"অকুপাই দি স্ট্রিট (পুরস্কারপ্রাপ্ত লেখকদের বই)" বইটির ফ্ল্যাপ-এর লেখাঃ অরুন্ধতী রায়ের এই বিশ্লেষণগুলাে বিদ্যমান পুঁজিবাদী-গণতান্ত্রিক-কর্পোরেট শাসনতন্ত্রকে বুঝতে সহায়তা করবে; এর বিপরীতে খােদ। সাম্রাজ্যের কেন্দ্রে নিপীড়িত মানুষের অকুপাই-আন্দোলনকেও নানা দিক থেকে বুঝতে সহায়তা করবে। বিশ্বের আধিপত্যশীল পুঁজিবাদী মার্কিনী শাসনব্যবস্থা রাষ্ট্র কর্পোরেশনের সহায়তায় পৃথিবী জুড়ে কর্তৃত্ব-শাসন-নিপীড়ন চালাচ্ছে তা এগুলোর মধ্য দিয়ে স্পষ্ট হবে। যেকোনাে দেশের নিপীড়িত গণমানুষের ন্যায্য প্রতিবাদী-আন্দোলনকে বুঝতে এই রচনাগুলাে সাহায্য করতে পারে। এ দেশের তরুণ প্রজন্ম বিদ্যমান রাজনৈতিক-ক্ষমতাতন্ত্রের বাইরে দাঁড়িয়ে গণমানুষের ঐতিহাসিক দাবিকে শাহবাগগণআন্দোলনের মধ্য দিয়ে গণদাবিতে পরিণত করেছেন। ২০১১ সালে, মার্কিন-সাম্রাজ্যের কেন্দ্রে সংঘটিত হওয়া অকুপাই-আন্দোলন লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যের দিক থেকে আলাদা হলেও ধরনের দিক থেকে বর্তমান সময়ের এদেশের তরুণ প্রজন্মের শাহবাগের আন্দোলনের মতােই। এই আন্দোলনটিও অকুপাই-আন্দোলনের মতােই স্থান অধিগ্রহণ করার মধ্য দিয়ে সংঘটিত হয়ে চলেছে। ভারতীয় লেখক, বুকার পুরস্কার বিজয়ী দ্য গড অব স্মল থিংস-এর প্রণেতা ও বৈশ্বিক ন্যায়বিচার আন্দোলনের কর্মী অরুন্ধতী রায়। অকুপাই আন্দোলন নিয়ে আলােচনা করেছেন এই বইয়ে।
বুকারজয়ী ঔপন্যাসিক, রাজনৈতিক লেখক, মানবাধিকারকর্মী ও মাঠপর্যায়ের অ্যাকটিভিস্ট অরুন্ধতী রায়ের আলাপচারিতার সংকলন দানবের রূপরেখা। আলাপচারিতার সময়টা খুবই গুরুত্বপূর্ণ-২০০১-২০০৮। এর মধ্যে নির্ণীত হয়েছে বিশ্বব্যবস্থার নতুন রূপ, রাষ্ট্র থেকে শুরু করে ব্যক্তিমানুষ প্রত্যেকেই প্রভাবিত হয়েছে নতুন ব্যবস্থায়। ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের টুইন টাওয়ারে হামলার পরিপ্রেক্ষিতে ‘সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ’ ঘোষণা, আফগানিস্তান দখল, ইরাক যুদ্ধের সূচনার পাশাপাশি করপোরেট বিশ্বায়নের বিস্তার ঘটেছে। পৃথিবীর সবচেয়ে বড় গণতান্ত্রিক দেশ বলে খ্যাত ভারতে হিন্দুত্ববাদের উত্থান, কৃষি, খনিজ ও প্রাকৃতিক সম্পদের ওপর মানুষের অধিকার হারানো, অহিংস আন্দোলনের কার্যকারিতা হারিয়ে সশস্ত্র প্রতিরোধের বিস্তারও এ সময়ের ঘটনা। এই প্রসঙ্গগুলো নিয়েই কথা বলেছেন অরুন্ধতী রায়। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে বর্ণবাদ ও ভারতে হিন্দু ফ্যাসিজমের পুনরুত্থান, পৃথিবীর অপরাপর দেশজুড়ে দুঃশাসন ও কর্র্তৃত্বপরায়ণতা, পরিবেশ বিপর্যয়, সাধারণ মানুষের অধিকার হ্রাস, নারীর ওপর সহিংসতা বৃদ্ধি-বর্তমান বিশ্বের এই প্রবণতাগুলোও উঠে এসেছে এই আলাপচারিতায়। তাঁর সাহস, বক্তব্যের তীক্ষ্ণতা ও তীব্রতা আপনাকে ক্ষুব্ধ, উদ্বুদ্ধ আর আগ্রহী করে তুলবে।