র চাঁদপুর ১৯৯০ থেকে উল্লেখিত জলাশয়ে সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনাসহ মাছ উৎপাদনের নিমিত্তে লাগসই প্রযুক্তি উদ্ভাবনে সচেষ্ট হয় এবং সফলতা অর্জন করে। বর্তমানে মাছের যে চাহিদা তাতে সঠিকভাবে মাছ চাষ করতে পারলে ঘুরে যাবে ভাগ্যের চাকা। মাছ চাষ করে এক-অন্যের অত্মকর্মসংস্থানের মডেল হওয়া এখন আর কোনো বিষয় নয়। ‘বৈজ্ঞানিত পদ্ধতিতে মাছ চাষ, বইটি মাছ চাষিদের কাজে আসবে বলে আশা করছি। সেই সাথে কামনা করছি আমরা যেন মাছের আগের দিনে ফিরে যেতে পারি। আগের মতোই আমরা যেন মাছে-ভাতে বাঙালি হতে পারি --লেখক--
সূচিপত্র মাছ চাষের কলাকৌশল মাছ চাষের ব্যবস্থাপত্র পুকুরের সাধারণ সমস্যা ও সমাধান মাছ চাষ