"নির্বাচিত রহস্য রোমাঞ্চ" বইয়ের ফ্ল্যাপের লেখা: একশাে বছরের গােয়েন্দা কাহিনী সংকলন যেমন ‘গােয়েন্দা আর গােয়েন্দা’, ‘নির্বাচিত ভূতের গল্প’ও তেমনি একশাে বছর থেকে বাছাই করা গা-ছমছম-করা এক আশ্চর্য ভৌতিক সম্ভার। এবার পাঠকসাধারণের হাতে তুলে ধরা হচ্ছে তৃতীয় যে সংকলনটি, তার নাম নির্বাচিত রহস্য রােমাঞ্চ। এটির অভিনবত্ব হচ্ছে এই যে, ভূত এবং গােয়েন্দার কাছাকাছি থাকা সত্ত্বেও সম্পূর্ণ পৃথক আরেক জগতের চেহারা ও চরিত্র নিয়ে এর প্রস্তুতি। এককথায় এবং সহজ করে যাকে বলা যেতে পারে অপরাধ জগতের কাহিনী। মানুষ প্রয়ােজনের তাগিদে অপরাধ করে এবং যুগে যুগে সামাজিক পরিস্থিতির পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে সে-অপরাধের প্রকৃতির অদলবদল ঘটতে থাকে স্বাভাবিক নিয়মেই। সেই পরিবর্তনশীল। পরিস্থিতির বিস্তার এতই ব্যাপক যে একটিমাত্র গ্রন্থে তার পরিপূর্ণ রূপদানের চিন্তা অবান্তর ছাড়া আর কিছুই নয়। তাই ভগ্নাংশ পরিমাণ নিয়েই আমাদের সন্তুষ্ট থাকতে হচ্ছে। তবে পরিমাণ যত ভগ্নাংশই হােক না কেন, তারই মধ্যে আমরা পাচ্ছি। বিন্দুতে সিন্ধুর মত বিচিত্র এমন এক স্বাদ যা থেকে পৃথিবী নামে এই বিরাট ভূখণ্ডের সমগ্র অন্ধকার। রূপটিই আমাদের সামনে স্পষ্ট আলােকরেখার মত উদ্ভাসিত হয়ে ওঠে প্রকটভাবে। ষড়রিপুর তাড়নায় অন্ধকারের সিঁড়ি বেয়ে মানুষের যে কুটিল পরিক্রমা চলেছে যুগ যুগ ধরে এবং সৃষ্টির শেষ দিনটি পর্যন্ত যার গতি অব্যাহত থাকবে বলেই আমাদের বিশ্বাস, তারই টুকরাে টুকরাে বহু চিত্র আমরা পাই প্রাচীন শিলালিপিতে, অবাচীন ইতিহাসের পাতায়, এ যুগের সাহিত্যের গল্পকল্পে। আমাদের এবারকার এই গ্রন্থনা একশাে বছরের সেই সাহিত্যকল্প থেকে ছেকে বার করে আনা এমন-কিছু কাহিনীর একত্রীকরণ যা অনাস্বাদিতপূর্ব ও অচিন্ত্যনীয়। এই বহু-বিচিত্রের সমাহারকে পুষ্ট করেছেন যাঁরা তাঁরা হলেন বাংলা সাহিত্যের সেই চিরনমস্য ত্রৈলােক্যনাথ, শরৎচন্দ্র, পরশুরাম, তারাশঙ্কর-বিভূতিভূষণ-শরদিন্দু-মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে শুরু করে প্রেমেন্দ্র মিত্র, প্রবােধ সান্যাল, সুবােধ ঘােষ, নারায়ণ।