“একাত্তরের কিশোর মুক্তিযোদ্ধা" বইটির ফ্ল্যাপ এর লেখাঃ মুক্তিযুদ্ধ যখন শুরু তারেক তখন ইন্টারমিডিয়েটের শেষবর্ষের ছাত্র। এ তরুণ বয়সেই সেচ্ছাসৈনিক হিসেবে যােগ দেন মুক্তিযুদ্ধে। সাহস, বুদ্ধি এবং দুরন্তপনায় তারেক সবার চেয়ে একটু আলাদা হয়ে পরিচিত হয়ে ওঠেন। দীর্ঘ দেহ এবং বুক ভরা সাহসের তারেক যুদ্ধের মাঠে প্রদর্শিত অসম সাহসের জন্য বীর বিক্রম’ পদবিতে ভূষিত হন। বর্তমান বিশ্ব নৈতিকতা ও বিবেকি বিবেচনায় শিশু ও কিশােরদের সৈনিক হিসেবে ব্যবহারের বিরুদ্ধে সােচ্চার এবং যাৈক্তিক কারণেই। কিন্তু একাত্তরে বাংলাদেশের পরিস্থিতি ছিল ভিন্ন। পাকিস্তানি পশুরা তখন বাঙালি জাতি নিশ্চিহ্ন করায় সচেষ্ট; শিশু, কিশাের, বদ্ধ বা নারী সব বিবেচনা বর্জিত রেখে । সে যুদ্ধ ছিল প্রথমে আমাদের অস্তিত্ব রক্ষার, তারপর । স্বাধীনতার । সমাজের স্তরে মানুষের প্রত্যক্ষ ও পরােক্ষ অংশগ্রহণের এ জনযুদ্ধে মুখ্য ভূমিকা পালন করেছে এ দেশের আমজনতা। এই সংবিত্তিতি পৃশ্য হয় এদেশের কিশাের আর তরুণরা। আর যুদ্ধের মাঠেতে আধিপত্য তারুণ্য আর যৌবনেরই। মুক্তির এ যুদ্ধ টানে কিশােরদেরও। তাদের কীর্তিও বিশাল। সে বিশাল কাহিনী মুখে মুখে থাকলেও লিখিতভাবে তেমন উঠে আসেনি, যারা মাঠে যুদ্ধ করেছিল তাদের সবারই পরিচয় আছে এ কিশােরদের শৌর্যের সাথে । শ্রুতি থেকে নয়, তারেক স্মৃতি থেকে তুলে এনেছেন তার কিশাের সহযােদ্ধাদের অসামান্য কীর্তি, পরম মমতায় | এ বিষয়ে লেখালেখিতে আমাদের জানামতে তারেকই প্রথম। একাত্তরের কিশাের মুক্তিযােদ্ধাদের অবদান । নিয়ে এ বই লিখে তারেক কিছুটা হলেও আমাদের দায়মুক্তি দিয়েছেন।
জন্ম বগুড়া জেলার রজাকপুর গ্রামে। ১৯৭১এ ছাত্রাবস্থায় তিনি ৭নং সেক্টরের অধীনে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। একজন অকুতােভয় অসীম সাহসী যােদ্ধা হিসেবে বীরত্বের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি ‘বীরবিক্রম’ উপাধিতে ভূষিত হন বগুড়া জেলায় তিনিই একমাত্র ‘বীরবিক্রম' পদকে ভূষিত মুক্তিযােদ্ধা। ১৯৭৪-এ বাংলাদেসেনাবাহিনীতে যােগদান করেন এবং ১৯৮৯-এ অকালীন বাধ্যতামূলক অবসরগ্রহণ করেন। বর্তমানে পদ্মা অয়েল লিমিটেড-এ কর্মরত। জাতীয় পর্যায়ে বিভিন্ন দৈনিক, সাপ্তাহিক পত্রিকায় নিয়মিত লিখে যাচ্ছেন। তার লেখা জলছবি ৭১; একাত্তরের কিশাের মুক্তিযােদ্ধা; কোথায় হারিয়ে গেল তারা; রক্তের সমুদ্রে হাল ধরেছিল যারা এবং বাবা যখন পুলিশ ছিলেন। পাঠক সমাজে খুবই জনপ্রিয়তা পেয়েছে।