আবদুল গাফফার চৌধুরীর জন্ম ১৯৩৪ সালের ১২ ডিসেম্বর বরিশাল জেলার উলানিয়া গ্রামে এক রাজনৈতিক পরিবারে। পিতা হাজী ওয়াহেদ রেজা চৌধুরী অবিভক্ত বাংলার বরিশাল জেলা কংগ্রেস কমিটি ও খেলাফত কমিটির সভাপতি ছিলেন। অসহযােগ আন্দোলনে তিনি কারাবরণ করেন । গাফফার চৌধুরী যখন চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্র, তখন কবিতা লেখা শুরু করেন। ষষ্ট শ্রেণীর ছাত্র থাকাকালে কলকাতা থেকে প্রকাশিত দৈনিক নবযুগের ছােটদের পাতায় তার লেখা প্রথম ছাপা হয়। তারপর স্কুলের ছাত্র থাকা কালেই তার লেখা কলকাতার। সওগাত, ঢাকার সােনার বাংলা (অধুনালুপ্ত) পত্রিকায় ছাপা । শুরু হয় । এসএসসি পাশের পর তিনি ঢাকায় আসেন এবং সওগাত, মােহাম্মদী, মাহে লও, দিলরুবা প্রভৃতি মাসিক পত্রিকায় তার গল্প উপন্যাস ছাপা হতে থাকে। বাজারে তার বেশ কয়েকটি গল্প ও উপন্যাস, ছােটদের এডভেঞ্চার কাহিনী, প্রবন্ধ সংগ্রহ, স্মৃতিকথা রয়েছে এবং পাঠক সমাজে আদৃত হয়েছে। তিনি বাংলা একাডেমী সাহিত্য পুরস্কার, ইউনেস্কো পুরষ্কার, শেরেবাংলা পদক, বঙ্গবন্ধু পদক এবং একুশের পদক পেয়েছেন এবং বিদেশেও নানা সম্মানে ভূষিত হয়েছেন। তিনি অমর একুশের গান-‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানাের’ রচয়িতা। বঙ্গবন্ধু-হত্যার উপর লেখা নাটক ‘পলাশি থেকে ধানমন্ডি’ দারুন জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। তিনি বহু সাহিত্য মাসিক, সাপ্তাহিক ও দৈনিক পত্রিকা সম্পাদনা করেছেন । বেতার ও টেলিনাটক লিখেছেন। তবে বর্তমানে তিনি একজন সার্বক্ষণিক কলামিষ্ট । ঢাকায় চারটি জাতীয় দৈনিকে এবং লন্ডন ও নিউইয়র্কে একাধিক সাপ্তাহিক পত্রিকায় তার রাজনৈতিক বিষয়ে লেখা কলাম নিয়মিত প্রকাশিত হয়। তার কলাম দেশে-বিদেশে বাংলাভাষাভাষী পাঠকের কাছে দারুন জনপ্রিয়। গাফফার চৌধুরী এখন লন্ডনে বাস করেন। তিনি এক ছেলে চার মেয়ের পিতা। বঙ্গবন্ধুর জীবন নিয়ে একটি পূর্ণ দৈর্ঘ্য ছবি নির্মাণের কাজে তিনি এখন ব্যস্ত।
আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী বইটির নাম দিয়েছেন "ইতিহাসের রক্তপলাশ: পনেরই আগস্ট পঁচাত্তর" নামই ইঙ্গিত করছে বইটির বিষয়বস্তু কি হবে। বর্ণিল সাংবাদিক জীবনে দেখেছেন অনেক, ছাত্রজীবন থেকেই রাজনীতি করেন আওয়ামী লীগের। সাংবাদিক হিসেবেও ছিলেন বঙ্গবন্ধুর স্নেহধন্য।
তাই যৌক্তিকভাবে আশা করেছিলাম বইটি বেশ ভালো হবে। অথচ মূল ট্র্যাক থেকে সটকে পড়ে জনাব চৌধুরী পঞ্চাশ, ষাটের দশকে চলে গেলেন। মোটামুটি উধাও হয়ে গেল পনেরই আগস্ট সংক্রান্ত ঘটনাবলি। তার বদলে পাকিস্তান আমলের রাজনীতির অলিগলি নিয়ে বিস্তর বাতচিৎ করলেন চৌধুরী সাহেব। জানলাম পাকিস্তান আমলে সোহরাওয়ার্দী, ভাসানী আর হক সাহেবদের রাজনীতিট স্বরূপ। শেখ মুজিবের বঙ্গবন্ধু হয়ে উঠার গৌরবজ্জ্বল অতীতের কথা বলতে গিয়ে বিশেষভাবে গাফ্ফার চৌধুরী মুজিবের গুরু সোহরাওয়ার্দীর আপোষমূলক চরিত্রের কিছু নমুনা পেশ করেছেন। জানা দরকার তা।
বইটির নামকরণের সাথে বিষয়ের সাদৃশ্য সামান্যই। বরং পাকিস্তানি রাজনীতি সম্পর্কিত যেকোনা নাম ঢের প্রাসঙ্গিক হত।
১৭৫ পাতার বইটি পড়তে তত সময় লাগে নি। গতি ভালো।
গাফ্ফার চৌধুরী আওয়ামী লীগকে সুরক্ষা দিতে কলম ধরেছেন,ধরছেন, ধরবেন। তাতে সমস্যা নাই। কিন্তু বঙ্গবন্ধু শাসনামলের সাফাই গাইতে গিয়ে উদোরপিন্ড বুদোর ঘাড়ে চাপানোর খেলাটা খেলতে চেয়েছেন। তবে আনাড়ি যুক্তি দিয়ে পাঠক হিসেবে আমাকে ততটা মুগ্ধ করতে পারেন নি। বরং বিরক্ত লেগেছে অযৌক্তিক পক্ষপাতিত্বের লক্ষণ প্রকাশ্য হওয়াতে।
জ্যোৎস্না প্রকাশনীর এই বইতে যেন বানান ভুলের উৎসব করা হয়েছে। বাক্য ঠিক নাই, নামের বানান ওলট-পালট।যেমনঃ লিডার হয়ে গেছে লীভার!
ভয়ের কথা হল এই ভুলেভরা বইটি বাংলাদেশ সরকার দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের পাঠ্যাভাস বাড়াতে পুরস্কার হিসেবে দেয়!
Read More
Was this review helpful to you?
By REDOWAN IBNE SAIFUL ,
24 Aug 2020
Verified Purchase
বইটিতে মূলত ১৯৪৭ সাল থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের অভ্যুদয়, রাজনৈতিক বিবর্তন, রাজনৈতিক নেতাদের চরিত্র, মুক্তিযুদ্ধের সময় বিদেশী ও দেশীয় চক্রান্ত বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড নিয়ে বিস্তর নির্মোহ বিশ্লেষন করা হয়েছে।