”সারেন্ডার অ্যাট ঢাকা” বইয়ের ফ্ল্যাপের লেখা: বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারতের যুদ্ধ ছিল সংক্ষিপ্ত কিন্তু দ্রুত গতিসম্পন্ন। মাত্র তের দিনব্যাপী এই যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল মূলত নদীবহুল অঞ্চলে, আক্রমণ প্রতিরোধের জন্য যা আদর্শ।
২৬ মার্চ ১৯৭১ পূর্ব পাকিস্তানে সেনাবাহিনীর নগ্ন হামলা থেকে শুরু করে ৩ ডিসেম্বর ১৯৭১ সন্ধ্যায় পশ্চিমাঞ্চলে ভারতীয় বিমানঘাঁটিতে পাকিস্তানি বোমাবর্ষণ থেকে সৃষ্ট সর্বাত্মক যুদ্ধ এবং তার পরবর্তী সামরিক অভিযান, শেষ পর্যন্ত পাকিস্তান ইস্টার্ন কম্যান্ডের আত্মসমর্পণের মাধ্যমে যার পরিসমাপ্তি ঘটে সবকিছুই লেখক বর্ণনা করেছেন।
স্ট্র্যাটেজির রূপরেখা আঁকতে গিয়ে কীভাবে প্রধান সড়ক এড়িয়ে পার্শ্বরাস্তা ব্যবহার করে শত্রুদের প্রতিরোধের শক্ত ঘাঁটিগুলোকে পাশ কাটিয়ে আক্রমণরেখা নির্বাচন করা হয়েছে এবং পরবর্ততে মেইন্টেন্যান্সের জন্য পথ খুলে দেয়া হয়েছে, তার সমস্ত খুঁটিনাটি বর্ণনা তিতি দিয়েছেন। দেশের প্রধান ভূ-রাজনৈতিক কেন্দ্র ঢাকার সাথে যোগাযোগের প্রধান কেন্দ্রগুলো আক্রমণের লক্ষ্য হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এই অভিযানের পুঙ্খানুপুঙ্খ বর্ণনা তিনি দিয়েছেন। মুক্তিবাহিনীর ভূমিকা ও দেশের স্বাধীনতার জন্য তাদের অসীম ত্যাগের কথা তিনি তুলে ধরেছেন। নিরাপত্তা পরিষদের চাপ এবং চীন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পাকিস্তান-ঘেঁষা ভূমিকা ছাড়াও আত্মসমর্পণের আলোচনা ও দলিলে স্বাক্ষরের একটি প্রত্যক্ষ বর্ণনা তিনি দিয়েছেন। এই অভিযানের রাজনৈতিক ও সামরিক পটভূমি থেকে লেখক শিক্ষা গ্রহণ করেছেন এবং রাজনৈতিক ও সামরিক- উভয় ক্ষেত্রে এবং যুদ্ধের জন্য অস্থায়ী উর্ধ্বতন কম্যান্ড স্থাপনে পরিষ্কার দিক-নির্দেশনার অভাবের কথা তুলে ধরেছেন। ১৯৭১-এর যুদ্ধ থেকে এখনো অনেক কিছু শেখার আছে। সাধারণ পাঠক শুরু করে সশস্ত্র বাহিনী, স্টাফ ও ওয়ার কলেজ এবং সামরিক বিষয়ের সাথে সংশ্লিষ্ট সকলেরই এই বইটি ভাল লাগবে।
সূচিপত্র * গোড়ার কথা * যুদ্ধের অবতারণা * রাজনৈতিক পট পরিবর্তন * উর্ধ্বতন সামরিক কর্তৃপক্ষ ও যুদ্ধের প্রস্তুতি * পরিকল্পনার বিবর্তন * স্ট্র্যাটেজি * রসদ ও সরবরাহ * পাকিস্তানিদের সেনাবিন্যাস * প্রস্তুতি ও প্রশিক্ষণ * মুক্তিবাহিনী * মার্কিন ও চীনা ভূমিকা * লড়াই * যুদ্ধের অগ্রগতি * যুদ্ধের পরিণতি * নাটকের কুশীলব * স্মৃতিচরণ * পরিশিষ্ট * নির্ঘন্ট