ফ্ল্যাপ সাফল্য ও গৌরবগাথার অপর নাম মুহাম্মদ ইউনূস ও গ্রামীণ ব্যাংক। বিশ্বের সবচেয়ে গরিব দেশের একজন মানুষের উদ্ভাবিত একটি পদ্ধতি আজ ধনী-দরিদ্র নির্বিশেষে সকল দেশের কাছে অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর ভাগ্যোন্নয়নের লক্ষ্যে এক অনুসরণযোগ্য মডেল হয়ে দাঁড়িয়েছে। একদা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতাকালে ছাত্রদের নিয়ে কাছাকাছি জোবরা গ্রামে পরীক্ষামূলকভাবে যে-কাজটি তিনি শুরু করেছিলেন, তা-ই আজ এক বিশাল মহীরুহ হয়ে পৃথিবীবাসীর দৃষ্টি আকর্ষণ করছে। এটুকু তথ্য আমরা অনেকেই হয়তো জানি। কিন্তু সেদিন সে-উদ্যোগটি গ্রহণের পেছনে কী ছিল মুহাম্মদ ইউনূসের স্বপ্ন প্রেরণা, সংগ্রামের কতটা চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে তাঁকে সাফল্য ও সম্মানের এই শিখরে পৌছতে হয়েছে, তা কি আমরা জানি? ড. ইউনূসের আত্মজীবনীমূলক এই বইটিতে সে-কাহিনীই তাঁর নিজ জবানীতে বর্ণিত হয়েছে। আর সে- কাহিনী কোনোক্রমেই একজন মানুষের কেবল একা বড় হবার গল্প নয়, সবাইকে নিয়ে, সবার মধ্যে বড় হবার স্বপ্ন সঞ্চার করে, বড় হবার স্বপ্ন। অধ্যাপক ইউনূস বিশ্বাস করেন দারিদ্র্যের মধ্যে জীবন কাটাবার ভাগ্য নিয়ে কেউ আসলে জন্মগ্রহণ করে না, মানুষকে দরিদ্র করে রাখা হয়। তিনি আরও বিশ্বাস করেন, প্রতিটি মানুষের মধ্যেই রয়েছে সীমাহীন সৃজনশীলতা, অপার সম্ভাবান। অপেক্ষা কেবল তাকে আবিষ্কার করার, বিকাশের পথ করে দেবার। আর এই প্রতীতীই তাঁর দারিদ্যবিরোধী সংগ্রামের পেছনে মূল প্রেরণা হিসেবে কাজ করেছে। তাঁক আজকের সাফল্য এনে দিয়েছে। ড. ইউনূসের শৈশব, কৈশোর ও ছাত্রজীবনের কথা; শিক্ষক হিসেবে তাঁর অভিজ্ঞতা, দেশে-বিদেশে তাঁর বন্ধু ও শুভানুধ্যায়ীদের কথা, প্রথম কাজ শুরুর অভিজ্ঞতা, দীর্ঘ অভিযাত্রা উপলব্ধির নানা সঞ্চয় সর্বপ্রথম এই বইয়েই সবিস্তারে বর্ণিত হল। মূল ফরাসী গ্রন্থ Vers un monde sans pauvree এর এই বাংলা অনুবাদটি আশা করি জাতির একজন শ্রেষ্ঠ সন্তানের সাধনা ও সাফল্যের ‘রহস্য’ সম্পর্কে তাঁর দেশবাসীর অনেক জাগ্রত কৌথূহলের নিবৃত্তি ঘটাবে
অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস (জন্ম: ২৮ জুন, ১৯৪০) বাংলাদেশী নোবেল পুরস্কার বিজয়ী ব্যাংকার ও অর্থনীতিবিদ। তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের একজন শিক্ষক। তিনি ক্ষুদ্রঋণ ধারণার প্রবর্তক। অধ্যাপক ইউনূস গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা। মুহাম্মদ ইউনূস এবং তার প্রতিষ্ঠিত গ্রামীণ ব্যাংক যৌথভাবে ২০০৬ সালে নোবেল শান্তি পুরস্কার লাভ করেন। তিনি প্রথম বাংলাদেশী হিসেবে এই পুরস্কার লাভ করেন। ইউনূস বিশ্ব খাদ্য পুরস্কার সহ আরও জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পুরস্কার লাভ করেছেন।