১৯৫২ সালেই চে গুয়েভারা এই গ্রন্থটি লিখেছিলেন। তেইশ-চব্বিশ বছর বয়সে লেখা হলেও এই মোটর সাইকেল ডায়েরীটি তাকে বোঝার জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। তাঁর বিপ্লবী হওয়ার প্রস্তুতি পর্বটাকে পাওয়া যায় এই বইতে।। এই ভ্রমনকে শুধুমাত্র ল্যাটিন আমেরিকা ভ্রমন বলা যাবে না। এ সময় বিভিন্ন দেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও জনজীবনের অবস্থা প্রত্যক্ষ করেছিলেন তিনি। লোকজনের সাথে মিশে তাদের অতীত বর্তমান বোঝার চেষ্টা করেছিলেন। এ সময় প্রচুর পড়াশুনাও করেছিলেন তিনি।
চে বইটি আবার লেখেন কিন্তু দীর্ঘদিন এটি লোকচক্ষুর আড়ালে কিউবার রাজধানী হাভানায় চে’র ব্যক্তিগত আর্কাইভে থেকে যায়। সম্ভবত চে’র আবেগের বহিঃপ্রকাশ এবং রহস্যময় বর্ণনার কারণে কিউবান কর্তৃপক্ষ এটি প্রকাশ করেনি। বইটি প্রথম প্রকাশিত হয় ইতালীর মিলান থেকে ১৯৯৩ সালে, চে’র মৃত্যুর প্রায় ২৬ বছর পরে। ১৯৯৫ সালে প্রকাশিত হয় এর ইংরেজী সংস্করণ। অনুবাদটি প্রকাশিত হয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে, অনুবাদ করেন এ্যান রাইট এবং সম্পাদনা করেন চে’র স্ত্রী এ্যালিদা মার্চ ডি লা তোরে।
চে’কে জানতে এই বইটি এ কারনেই গুরুত্বপূর্ণ এই বইটি নিছক কোন ভ্রমন কাহিনী নয়। এই বইটিতে একজন অ্যাডভাঞ্চারার আর্নেস্তোর একজন বিপ্লবী 'চে' তে রুপান্তর হওয়ার ব্যাপারটি বোঝা যায়।
তারা যাত্রা শুরু করেন আর্জেন্টিনা থেকে। পর্যায়ক্রমে তারা চিলি, পেরু এরপর কলম্বিয়া হয়ে সবশেষ ভেনিজুয়েলায় এসে তাদের এই মোটর সাইকেল যাত্রা শেষ হয়। যাত্রা শুরু করেন ১৯৫২ সালের ৪ জানুয়ারী এবং শেষ হয় ২৬ জুলাই। এসময় অনেক ঘটনা ঘটে যা অত্যন্ত সুন্দরভাবে বইটিতে চে উল্লেখ করেছেন।তাঁর ভ্রমন সঙ্গী ছিল আলবার্তো গ্রানাদো – এক প্রগতিশীল ডাক্তার কুষ্ঠরোগ বিশেষজ্ঞ। বয়সে ব্যবধান থাকলেও বন্ধু ছিলেন দু’জনে।
আবীর হাসান : একাধারে সাহিত্যিক, সাংবাদিক, বিজ্ঞান লেখক, অনুবাদক ও কবি। জন্ম ১৫ জুন ১৯৫৯। লেখাপড়া ঢাকায় এবং ইতালিতে। চারুকলা নিয়ে পড়েছেন কিন্তু আঁকেন না। কৈশােরে মুক্তিযুদ্ধের সময় বিদেশী সাংবাদিকদের গাইড হিসাবে কাজ করতে গিয়ে সাংবাদিকতায় হাতে খড়ি। কবিতা ও সৃজনশীলতার প্রতি ঝোক ছােটবেলা থেকেই। পরিবারটাই ছিল সৃজনশীল। বাবা শিশু-সাহিত্যিক হাসান জান, পিতৃব্য পটুয়া কামরুল হাসান ও অধ্যাপক বদরুল হাসান। তাঁদের সান্নিধ্যে ও প্রযত্নে কেটেছে ছােটবেলা। প্রথম লেখা প্রকাশিত হয়। ১৯৬৫ সালে, রােকনুজ্জামান খান দাদাভাই সম্পাদিত কচি ও কাঁচায়। এখন দৈনিক জনকণ্ঠের সহকারী সম্পাদক। কলাম লেখেন বিজ্ঞান এবং সমাজরাজনীতি নিয়ে। বিজ্ঞান-কল্পকাহিনী আর গল্প-কবিতাও লেখেন। প্রকাশিত বই: এক পকেট বিস্ফোরক (কাব্যগ্রন্থ, ১৯৮৬) বােধিবৃক্ষে নিবোধ কাক (কাব্যগ্রন্থ, ১৯৮৮) সন্ত্রাসের সমাজতত্ত্ব (প্রবন্ধ, ১৯৯১), রাজবধূর প্রেম (১৯৯৬), ইরাকের সাদ্দাম যুগ (১৯৯৯), আর্নেস্তো চে গুয়েভারার মােটর সাইকেল ডায়েরী (অনুবাদ, ১৯৯৯), জয়বাংলার ছেলে (কিশাের উপন্যাস, ১৯৯৯), নবযুগের বিজ্ঞান (২০০০)। প্রযুক্তি মনস্ক সাংবাদিকতায় গুরুত্বপূর্ন অবদান রাখায় পেয়েছেন ১৯৯৯ সালের আইডিইবি স্বর্নপদক। চারদিকে এখন কম্পিউটারের ছড়াছড়ি। হরেক রকম কাজ করছে কম্পিউটার। লেখা, আঁকা, খেলা, চিঠি দেয়া-নেয়া সবই করা যাচ্ছে কম্পিউটার দিয়ে। কম্পিউটারকে এজন্য অনেকে মনে করছে ম্যাজিক বক্স'। আসলে কিন্তু তা নয়। কম্পিউটার হচ্ছে হিসাব করার যন্ত্র, হিসাব করতে করতেই সব কাজ করে যন্ত্রটা। কেমন করে? সে সব কথাই বলা হয়েছে এ বইতে। আর এখন তাে সবাই বলছে। কম্পিউটার ও ইন্টারনেট ছাড়া ভবিষ্যত চলবেনা, তাই শিখতে হবে কম্পিউটার চালানাে আর ইন্টারনেটে কাজ করার কৌশল। সঙ্গে সঙ্গে এগুলাে কি, কেমন করে কাজ করে তা জেনে নেয়াও জরুরী। এই জানা-শােনার কথা নিয়েই এ বই। ছােট-বড় সবার জন্য।